You dont have javascript enabled! Please enable it! ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস (ইপিসিএস) অফিসারগণ এবং তাদের চাকুরি-বৃত্তান্ত - সংগ্রামের নোটবুক

ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস (ইপিসিএস) অফিসারগণ এবং তাদের চাকুরি-বৃত্তান্ত

Auditor General S. M. Raza, Ishaat Habibullah Chairman Pakistan Tobacco Company and Commissioner Darbar Ali Shah

ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস (East Pakistan Civil Service) বা সংক্ষেপে ইপিসিএস (EPCS)-এরও আদত উৎপত্তি ও বিকাশ ইংরেজযুগে, তবে উনিশশ’ সাতচল্লিশ-উত্তরপর্বে স্বাভাবিকভাবে এর নামসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ের কিছু পরিবর্তন-সংস্কার হয়েছিল। আগেই জানিয়েছি, ইংরেজ শাসনের প্রাথমিক ভিত গড়ে উঠবার পর থেকেই ব্রিটিশ-ভারতীয় সিভিল সার্ভিস মােটামুটি ‘কভেন্যান্টেড সিভিল সার্ভিস’ (Covenanted Civil Service) ও ‘আন-কভেন্যান্টেড সিভিল সার্ভিস’ (Uncovenanted Civil Service)- এই দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। এর মধ্যে প্রথমােক্ত সার্ভিসের সদস্যগণ কোম্পানির ইংল্যান্ডস্থ পরিচালকমণ্ডলী (Board of Directors)-র সঙ্গে লিখিত ‘কভেন্যান্ট’ (Covenant), বন্ড (Bond) বা চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে কোম্পানির এদেশস্থ চাকুরিতে যােগদান করত।2 অন্যদিকে আন-কভেন্যান্টেড সিভিল সার্ভিসেরও অধিকাংশ সদস্য ছিল বহির্দেশীয় অর্থাৎ ইংল্যান্ড ও ইউরােপের, এবং কিছু এদেশীয় । এদেশীয়রা প্রশাসনের বিভিন্ন নিম্নপদে যেমন রাজস্ব, বিচার ও পুলিশ বিভাগে চাকুরি করত । এর মধ্যে আবার রাজস্ব ও পুলিশ বিভাগে ছিল হিন্দুদের এবং বিচার বিভাগে মুসলমানদের কম- বেশি প্রাধান্য।।

দুই সার্ভিসের মধ্যে মূল পার্থক্য ছিল, শুরু থেকেই কভেন্যান্টেড সার্ভিসের প্রায় সব বিষয়েই ছিল নিরঙ্কুশ একাধিপত্য ও সর্বাধিনায়কতু। এর চেয়েও বড়াে কথা, সার্ভিসটিতে ছিল ইংরেজ ও ইউরােপীয়দের একচেটিয়া অনুপ্রবেশের সুযােগ। এর মূল কারণ ছিল দুটো, এক. সাম্রাজ্যিক অখণ্ডত্ব সুরক্ষার অজুহাতে এবং ইউরােপীয় আভিজাত্য ও কৌলীন্য বজায় রাখতে প্রথমে লিখিত

পৃষ্ঠা: ৪৭

নিষেধাজ্ঞামূলে এবং পরে The Charter Act of 1853 জারির পরে লিখিত বাধা দৃশ্যত অপসারিত হলেও অপ্রচ্ছন্ন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কর্তৃপক্ষ এতে ভারতীয়দের অনুপ্রবেশ বন্ধ রেখেছিল। দুই. কভেন্যান্টেড সার্ভিসে অংশগ্রহণের জন্য যে নির্দিষ্ট পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল, সেটি অনুষ্ঠিত হতাে ইংল্যান্ডে। ফলে এতে মূলত আর্থিক ও অন্যান্য কারণে (এর মধ্যে উচ্চবর্ণের হিন্দুদের ক্ষেত্রে সমুদ্র পেরিয়ে ম্লেচ্ছভূমিতে পদার্পণে সংস্কারগত বাধাও ছিল) ভারতীয়দের পক্ষে অংশগ্রহণ ছিল প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার। আরেকটি কারণও ছিল, এর সিলেবাস (Syllabus) এমনভাবে তৈরী হয়েছিল, যা ভাষাগত অপরিপক্কতায় ও সুযােগ-সুবিধার অভাবে ভারতীয় তরুণদের পক্ষে আয়ত্ত করা ছিল কঠিন ও প্রায়-অসাধ্য। তাই দেখা যায়, ১৮৫৮ থেকে ১৮৬৯ সালপর্বে মােট ১৬ জন এদেশীয় ইংল্যান্ডে গিয়ে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিয়েছিল, এর মধ্যে মাত্র একজন তাতে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়ােগ লাভ করেছিল।  অথচ জানা যায়, ১৮৭০ সালনাগাদ ব্রিটিশ-ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের মােট সদস্য ছিল ৯১৬ জন।

