You dont have javascript enabled! Please enable it!

২২ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ ঢাকায় অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল

বিমানবন্দরে নেমে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরে সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেন ইয়াহিয়ার বর্বর বাহিনী কতৃক ধ্বংস স্তূপে পরিণত বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন অনুযায়ী শোষণ মুক্ত নতুন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন পরিশ্রম করার জন্য বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। সৈয়দ নজরুল বলেন যে গনতন্ত্র ধর্ম নিরপেক্ষতা সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির আদর্শে একটি শোষণহীন সমাজ কায়েমের জন্য বাংলাদেশের কৃষক শ্রমিক বুদ্ধিজীবী ও মধ্যবিত্ত সমাজকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তিনি পাকিস্তানে আটক জাতিরজনক শেখ মুজিবের মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। শেখ মুজিবকে আটকিয়ে রাখার ক্ষমতা ভূট্টোর নেই। তিনি ভুটটোকে বাস্তববাদী কর্মপন্থা নেয়ার আহবান জানান। তিনি ভূট্টোর অখণ্ড পাকিস্তানের দাবীর প্রশ্নে বলেন আমি ইহার প্রতেক্ষ জবাব দিব। তিনি আরও বলেন যে সকল শক্তি নেপত্থে ভূট্টোকে মদদ দিচ্ছে তাকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেছে তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের কাছে অস্পষ্ট নয়। ভূট্টো ওয়াশিংটন হতে বাড়ি ফিরেই ক্ষমতা পেয়ে একেবারে পিণ্ডিতে। বগুড়ার মোহাম্মদ আলীও এভাবে ক্ষমতা পেয়েছিলেন।

ইহার অর্থ কাউকে বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন হয়না। তিনি বলেন বাংলার স্বাধীনতার উপর আবারো যদি হামলার চেষ্টা করা হয় তবে আবারো বাংলার মানুষ রক্ত দেবে। বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামে সাহায্য করার জন্য তিনি ভারত সরকার ও জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন ইয়াহিয়ার নির্যাতনে বাঙালি যখন নিষ্পেষিত নিশ্চিহ্ন হচ্ছিল তখনি ইন্দিরা গান্ধী আমাদের হয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশংসা করে বলেন তারা মিত্রবাহিনীর সাথে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করেছে তা পৃথিবীতে বিরল। তিনি বলেন ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু আমাদের বলেছিলেন গোপনে চলে যাও সেখান থেকে তাদের বিরুদ্ধে রুখিয়া দারাও সংগ্রাম কর। নেতার কথামত যে বন্ধুর বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছিলাম সে বন্ধুকে আর দেখতে পাব না। ইয়াহিয়ার জঙ্গি বাহিনী তাকেও হত্যা করেছে। দেশের বাহিরে থেকে নেতার নির্দেশমতো বিবেক বুদ্ধি দিয়ে কাজকরেই স্বাধীনতা এনেছি।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!