১৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ যুদ্ধ আপডেট বিবিধ
কক্সবাজার প্রতিরোধ
কক্সবাজারে পাকিস্তানী বাহিনীর ছিল ৬১ রেঞ্জারস(আধা সামরিক/ বিশেষ পুলিশ) উত্তর দিক থেকে পাকিস্তানী বাহিনী বার্মার পথে যাতে না পালাতে পারে ভারতীয় বাহিনী উখিয়াতে তাদের রোমীয় ফোর্স নামে এক বাহিনী অবতরন করায় এই দিনে। রোমীয় ফোর্স এর দলে ছিল ১১ বিহার এর দুই কোম্পানি এবং ১/৩ গুর্খা। এর অধিনায়ক ছিলেন ব্রিগেডিয়ার এসএস রাই। এদের সমুদ্র পথে আনা হয়। তবে জোয়ার এবং চর এর জন্য এদের অবতরন বিঘ্ন ঘটে ফলে সম্পূর্ণ বাহিনী এদিন অবতরন করতে পারেনি। উভচর বাহিনী নামে খ্যাত এই বাহিনীর কয়েকজন পানিতে ডুবে মারা যায়। এদিন কক্সবাজার থেকে বার্মার দিকে পলায়নরত প্রায় এক ব্যাটেলিয়ন পাকিস্তানী সৈন্য আটক করে। এদের বেশিরভাগ ৬১ রেঞ্জার সৈন্য।
জামালপুরে চিরুনি অভিযান
মিত্র বাহিনি জামালপুর দখল শেষে এখন ঢাকার খুব কাছে চলে এসেছে জামালপুর থেকে মুল বাহিনীও ছত্র ভঙ্গ হয়ে টাংগাইল হয়ে ঢাকায় চলে এসেছে। তারপরও বিভিন্ন পকেট এলাকায় কিছু পাক সৈন্য রয়ে গিয়েছিল। ভারতীয় রিজার্ভ ব্রিগেডিয়ার ইরানীর ১৬৭ ব্রিগেড আজ উত্তর সীমান্ত দিয়ে জামালপুর প্রবেশ করে এবং পশ্চিম জামালপুরে সাঁড়াশি অভিজান শুরু করে। তারা গতদিনে বাউসি দখল করে। এদিন তারা জগন্নাথপুর ঘাট আক্রমন করে এবং দখল করে। এখানে ১৮ জন পাক সৈন্য নিহত হয়। বিপুল পরিমান রসদ সহ ৮ জন রাজাকার ২২ জন মুজাহিদ ৬১ জন পুলিশ ও রেঞ্জার আটক করা হয়। জামালপুর পরিস্কার শেষে তাদের টঙ্গীতে মোতায়েনের আদেশ হওয়ায় সেখানে গমনের জন্য প্রস্তুতি নেয়।
তাস (সোভিয়েত) সংবাদ
তাস পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বলেছে ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রচণ্ড গোলাবর্ষণে তাদের বাহিনী অবস্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র অবস্থান নিয়েছে। তারা মানেকশর বরাত দিয়ে বলেছে পাকিস্তানী বাহিনী ঢাকায় ভারতীয় বাহিনীর আর্টিলারি রেঞ্জের মধ্যে আছে তাই রক্তপাত এড়াতে তাদের অবিলম্বে আত্মসমর্পণ করা উচিত। অল ইন্ডিয়া রেডিও এর রাতের সংবাদের বরাত দিয়ে তাস বলেছে বিপুল সংখ্যক পাকিস্তানী বাহিনী প্রতিরোধের পরিবর্তে আত্মসমর্পণ করেছে। দিল্লীতে ভারতীয় মুখপাত্রের বরাত দিয়ে তারা বলেছে ভারতীয় বাহিনী সকালে বগুড়া দখল করেছে। রয়টারের বরাত দিয়ে তাস গভর্নর মালিক সহ ১৬ শীর্ষ কর্মকর্তার নিরপেক্ষ জোনে আশ্রয় নিয়েছে এবং কালিয়াকৈরে ৯ শীর্ষ পাক আর্মি অফিসার আটকের সংবাদ পরিবেশন করে।