ইতােমধ্যে অবশ্য শিক্ষিত ভারতীয় নাগরিক সমাজ, মিডিয়া ও বিশেষত সরকারি চাকুরিপ্রার্থীদের ক্রমবর্ধমান দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভাইসরয় ও গভর্নর- জেনারেল লর্ড লিটনের (Earl of Lytton) সময়ে ১৮৭৮-৯ সালের দিকে বিদ্যমান সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থাপনায় কিছু সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। এর মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলাে, কভেন্যান্টেড পদে ১৫% এবং আন-কভেন্যান্টেড পদগুলােতে ২০% হারে ভারতীয়দের অন্তর্ভুক্তির সুযােগ রেখে লর্ড লিটন স্বীয় কাউন্সিলে একটি প্রস্তাব পাশ করিয়েছিলেন, যাতে ভারতীয়রা স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে কিন্তু ভারত সরকারের তত্ত্বাবধানে সফল শিক্ষানবিশি শেষে চূড়ান্ত অনুমােদন লাভ করবে। অধিকন্তু এটি কভেন্যান্টেড সিভিল সার্ভিসের একটি শাখা (Branch) স্বরূপ গণ্য হবে, এবং এর সদস্যবর্গ তাদের মতােই মর্যাদাবান হবে, তবে বেতন পাবে কম (মােটামুটি দুই-তৃতীয়াংশ)।

তবে এ উদ্যোগ সফল হয়নি তৎকালীন ভারত-সচিব লর্ড ক্রেনব্রুক (Viscount Cranbrook) সেটি অনুমােদন না-করায়। পরিবর্তে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট প্রণীত ‘ভারত সরকার আইন, ১৮৭০’ (The Government of India Act, 1870)-এর কথা মাথায় নিয়ে এবং বাস্তবতা বিবেচনায় ১৮৭৯ সালে The Statutory Civil Service নামে একটি নতুন সার্ভিস গঠন করা হয়েছিল। যাই হােক, নানা টালবাহানার পর এজন্য যে বিধিমালা (Rules)/ প্রবিধানমালা (Regulations) রচিত হয়, তার মোজা কথা ছিল: “The principal features of the scheme were nomination by the Local Governments, subject to the approval of the Government of India and the Secretary of State ; employment of the selected officer within his own Province ; and the

পৃষ্ঠা: ৪৮

 ultimate transfer of one-sixth of the total number of India Civil Service appointments to the Statutory Civilians.”

কিন্ত ভারতীয়দের কাম্য চাহিদা (তাদের মূল দাবি ছিল ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয়  সিভিল সার্ভিস পরীক্ষাটি যুগপৎ ইংল্যান্ড ও ভারতে অনুষ্ঠানের) মিটাতে ব্যর্থ হওয়ায় স্ট্যাটিউটরি সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা বেশী দিন টিকে থাকতে পারেনি কেননা এর মাধ্যমে নিম্নপদে তখন পর্যন্ত স্থানীয়দের যে মননোয়ন- নিয়োগ- পদায়ন ঘটেছিল (এরা ছিল উচ্চবংশীয় ও সম্রান্ত ঘরানার- ‘of good family and status’), সে ধরনের বেশ কিছু পদে তারা আগে থেকেই কর্ম করে আসছিল। যেমন, ১৮৩৩ সালের ৯-সংখ্যক প্রবিধান বলে সৃষ্ট ‘আন-কভেন্যান্টেড ডেপুটি কালেক্টর১০ ,  ১৮৪৩ সালের ১৫-সংখ্যক প্রবিধানবলে ‘ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট’১১ ১৮৭২ সালে সৃষ্ট ‘সাব-ডেপুটি কালেক্টর’১২ ইত্যাদি।১৩

বস্তুতপক্ষে বহু অর্থ ব্যয় করে ইংল্যান্ডে গিয়ে এবং সেখানে দীর্ঘকাল অবস্থান করে এদেশীয়গণ যেহেতু সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারত না, সেহেতু ১৮৭০ সালের ভারত সরকার আইনে’ সিভিল সার্ভিসে তাদের অনুপ্রবেশের আইনি সুযােগ থাকলেও তা শুধু কাগুজে স্বীকৃতি হয়েই ছিল। বলা যায়, এটা ছিল কর্তৃপক্ষীয় সুচতুর কারসাজি ও চোখ-ধাঁধানাে ‘আইওয়াশ’ মাত্র, কেননা এজন্য অনুকূল পরিবেশ-পরিস্থিতি সৃষ্টিতে ইংল্যান্ডীয় ও ভারতীয় কোনও কর্তৃপক্ষেরই কোনও আগ্রহ বা মাথাব্যথা ছিল না।১৪

কাজেই স্ট্যাটিউটরি সিভিল সার্ভিসের আওতায় নিম্নপদেই ভারতীয়দের চাকুরি হতাে। এর ফলে তাদের অবস্থা দাঁড়িয়েছিল, O’Malley-র ভাষায়: “The new Service had neither the status nor the prestige of the Covenanted Civil Service: it was regarded as a secondary and lower service.”১৫  শেষ পর্যন্ত  The Statutory Civil Service বাতিল করা হয়েছিল (১৮৮৬)। আর ইতােমধ্যে যারা নিযুক্ত হয়েছিল১৬ তারা পরবর্তীকালে সংগঠিত প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিসে আত্মীকৃত হয়েছিল।

