You dont have javascript enabled! Please enable it!

২৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ সরকারী কর্মচারীদের প্রতি তাজউদ্দীন আহমদ

প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ সচিবালয়ে সরকারী কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেছেন যে, বঙ্গবন্ধু তার সোনার বাংলার যে রূপরেখা তৈরি করে রেখেছিলেন বৈপ্লবিক দৃষ্টি ভঙ্গী ও নতুন উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ঠিক সেভাবে দেশকে গড়ে তোলার কাজে আত্মনিয়োগ করার জন্য সরকারী কর্মচারীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন বাংলাদেশের কর্মচারীদের কর্মতৎপরতায় লাল সাদা ফিতার স্থান নেই। তাদের যুদ্ধের গতিতে কাজ করতে হবে। কাজ শুধু সচিবালয়ের ভিতরেই সীমাবদ্ধ নয় এ কথা সকলকে মনে রাখতে হবে তিনি সরকারী কর্মচারীদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে বলেছেন আর তারা যদি পরিবর্তন ঘটাতে না পারেন তবে পরিবর্তনের স্রোতে ভেসে যাবেন।
যারা স্বেচ্ছায় স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে দখলদার সরকারকে সহায়তা করেছে তাদের কখনো ক্ষমা করা হবে না। যারা অবস্থার চাপে পরে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন তাদের উদ্ভিগ্ন হওয়ার কারন নেই। তিনি আরো বলেন, অন্যায় ভাবে কাউকে শাস্তি প্রদান করা হবে না।
তিনি বলেন আমাদের যত দ্রুত সম্ভব ২৫ মার্চের অবস্থায় যেতে হবে আর এ জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধের চেয়ে বেশী পরিশ্রম করতে হবে। তিনি বলেন ভারতে আশ্রয় গ্রহন কারীদের দ্রুত ফিরিয়ে আনতে হবে এবং এদের খাদ্য বস্র আশ্রয় ও পেশাগত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন ৯ মাসের ক্ষতি আমাদের দু মাসে পূরণ করতে হবে।
সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন বাংলাদেশে গনহত্যা নির্যাতন নিয়ে যখন কোন দেশ প্রতিবাদ করেনি তখনই সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার কাছে লিখিত পত্রে এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন সোভিয়েত ইউনিয়ন ৩ বার ভেটো না দিলে মার্কিন ৭ম নৌ বহর বাংলাদেশ ঘাটি গেড়ে ভিয়েতনাম বা কোরিয়া বানাতো। স্বাধীনতা সংগ্রামে সমর্থন দেয়ায় তিনি ভুটান এবং পোল্যান্ডের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এখন অনেকেই আমাদের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে আমাদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে স্বীকৃতি দিবে তাদের বিষয়ে আমাদের হিসেব করে সম্পর্ক করতে হবে। এখন অনেক ষড়যন্ত্র চলছে ভারতের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করার। দেশের শত্রুরা এর মধ্যেই গা ঝাড়া দিয়ে তৎপর হয়ে উঠছে। এদের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!