You dont have javascript enabled! Please enable it!

যশোর শংকরপুর বধ্যভূমি


মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়। কিন্তু, সেইসব আত্মত্যাগী মানুষের পরিচয় আজও অজানা। যাদের রক্তে এ দেশের স্বাধীনতা এসেছে তাদের স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য আজো কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয় এমন কিছু বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে। আবিষ্কৃত হয়েছে অজানা তথ্য এবং উদ্ধার করা হয়েছে বহু শহীদের নাম ঠিকানা। শঙ্করপুর বধ্যভূমির কুয়ায় ছিল শুধু লাশ আর লাশ, স্বাধীনতার পর কয়েক ট্রাক হাড়-কঙ্কাল সরানো হয়েছে
দেশের অন্যতম বধ্যভূমি যশোরের শঙ্করপুর সরকারি হাঁস-মুরগির খামার।এই বধ্যভূমিতে একাত্তরে বিহারীরা শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। স্বাধীনতার পর ভারতীয় সেনাবাহিনী এখান থেকে কয়েক ট্রাক হাড়-কঙ্কালসরিয়ে নিয়ে গেছে। ১৯৯২ সালে স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীরা এই বধ্যভূমির পাশে একটি স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তি নির্মাণ করে। প্রতিবছর ১৪ ডিসেম্বরে বিভিন্ন সংগঠন এই স্মৃতিস্তম্ভে শহীদদের উদ্দেশ্যেপুস্পার্ঘ্য অর্পণ করে।

যশোর শহরের দক্ষিণ দিকে শঙ্করপুর এলাকায় এ হাঁস-মুরগির খামারটি আইয়ুব খানের শাসন আমলে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি এই অঞ্চলের সর্ববৃহৎ খামার। এই খামারের বধ্যভূমি সম্পর্কে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত বিহারীরা এখানে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। হাবিব, টেনিয়া, কালুয়া, রমজান, মোস্তফা ছাড়াও শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী বিহারীরা বিভিন্ন স্থান থেকে বাঙালীদের ধরে এনে এখানে জবাই করে হত্যা করত। তাদের ভাষ্য, শত শত মানুষকে এখানে হত্যা করা হয়েছে। এই বধ্যভূমি সম্পর্কে আরও জানা গেছে, খামারেরভেতরের মুরগি রাখার ৪ ও ৫ নং শেডে লাশ পুঁতে রাখা হতো। এই শেডের পাশে ছিল পাম্প হাউস। এখানে বাঙালিদের জবাই করা হতো। খামারের পশ্চিমে ১১নং শেডের পাশে ছিল বিরাট কুয়া। এই কুয়াটি খনন করা হয়েছিল মরা মুরগি ফেলার জন্য। কিন্তু, একাত্তরের বিহারীরা এই কুয়া বাঙালিদের লাশে ভরে ফেলে। ডিসেম্বরে দেশ স্বাধীন হলে সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা, সামরিক কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধারা এই বধ্যভূমি পরিদর্শন করেন। ইলা মিত্র, আশাপূর্ণা দেবী বধ্যভূমি ঘুরে দেখে হতবাক হয়ে যান। তাঁরা এই হত্যাযজ্ঞের বিচার দাবি করেন।

Source: Govt website of Jessore

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!