১৮৮৬ সালের ৪ঠা নভেম্বর সরকার স্থানীয় বা ভারতীয়দের ক্রমবর্ধমান দাবি তথা উচ্চপদে তাদের আরও বেশি চাকুরির বিষয়টির প্রতি যাতে পূর্ণ ন্যায়বিচার করা যায়১৮, সেটি খতিয়ে দেখে যথাযথ সুপারিশ প্রণয়নে পাঞ্জাব প্রদেশের তৎকালীন লেফটেন্যান্ট-গভর্নর Hon. Sir Charles Aitchison, K.C.S.I, C.I.E. কে প্রধান (President) এবং বঙ্গীয় সিভিল সার্ভিসের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আন্ডার- সেক্রেটারি F. C. Daukes-কে সচিব করে ১৫-সদস্যবিশিষ্ট (এর ৬ জন ছিল এদেশি) একটি কমিশন গঠন করে। ব্রিটিশ-ভারতীয় প্রশাসনিক ইতিহাসে এটি (প্রথম) Public Service Commission, 1886-87 বা সংক্ষেপে Aitchison Commission নামে পরিচিত। কমিশন ১৩ মাসেরও কম সময়ে এর লিখিত

পৃষ্ঠা: ৪৯

প্রতিবেদন ( Report) পেশ করে (২৩শে ডিসেম্বর ১৮৮৭)। তাদের প্রতিবেদনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল কভেন্যান্টেড সিভিল সার্ভিসের স্থলে নতুন নাম হতে পারে ‘ইম্পিরিয়াল সিভিল সার্ভিস’ (Imperial Civil Service), নিয়ােগসংক্রান্ত ইংল্যান্ডে পরীক্ষানুষ্ঠান প্রক্রিয়া বহাল রাখা এবং আন-কভেন্যান্টেড সিভিল সার্ভিস বাতিলক্রমে তদস্থলে প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিস (Provincial Civil Service) ব্যবস্থা  প্রবর্তন করে স্থানীয় সরকার (Local Government)-এর মাধ্যমে অধস্তন পর্যায়ে বা নিম্নস্তরে (Subordinate) বিশেষত রাজস্ব ও বিচার বিভাগের নিম্ন পদগুলােতে ভারতীয় বা স্থানীয়দের নিয়ােগের ব্যবস্থা করা।২০

সরকার ‘ইম্পিরিয়্যাল সিভিল সার্ভিস’ নামকরণের সুপারিশ গ্রহণ করেনি। এর পরিবর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথমবারের ন্যায় চালু করে (পরবর্তীকালে অতিপরিচিত নাম) ভারতীয় সিভিল সার্ভিস (Indian Civil Service) অভিধা”২১ এবং এর পরীক্ষা আগের মতােই ইংল্যান্ডে যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে সেই ব্যবস্থা।

স্বাভাবিকভাবে নতুন নামাঙ্কিত ভারতীয় সিভিল সার্ভিস ছিল ব্যাপকার্থক সার্ভিস। উপমহাদেশীয় প্রেক্ষাপটে আজকের যুগের প্রশাসনিক ক্যাডার (Administrative Cadre) ভুক্ত কর্মকর্তাদের পূর্বসূরী ICS এবং পরবর্তীকালে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে যথাক্রমে IAS, CSP ও BCS (Administration) এ সার্ভিসের অন্যতম কাণ্ডারী-পদধারী হলেও বিভিন্ন সময়ে এদের প্রায়-সমান্তরালে আরও বিভিন্ন পদসােপান তৈরি হয়েছিল, যেমন- ‘ভারতীয় পুলিশ সার্ভিস’, ‘ভারতীয় ফরেস্ট সার্ভিস’, ‘ভারতীয় এডুকেশনাল সার্ভিস’ ইত্যাদি।২২ প্রথমােক্তগণকে আবার সাধারণ (Generalist)২৩ এবং অন্যদেরকে বিশেষজ্ঞ (Specialist/ Technical)- এই দুই প্রধান বর্গে বা গুচ্ছে বিন্যস্ত করা হয়েছিল, যে সম্বন্ধে কিছু আলােচনা আগের অধ্যায়েই করা হয়েছে।

অন্যদিকে ‘পাবলিক সার্ভিস কমিশন’-এর মূল বক্তব্যের দিকে নজর রেখে প্রচলিত আন-কভেন্যান্টেড সিভিল সার্ভিস বাতিল করে তদস্থলে স্থানীয় সরকার (Local Government) কর্তৃক নিয়ােগ কিন্তু ভারত সরকার (কার্যত ভারত-সচিব) কর্তৃক চূড়ান্ত মনােনয়ন লাভের শর্তে প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিস’ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল, এবং সেইসঙ্গে কেন্দ্রে ও প্রদেশে আগের মতােই ছিল ‘অধস্তন সিভিল সার্ভিস’ (Subordinate Civil Service)।

