শারদ উৎসবমত্ত মুখরিত আনন্দোচ্ছল মহানগরী
সীমান্তে কামানের সংঘর্ষ: বারােয়ারি পূজামণ্ডপে কড়া পুলিশ প্রহরা
আগরতলা, ২৯ সেপ্টেম্বর। আজ বিজয়া। শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ তথা চতুর্থ দিবস- বিজয়াদশমী। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী তিন পূজা ও উৎসব আরতির পর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে আজ বিসর্জনের বাজনা বাজিতেছে। সন্ধ্যায় দশমী ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন অনুষ্ঠানের জন্য পূজামণ্ডপগুলােতে বিদায়ের লটবহর সাজানাে গুছানাে হইতেছে।
এবারের পূজার রিপাের্ট মােটামুটি শুভ এবং শান্ত। আগরতলা শহরে বারােয়ারি পুজামণ্ডপগুলােতে অবর্ণনীয় জনসমাবেশ ঘটিয়াছে অষ্টমী দিন। পরদিন মহানবমীতে সায়াহ্নে মেঘ-বৃষ্টির সমারােহ সাময়িকভাবে জনসমাবেশ ব্যাহত হইলেও অধিক রাত্রি পর্যন্ত পূজামণ্ডপের দ্বার খােলা ছিল আনন্দ উৎসবমত্ত জনতার আকাঙ্ক্ষা পরিতৃপ্তির নিমিত্ত। এই জনসমাবেশকে সুনিয়ন্ত্রিত করিবার জন্য ত্রিপুরা পুলিশ একদিকে কতকগুলাে সড়কে যানবাহন চলাচল একদম বন্ধ করিয়া দেয় অন্যদিকে পুজামণ্ডপগুলােতে উচ্ছঙ্খলা দমনে ও শান্তি নিরাপত্তা বিধানে যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়। ফলে পূজার কয়টি দিন সমাজবিরােধীদের দৌরাত্ম মাথাচাড়া দিতে পারে নাই। যে কারণে সকলেই অনায়াসে স্বাচ্ছন্দ্যে আনন্দোচ্ছ্বলিত উৎসব অনুষ্ঠানে গা-ঢালিয়া দিয়াছিল। বাজি পােড়ানাের উৎপাতটাও এবার ছিল না বলা চলে।
এবার উৎসবের বৈশিষ্ট্য লক্ষিত হয় সীমান্ত অঞ্চলসমূহে। কামানের মুখে (পাল্লার মধ্যে) বহু স্থানে স্থানীয় অধিবাসীরা ও শরণার্থীরা সম্মিলিতভাবে পূজা করিয়াছে। কয়েকটি স্থানে অষ্টমী ও নবমী দিনে কামান গর্জনেও পূজা উৎসব অনুষ্ঠান বন্ধ করিতে পারে নাই। একদিকে যেমন শেলিং অন্যদিকে তেমনই চলিয়াছে পূজা চণ্ডিপাঠ অঞ্জলি প্রদান। মােহনপুর সীমান্ত অঞ্চলে নবমীর দিন পাক গােলাগুলির জবাবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীও যৎসামান্য গুলি বারুদের সদ্ব্যবহার করায় পূজামণ্ডপসমূহে আতঙ্কের পরিবর্তে শৌর্য্য, বীর্য ও সাহসিকতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
সূত্র: ত্রিপুরা
২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
১২ আশ্বিন, ১৩৭৮