৫ মার্চ, ১৯৭১ জনতা
আজ ঢাকায় সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। ৫ম দিনের মত হরতাল পালনকালে সেনাবাহিনীর গুলিতে টঙ্গী শিল্প এলাকায় রফিজুদ্দিন, মতিন, আব্দুল মিয়া ও আলি নামে ৪ জন শ্রমিক নিহত হন এবং ২৫ জন শ্রমিক আহত হন। হতাহতের সংখ্যা আরও বেশী হতে পারে। এ সংবাদে ঢাকায় জনসাধারণের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। মসজিদে মসজিদে জুমার নামাজের পর শহীদানের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দিরে মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। লাহোরে দেশের পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক আন্দোলনে নিহত শহীদদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং সঙ্কটময় মুহূর্তে দেশের সংহতির জন্য বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা নারায়ণগঞ্জ সহ সারাদেশে প্রতিবাদ সভা ও মিছিল এর অব্যাহত। নারায়ণগঞ্জে সর্বস্তরের জনতা রক্ত দেয়ার জন্য ভিড় করছে। চট্টগ্রামে নিহতের সংখা বেরে দাঁড়িয়েছে ১৩৮ জন।
৫ মার্চ ১৯৭১
(বিলম্বিত খবর)
৩রা মার্চ একদল সেনাসদস্য দ্বারা বরিশাল থেকে নির্বাচিত এমএনএ, হুইপ ও জাতীয় শ্রমিক লীগ সাধারন সম্পাদক আব্দুল মান্নান এবং দোহার নবাবগঞ্জ থেকে নির্বাচিত এমএনএ আশরাফ আলী চৌধুরী( টিভি ধারাভাষ্যকার শামিম আশরাফ চৌধুরীর পিতা)লাঞ্ছিত হন। সেনারা আশরাফ আলীকে অস্রের মুখে জিম্মি করে রাস্তার ব্যারিকেড অপসারন করতে বাধ্য করে। মান্নান সেনাদলের সাথে তর্কে লিপ্ত হলে সেনারা তাকে রাইফেল এর বাট দিয়ে আঘাত করে। তার বুকের একটি হাড় ভেঙ্গে যায়। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আওয়ামী লীগ উক্ত ঘটনার ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক শাস্তি দাবি করে।
৫ মার্চ ১৯৭১ অন্যান্য দল
কৃষক শ্রমিক পার্টির ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে অবিলম্বে জাতীয় পরিষদের বৈঠক ডাকার আহবান জানানো হয় এবং সেনাবাহিনী করতিক হত্যাকাণ্ড বন্ধের আহবান জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের প্রেসিডেন্ট এএসএম সোলাইমান। পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান জেড. এ. ভুট্টো রাওয়ালপিন্ডির প্রেসিডেন্ট ভবনে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা করেন।
আলোচনা বৈঠক শেষে পার্টির মুখপাত্র আবদুল হাফিজ পীরজাদা মন্তব্য করেন, জাতীয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত রাখার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের কর্মসূচী সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
কাইউম মুসলিম লিগ প্রধান খান আব্দুল কাইউম খানের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। নতুন বাংলা মুসলিম লীগ গঠনের আহবান।