সুতরাং বলা চলে, ভারতীয় সিভিল সার্ভিস এবং প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা চালুর ফলে এপর্যন্ত প্রচলিত ‘কভেন্যান্টেড’ ও ‘আন- কভেন্যান্টেড’ সিভিল সার্ভিস ও প্রত্যয় আনুষ্ঠানিকভাবে অচল হয়েছিল। অবশ্য ‘ইম্পিরিয়াল’ নাম- প্রত্যয় আগাগােড়াই থেকেই গিয়েছিল বলে প্রতীয়মান হয়। প্রসঙ্গত ১৯১২ সালে নিযুক্ত রাজকীয় পাবলিক সার্ভিস কমিশন রিপাের্টেও ‘প্রাদেশিক’ সিভিল সার্ভিসের বিপরীতে এটির ব্যবহার লক্ষগােচর হয়।২৬

পৃষ্ঠা: ৫০

 যাই হােক, এভাবেই সর্বভারতীয় সিভিল বা পাবলিক সার্ভিসের ব্রিটিশ – ভারতীয় প্রদেশগুলাে তাদের স্ব স্ব নামীয় (যেমন, ‘বােম্বে সিভিল সার্ভিস’, ‘মাদ্রাজ সিভিল সার্ভিস’ প্রভৃতি২৭) সিভিল সার্ভিস প্রবর্তন-প্রচলনের আইনগত ভিত্তি ও সুযােগ পেয়েছিল। স্বভাবতই অবিভক্ত বাংলা বা বঙ্গপ্রদেশ সরকারের অধীনে সৃষ্ট সার্ভিসটির নাম হয় ‘বঙ্গীয় সিভিল সার্ভিস’ (The Bengal Civil Service)।

একথা সত্য যে, কেন্দ্রীয় সরকার নিযুক্ত ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের সদস্যদের তুলনায় প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিসের সদস্যদের বেতন ও মর্যাদা ( Pay and status) অনেক কম ছিল, তথাপি সার্বিক বিবেচনায় এটা অস্বীকার করবার উপায় নেই যে, প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিসে নিয়ােগপ্রথা চালু হওয়ায় এদেশীয় শিক্ষিত তরুণদের জন্য সরকারি চাকুরি লাভের ক্ষেত্রে তা নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছিল। Sir Malcolm C. C. Seton-এর ভাষায়, ..the “Provincial Services” were created, and a wide avenue to public employment opened to the graduates of Indian Universities.”২৮

পরবর্তীকালে ‘সিভিল’ ও ‘প্রাদেশিক- উভয় সার্ভিসেরই ধরনে-নিয়ােগে আরও কিছু সংস্কার তথা সংযােজন-বিয়ােজন হয়েছিল। তাসত্ত্বেও স্বীকার্য, বিটিশদের চলে যাওয়ার শেষদিন পর্যন্ত সর্বভারতীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের প্রাধান্য ও একাধিপত্য অক্ষুন্ন ছিল।

এপর্যায়ে Aitchison-এর পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রতিবেদনের গুরুত্ব ও সুদূরপ্রসারী ফল সম্বন্ধে Charles H. Kennedy-এর চমৎকার মন্তব্য উদ্ধৃত করে অন্য আলােচনায় যাব। তিনি যথার্থই উল্লেখ করেছেন (নাতিদীর্ঘ হলেও তুলে ধরছি): “Further, the formation of the Provincial Service ushered in a heretofore new basis for the formation of cadres, namely that of defining cadres in terms of spatial distinctions. The ICS was the predecessor of what came to be known as the All-India Services, later All-Pakistan Services, whose officers were recruited by the central government primarily for assignment in the provincial sphere, though these officers often undertook assignment at the central level. Typically, an officer of an All-India Service alternately held posts in the provincial and central sphere, or sequentially held posts in several provinces. Movement between such postings was frequent. Officers of the Provincial Civil Service, on the other hand, were generally limited to postings within the geographical boundaries of their original assignment. Finally, the Aitcheson Commission’s recommendation regarding the creation of imperial and provincial branches within departments between provincial and imperial services in general, formed the bases for the eventual development of the Central Services.”২৯

পৃষ্ঠা: ৫১

 মনে রাখতে হবে, সাতচল্লিশ-উত্তর পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিসসমূহের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশের সূচনা বঙ্গীয় সিভিল সার্ভিস’ থেকেই।

