You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.02.06 | ৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ঃ কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে পৃথিবীর সবচে বৃহৎ সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ - সংগ্রামের নোটবুক

৬ ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ঃ কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে পৃথিবীর সবচে বৃহৎ সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ

সম্পূর্ণ ভাষণের অডিও ও টেক্সট শুনতে ও পড়তে এখানে ক্লিক করুন। 

রাজভবনে মধ্যাহ্ন ভোজ ও ইন্দিরা গান্ধীর সাথে ২য় দফা বৈঠক শেষে শেখ মুজিব হেলিকপ্টার যোগে কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে গমন করেন। ব্রিগেড ময়দানের জনসভাকে মানব ইতিহাসের সবচে বড় জনসমাবেশ বলে আখ্যায়িত করা হয়। বাংলাদেশের চীনা বাম পত্রিকা সোনার বাংলা মতে সে সমাবেশে ত্রিশ লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ হয়েছিল। ব্রিগেড ময়দান ছাড়াও কলকাতার আরও ৭টি ময়দানে জনতা মাইকে ভাষণ শুনেছে। এ ছাড়া হাওরায় তিনটি সমাবেশে জনতা মাইকে ভাষণ শুনেছে। শেখ মুজিবুর রহমান তার ভাষণে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি ঘোষণা করেন। তার পর তিনি ঘোষণা করেন ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী চিরস্থায়ী হবে। কোন ষড়যন্ত্র বা কোন শক্তি এ বন্ধনে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারবে না। তিনি বলেন উপমহাদেশে আর সাম্রাজ্যবাদীদের খেলতে দেয়া হবে না।

তিনি বলেন তার দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ত্যাগ স্বীকার করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের জনগন, সরকার ও ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশের এক কোটি শরণার্থীদের আশ্রয় খাদ্য দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ভাষণের কয়েক পর্যায়ে শেখ রবীন্দ্র নাথের কবিতা আবৃত্তি করে ব্যাখ্যা দেন। তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের ভুমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং মার্কিন ভুমিকার তীব্র নিন্দা করেন। পাকিস্তান সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন বাংলাদেশ স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ। পাকিস্তানী নেতারা যদি বাংলাদেশ তাদের অংশ এখনও মনে করে তবে তাদের পাগলা গারদে পাঠানো ছাড়া আর উপায় নেই। মুল মঞ্চের কাছেই আরেকটি মঞ্চ করা হয় সেখানে শতাধিক সংগীত শিল্পী অবস্থান নেয়। মেয়ে শিল্পীরা লাল ব্লাউজ এবং সবুজ শাড়ী পড়েন। পুরুষ শিল্পীরা ভারতের পতাকার আদলে পোশাক পরেন। ভাষণের ফাকে ফাকে এবং অনুষ্ঠান শেষে সঙ্গীতানুষ্ঠান চলে। শুরুতে এরা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং শেষে রন সঙ্গীত পরিবেশন করেন।