You dont have javascript enabled! Please enable it!

ত্রিপুরা সীমান্তে পাক গােলা বর্ষণের ফলে বহু নাগরিক হতাহত

আগরতলা, ১২ অক্টোবর: গত পক্ষকালের মধ্যে ত্রিপুরা সীমান্তের বিভিন্ন অঞ্চলে পাক ফৌজের গােলা বর্ষণের ফলে বহু ভারতীয় নাগরিক ও বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থী নিহত হয়েছেন।
সােনামুড়া মহকুমার বক্সনগরে এখনও পাক গােলাবর্ষণ অব্যাহত আছে। ১১ অক্টোবর সােনামুড়া শহরের উপর নিক্ষিপ্ত গােলায় ‘ক’জন নাগরিক নিহত হন। কয়েক দিন পূর্বে আগরতলা শহরের নিকটবর্তী জাফানিয়াতে গােলাবর্ষণের ফলে ৩ জন নিহত হন। সদরের সীমানা অঞ্চলে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন এবং বহু গৃহপালিত পশু নষ্ট হয়েছে। এই অঞ্চলে প্রায় প্রতিদিন গােলাবর্ষণের ফলে কৃষকদের আউস ধান ঘরে তােলা যাচ্ছে না। সীমান্ত নিরাপত্তার কোনাে ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। কমলপুরের গঙ্গানাগরে এবং শহরের উপরেও গােলা বর্ষিত হচ্ছে। কয়েকদিন পূর্বে সেখানে ৩ জন নিহত হয়েছেন। খােয়াই মহকুমার আশারাম বাড়ির অবস্থাও তদনুরূপ। সেখানে নিরাপত্তার কোনাে ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় দুইশত পরিবার গ্রাম ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। বিলােনিয়ার রাধানগর অঞ্চলে পাক ফৌজের গােলাবর্ষণ চলছে। সাব্রুমের শ্রীনগরেও অনুরূপ আক্রমণ অব্যাহত আছে।
একদিকে গােলাবর্ষণ চলছে অপরদিকে সীমান্তের অভ্যন্তরে রাস্তায়, বিভিন্ন স্থানে মাইন পুতে দুর্ঘটনা ঘটানাের অন্তর্ঘাতমূলক কাজ চলছে। সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনা থাকায় জনসাধারণের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। এক শ্রেণীর চোরাকারবারী ব্যবসায়ী এই সুযােগে নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্যের মূল্য অত্যধিক বাড়িয়ে চলেছেন। ত্রিপুরা সরকারের পক্ষ থেকে সীমান্তবর্তী জনগণের নিরাপত্তার কোনাে ব্যবস্থা তাে করাই হয়নি, অসাধু চোরাকারবারী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোনাে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদের কাজে প্রচুর উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। তাই ত্রিপুরার বিভিন্ন সীমান্তবর্তী অঞ্চলের জনসাধারণ সরকারের এই অব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সংগঠিত করছেন।

সূত্র: দেশের ডাক
১৫ অক্টোবর, ১৯৭১
২৮ আশ্বিন, ১৩৭৮

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!