উনিশশ’ সাতচল্লিশে ইংরেজদের ভারতবর্ষ ত্যাগপর্যন্ত এদেশীয় সিভিল সার্ভিস মােটাদাগে ৩টি স্তরে বা শ্রেণীতে বিন্যস্ত ছিল। যথা- (১) সুপিরিয়র সার্ভিসেস (Superior Services), যার অন্তর্ভুক্ত ছিল বিভিন্ন সর্বভারতীয় ও কেন্দ্রীয় সার্ভিস”৩০ (Al-India and Central Services); (২) প্রাদেশিক সার্ভিস৩১ (Provincial Services), এবং (৩) অধস্তন সার্ভিস (Subordinate Services)।”৩২ চতুর্থ একটি সার্ভিসও ছিল, এর অন্তর্ভুক্তদেরকে সার্ভিস-হােল্ডার না বলে সরকারের বিশেষ প্রয়ােজনে নিযুক্ত বা পদভূষিত ‘কর্মাধ্যক্ষ’ বলাই সঙ্গত, এটি হলো – ‘officers holding special posts.’৩৩

পরিশেষে উল্লেখ্য, উত্তরাধিকারসূত্রে শুরুতে পাকিস্তান অবিভক্ত বঙ্গপ্রদেশের সিভিল সার্ভিসের যে সদস্যদের পেয়েছিল (তুলনায় অবশ্যই স্বাভাবিকভাবে এদের সংখ্যা ছিল বেশী৩৪), এ আমলেও (সমগ্র পাকিস্তানযুগেই) তারা ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের উত্তরসূরী সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান বা সিএসপি সদস্যদের চেয়ে নিম্নতর (Inferior ও Subordinate- দু-অর্থেই) ছিল, তা সে বেতনে-ভাতায়, মানে-মর্যাদায়, ক্ষমতায়-প্রভাবে, যেটাই হােক না কেন।

যদিও ইপিসিএসগণ প্রশাসনের শীর্ষবিন্দু তথা সচিবালয়ে (কোটায় নিযুক্তিক্রমে মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে পর্যন্ত), মাঠপ্রশাসনে ও অন্যত্র (প্রেষণে পদায়নমূলে) সিএসপিদের সমান্তরাল কাজই করত৩৫। স্মর্তব্য যে, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধকালেও দেখা যায়, এরা সেভাবেই অবরুদ্ধ স্বদেশ অর্থাৎ পূর্বপাকিস্তানে সিএসপিদের পাশাপাশি (স্বাভাবিকভাবে এদের সংখ্যাধিক্য ছিল) কাজ করেছেন; মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণও করেছেন দেশমাতৃকার টানে।

বস্তুত শীর্ষস্থানীয় ও গুরুত্বপূর্ণ পদগুলােতে এদের নিয়ােগ ছিল কোটার ও নানা শর্তের মারপ্যাচে সীমিত (আগের অধ্যায়ে এসংক্রান্ত আভাস দেওয়া হয়েছে), যে-কারণে সংশ্লিষ্টদের ক্ষোভেরও অন্ত ছিল না। অনেক ক্ষেত্রে দু-দলের শিক্ষাগত ও আনুষঙ্গিক যােগ্যতায়ও দৃশ্যমান তেমন পার্থক্য ছিল না।৩৬ তবে সে আলােচনা এখানে অপ্রাসঙ্গিক।

পরিশেষে পরবর্তী আলােচনার স্বার্থে ১৯৪৭-৭১ সালপর্বে ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস বা সংক্ষেপে ইপিসিএস৩৭ (মূলত প্রথম শ্রেণীর এক্সিকিউটিভ বা নির্বাহি এবং ক্ষেত্ৰত জুডিশ্যল বা বিচারবিভাগীয়) ক্যাডারভুক্ত সদস্যদের নাম- পরিচয় জানার জন্য পরিশিষ্ট ‘খ’ দেখা যেতে পারে।

পৃষ্ঠা: ৫২

 তথ্য নির্দেশ

১. ১৮৫৮ সালােত্তর-পর্বে ‘সেক্রেটারি অব স্টেট ইন কাউন্সিল’ (দেখুন, The India Ofice, Sir Malcolm C. C. Seton, p. 128) বা সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ইন্ডিয়ার সঙ্গে।

২. এজাতীয় ‘কভেন্যান্ট’ ও ‘বন্ড’-এর নমুনা সম্বন্ধে ধারণা পেতে অক্ষয়কুমার ঘোষাল (Akshoy Kumar Ghosal) প্রনীত  Civil Service in India under the East India  Company: A Study in Administrative Development গ্রন্থভুক্ত যথাক্রমে Appendix B’ ও ‘Appendix A’ দেখা যেতে পারে।

৩. বিভিন্ন সময়ে ব্রিটিশ-ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে অংশগ্রহণের বয়স-সীমা ছিল সর্বনিম্ন ১৭ (কোম্পানির যুগের শুরুতে ১৫) থেকে সর্বোচ্চ ২৪, তবে অধিকাংশ সময়ে মােটামুটি ১৯ থেকে ২৩ বছর।

৪. ইনি কলকাতার জোড়া সাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দ্বিতীয় সন্তান সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৪২-১৯২৩), ১৮৬৪ সালে ১ম গ্রেড জজ ও সেশন জজ পদে বােম্বাই প্রদেশে সংযুক্তি (attached) লাভ করেন। উল্লেখ্য, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অগ্রজ। তিনি ১৮৯৭ সালে অবসর নেন।

