বঙ্গবন্ধুর ভাষণসমগ্র | এশিয় আঞ্চলিক হস্ত ও কুটিরশিল্প প্রদর্শনী উদ্বোধন প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু | ৩১ ডিসেম্বর ১৯৫৬ ঢাকা
পল্লী অর্থনীতির সহিত কুটির শিল্পের ঘনিস্ট সম্পর্ক রহিয়াছে।
৩১ ডিসেম্বর ১৯৫৬
ঢাকা
(এশিয় আঞ্চলিক হস্ত ও কুটিরশিল্প প্রদর্শনী উদ্বোধন প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু)।
কুটির শিল্প জনসাধারণের শিল্প বলিয়াই উহার প্রতি আমাদের দৃষ্টি গভীরভাবে আকৃষ্ট হইয়াছে। স্মৃতির অতীতকাল হইতে এই সমস্ত শিল্প একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করিয়াছিল। যন্ত্রযুগ ও আধুনিক ব্যাপক উৎপাদনকালের সংমিশ্রণে কুটির শিল্পের দুর্দিন দেখা যাইতেছে। দেশের প্রতিকার উপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণের দ্বারা আমরা কুটির শিল্পের পুনরুজ্জীবনে বদ্ধপরিকর। স্থানীয় হস্ত ও কুটির শিল্পের উন্নতি না হইলে আমাদের দেশের কৃষিভিত্তিক মূল অর্থনীতি ভারসাম্যহীন হইয়া পড়িবে।
দেশের কাঁচামালের ভিত্তিতেই মূখ্যত এই সমস্ত শিল্প প্রতিস্থা হওয়া উচিৎ। কুটিরশিল্প স্বাভাবিকভাবেই বিকেন্দ্রীয়। সুতরাং উহার একটি গণতান্ত্রিক রূপ রহিয়াছে। আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষা ও উদ্যেশ্যের সহিত এইরূপের মিল ও সহজ সম্পর্কে রহিয়াছে। এই সমস্ত শিল্পের পুনরুজ্জীবন ও স্থায়িত্ব বিধানের জন্য প্রাদেশিক সরকার চেষ্টায় কোন ত্রুটি করিবেন না।
কেহ কেহ কুটির শিল্পকে আদিকালের শিল্প বলিয়া যুক্তি প্রদর্শন করিয়া থাকেন। এবং উহা আমাদের অর্থনৈতিক উন্মেষের পথ রুদ্ধ ও শিল্পোন্নয়ন ব্যহত করিবে বলিয়া মনে করেন। কিন্তু প্রকৃত বিষয় অন্যরূপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড প্রভৃতি গণতান্ত্রিক দেশ সমূহেও পল্লী এলাকায় হস্ত ও কুটির শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করিয়াছে।
বৈজ্ঞ্যানিক পদ্ধতিতে কুটিরশিল্পের বিকাশ সাধন করিতে হইবে। পূর্ব পাকিস্তানের নারীদের হস্তশিল্পে দক্ষতা রহিতাছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে জিনিসের প্যাটার্ণ, ফ্যাশন ডিজাইন প্রভৃতিতে মহিলাদের ভূমিকা রহিয়াছে।
Reference:
দৈনিক আজাদ, ১ জানুয়ারি ১৯৫৭