৫. তথ্য সংগৃহীত, Public Administratiort and Public Opinion in Bengal, 1854-1885, Anuradha Chanda, p. 32. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫৫৪-৫৫। পরবর্তী দেড় দশকে (১৮৭১-৮৭) এঅবস্থার কিছুটা পরিবর্তন ঘটেছিল। ০১/১০/১৮৮৭ পর্যন্ত সিভিল সার্ভিসে ভারতীয়দের অন্তর্ভুক্তির সংখ্যা ছিল ১২। (দেখুন, Report of the Public Service Corintission, 1886-87, p. 53), এঁরা সকলেই ইংল্যান্ডে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, প্রথমযুগের (১৮৬৩-৮৮) ভারতীয় বংশােদ্ভূত আইসিএসদের সম্বন্ধে জানতে দেখা যেতে পারে, Bimanbehari Majumdar-এর তথ্যবহুল প্রবন্ধ First Generation of Indian I.C.S.in, Political System in India, Vol. I [Approaches to Indian Politics and Constitution-Making], edited by Verinder Grover, pp. 301-14.

৬. দেখুন, The Indian Civil Service 1601-1930, p. 209.

৭. বিস্তারিত জানতে দেখা যায়, Lord Lytton’s Indian Administration 1876- 80 An Untold History, Lady Betty Balfour, Delhi, see Chapter XII (Indian Civil Service).

৮. দেখুন, The Imperial Gazetteer of India, The Indian Empire, Vol. IV: Administrative, p. 43.

৯. ১৯১২ সালে গঠিত ‘রাজকীয় পাবলিক সার্ভিস কমিশন’-এর অন্যতম সদস্য স্যার জাস্টিস আব্দুর রহিমের  Minute of Dissent in the Report of the Public Service Commission-এও এটা চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছিল।

পৃষ্ঠা: ৫৩

 “SIMULTANEOUS EXAMINATIONS/ This important question relating to the problem of giving Indian candidates an opportunity of competing on substantially equal terms with the English candidates for the Indian Civil Service… What is asked for is that the open competitive examination, which is now held solely in England, should be held simultaneously in England and in India on the same papers and conducted by the Civil Service Commissioners, the results being embodied in one common list.” (দেখুন, The Indian Review, February 1917 সংখ্যাভুক্ত Indians in the Public Services, pp. 116).

১০. দেখুন, Problems of British India, M. Joseph Chailley, trans, by W. S. Meyer, p. 531.

১১. দেখুন, Report of the Salaries Commission, Bengal, 1885-86, Calcutta, 1886, p. 13; Report on Administration of Bengal, 1911- 12, pp. 45-6.

১১. দেখুন, The Land Systems of British India, Vol. I., B. H. Baden- Powell, p. 673.

১৩. এবিষয়ে আরও জানতে দেখা যায়, The Government of India Being A Digest of the Statute Law Relating Thereto, Sir Courtenay Ilbert, 1898; The Bureaucracy in India : An Historical Analysis of Development up to 1947, B. B. Misra, 1980; The Administration of Justice in British India; Its Past History and Present State comprising an Account of the Laws Peculiar to India, William H. Morley, 1458; মৎপ্রণীত, ইংরেজ আমলে বাংলার প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্বিন্যাস, ১৭৬৫-১৯৪৭, পৃষ্ঠা ১৭০-৭৪।

১৪. “The Government of India operated the act (Act of 1870) with little enthusiasm.” (C773F, The British and Their Successors : A Study in the Development of the Government Services in the New States, Richard Symonds, p. 32).

১৫. pp. cit., p. 215.

১৬. ১৮৮০-৮৬ সালনাগাদ স্ট্যাটিউটরি সিভিল সার্ভিসে নিযুক্ত (বছরে ৬ জন গড়ে) মােট ৪৮ জনের (এর মধ্যে বাংলা থেকে ২ জন মুসলমানসহ মােট ১১ জন) মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যাতাত্ত্বিক পরিসংখ্যানটি এরকম: হিন্দু ২৭, মুসলমান ১৫, পার্সি ২ ও শিখ ২ জন। (দেখুন, Report of the Public Commission, 1886-87, C. 5327, para 45, p. 21; el ejero, Role of Higher Civil Servants in Pakistan, Ali Ahmed, p. 44; A Dictionary of Modern Indian History 1707–1947, Parshotam Mehra, p. 649). স্ট্যাটিউটরি সিভিল সার্ভিসের যুগে এবং তারও আগে থেকে ব্রিটিশ-ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে ১৮৬৭- ৮৭ সালপর্বে মাসিক ৭৫ রুপি বা তার উর্ধ্বের বেতনভােগী ইউরােপীয়,

পৃষ্ঠা: ৫৪

 ইউরেশিয়ান, হিন্দু ও মুসলমান চাকুরিজীবীর সংখ্যা ও শতকরা হার জানতে দেখা যেতে পারে, Government of India, Home Department (Establishment), A, Proceedings, June 1904, তথ্য সংগৃহীত , The Emergence of Indian Nationalism: Competition and Collaboration in the Later Nineteenth century, Anil Seal, see. Appendix 3.

১৭. দেখুন, A Dictionary of Modern Indian History 1707-1947, p. 650.

১৮. ‘…to devise a scheme which may reasonably be hoped to possess the necessary elements of finality, and to do full justice to the claims of Natives of India to higher and more extensive employment in the public service…’ (See, Introductory: “1. Appointment of the Commission: Its object’, Report of the Public Service Commission, 1886-87).

১৯. সদস্যরা হলেন : (1) Sir C.A. Turner, (2) C.H.T. Croshwaite, (3) Romesh Chunder Mitter. (4) J.W. Quinton, (5) F.B. Peacock, (5) Raja Udhai Pertab Singh. (6) H.J. Stokes, (7) T.H. Stewart, (8) Khan Bahadur Sayyid Ahmad, (9) W.B. Hudson, (10) Khan Bahadur Kazi Shahbudin, (11) Salem Ramaswami Mudaliyar, (12) W.H. Ryland, (13) Rao Bahadur Krishnaji Lukshman Nulkar, (14)।D.S. White 998 (15) F.C. Daukes. (See. Report of the Public Service Commission, 1886-87).

২০. দেখুন,  Report of the Public Service Commission, 1886-87, see Recommendations Part, No. 75.

২১. “The name of this cadre was modified by the Government of India to the ‘Civil Service of India,’ though the initials ‘ICS’ persisted and the cadre generally came to be known as the ‘Indian Civil।Service.” The ICS was encadred from the ranks of the reformed Covenanted Civil Service, i.e., minus those posts assigned to the newly-constituted Provincial Civil Service.” (Cla, Bureaucracy in Pakistan, Charles H. Kennedy, pp. 21-2). we can, The Civil Service in Pakistan, Muzaffar Ahmed Chaudhuri, p. 32.

২২. Aitchison Commission এর প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ‘ইম্পিয়িয়াল’ ও অন্যান্য সার্ভিস মিলিয়ে ১৮৮৬-৮৭ সালপর্বে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে মােট সার্ভিস সংখ্যা ছিল ১৭ (এদের প্রতিটির আবার প্রাদেশিক শাখাও ছিল)। প্রসঙ্গত ১৯১৭ সালে ৪টি গুচ্ছে যথাক্রমে ২, ৭, ৫ ও ১২ মিলিয়ে ছিল ২৬টি। পরে আরও বেড়েছিল।

২৩. এদেরকে কখনো কখনো  “all-rounder” ও বলা হতো। দেখুন, The Civil  Service, Vol. 1 Report of the Committee 1966-68, Chairman: Lord Fulton, Reprinted 1975, p. 11

পৃষ্ঠা: ৫৫

২৪. দেখুন, Report of the Public Service Commission, 1886-87, Recommendations Part, No. 75.

২৫. দেখুন, The Government of India Being A Digest of the Statute Law Relating Thereto, p. 128.

২৬. দেখুন, Report on Indian Constitutional Reforms, 1918 (Montagu- Chelmsford Report), p. 7.

২৭, ১৯১৯ সালের ভারত সরকার আইন-বিধির সূত্রে তখন পর্যন্ত যেসব প্রাদেশিক সিভিল সার্ভিসের নাম জানা যায়, সেগুলাে হচ্ছে- মাদ্রাজ, বােম্বাই, বঙ্গ বা বঙ্গীয়, যুক্তপ্রদেশ, পাঞ্জাব, বিহার-ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, আসাম ও বার্মা । (দেখুন, The government of India Act (1919) with Rules and Notifications thereunder and Index, 1924, pp. 236-40; Gazette of India, 1924.

Part I, p. 552].

২৮. Op. cit., p. 137. পরবর্তীকালে ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে স্থানীয়দের যােগদান আগের চেয়ে বেড়েছিল। একটি পরিসংখ্যানসূত্রে জানা যায়, ১৮৭৯ থেকে ১৮৯২ পর্যন্ত  এতে যেখানে ভারতীয়দের অন্তর্ভুক্তির হার ছিল ২.৫%, সেখানে পরবর্তী দুই দশকে (১৮৯২-১৯১২) তা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৫.৬%। (তথ্য সংগৃহীত, The Indian Review, January 1917, p. 8d).

২৯. দেখুন, Bureaucracy in Pakistan, pp. 22-3.

৩০. ১৯১৯ সালে ভারত শাসন আইন প্রবর্তনের ফলে প্রত্যক্ষত যেসব সার্ভিস কেন্দ্রীয় সরকার বা ভারত সরকার (Central/ Supreme Government) কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হতাে, সেগুলােকে দু-ভাগে বিভক্ত করা হয়েছিল। এর একটা ছিল সর্বভারতীয় সার্ভিস’ (All-India Services), যাতে ছিল- ভারতীয় সিভিল বা সাধারণ প্রশাসন, পুলিশ, শিক্ষা, ইঞ্জিনীয়ার্স বা আগের গণপূর্ত, মেডিকেল, বন, কৃষি ও ভেটেরিনারি), এবং অন্যটা কেন্দ্রীয় সার্ভিস’ যাতে ছিল- রেলওয়ে, কাস্টমস, অডিট ও অ্যাকাউন্টস, মিলিটারি অ্যাকাউন্টস, ডাক ও টেলিগ্রাফ ইত্যাদি। (দেখুন, The India Office, Sir Malcolm C.C. Seton, p. 130).

৩১. এগুলাে বিভিন্ন প্রদেশে বিবিধ সংখ্যক ছিল। যেমন, বিশ শতকের দ্বিতীয় দশকের মধ্যনাগাদ বঙ্গপ্রদেশে ছিল ১৩টি। (দেখুন, The Government of India Act (1919), 1924, p. 237), একাৰ্থে এগুলাে ছিল সর্বভারতীয় বা কেন্দ্রীয় সার্ভিসেরই প্রাদেশিক শাখা। এদের সংখ্যাও হতাে কম-বেশি তদনুরূপ।

৩২. দেখুন, Asian Civil Service : Development and Trends, edited by Amara Raksasataya and Heinrich Siedentope, p. 55.

৩৩. দেখুন, The Governtera of India Act (1919), 1924, p. 229.

৩৪. মনে রাখতে হবে, ১৯১৯ সালের পর থেকেই সমগ্র সিভিল সার্ভিসে ভারতীয় তথা স্থানীয়দের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল, যা ১৯৪৩ সালনাগাদ বহিরাগত ইংরেজ- ইউরােপীয়দের সম্মিলিত সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। (দেখুন, The British Commonwealth : The Development of Its Laws and Constitutions Series, Vol. 8 [Pakistan, Alan Gledhill, p. 49), তবে ভুললে চলবে না,

পৃষ্ঠা: ৫৬

তখনও তাতে হিন্দুদের তুলনায় মুসলমানদের সংখ্যা ছিল অনেক কম। সাতচল্লিশে দেশবিভাগকালে পাকিস্তান কমের মধ্যে কম পেয়েছিল। এর বড়াে একটা অংশই থেকে গিয়েছিল ভারতে।

৩৫. Albert Gorvine in, Administrative Problems in Pakistan, edited by Gurhrie S. Birkhead, p. 199; Political Development in South Asia, Parmanand, p. 111. স্মর্তব্য, পূর্বপাকিস্তানে ১৯৬২ সালে সব মিলিয়ে ২৬ টির মতাে প্রাদেশিক সার্ভিস ছিল। (দেখুন, Repor of the Provincia) Reorganisation Committee, Part II-East Pakistan, 1962, p. 110. (See Appendix E), প্রায় এসময়ে সর্বপাকিস্তান ও কেন্দ্রীয় সুপিরিয়র সার্ভিস সখ্যা ছিল ২৬। [দেখুন , Report of the Administrative Reorganisation Committee (Chairman G. Ahmed) 1958, p. 348 (see Appendix C)]

৩৬ এসম্পর্কে ইপিসিএসদের আনুষ্ঠানিক মতামত জানতে দেখা যায়, Repor of the Administrative and Services Reorganisation Committee, Part IV: The Evidence, January, 1975, pp. 226-31.

৩৭. Report of the Provincial Re-organisation Committee, Part II-East Pakistan, 1962-তে এসম্বন্ধে যে তথ্য পাই, একটু দীর্ঘ হলেও তা এখানে তুলে ধরা হলাে: এ থেকে এই সার্ভিস-ক্যাডারটির প্রকৃত অবস্থা বােঝা সহজ হবে: “165. Provincial Civil Service The Provincial Civil Service consists of two branches, an Executive branch and a Judicial branch/ The Executive branch previously consisted of two separate cadres, the East Pakistan Civil Service (E.P.C.S.) and the।East Pakistan Junior Civil Service (E.P.J.C.S.). The members of।the E.P.C.S. were appointed as deputy magistrates (corresponding to extra-assistant commissioners in West Pakistan) and became eligible for promotion, on reaching the required seniority, to “listed’ posts of Deputy Commissioner and Deputy Secretary (and above). The members of the E.PJ.C.S. began their service as circle officers or as sub-deputy magistrates, and 50 per cent of vacancies in the E.P.C.S. were also filled by promotion from the E.P.J.C.S./ For a long time, officers of the E.P.J.C.S. had been representing that the two provincial executive services should be merged on the ground that the duties performed by their members were almost identical and inter-changeable. This amalgamation eventually took place in 1957 and the decision was made effective from January, 1958. The cadre of the new E.P.C.S. (Executive) that came into being as a result of the merger was provisionally fixed at 780 members.” (দেখুন, ঐ, p. 37),