১৪-১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ কামারখালি দখল ও আত্মসমর্পণ
৯ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া যুদ্ধে ব্যাপক হতাহতের কারনে কুষ্টিয়া দখলের পর এদিকে এই ব্রিগেড আর না রেখে ৪ ডিভিশন কমান্ডার মেজর জেনারেল বারার ৬২ ব্রিগেড কে আবার উল্টা পথে কামারখালির দিকে ধাবিত করেন। ১৩ তারিখ তারা মধুমতির পশ্চিম তীরে পৌঁছে। কুষ্টিয়া দখলকারী ৭ ব্রিগেডকেও নিয়ে আসেন মাগুরায়। নদীর পূর্ব পারে পাকিস্তানের ছিন্ন বিচ্ছিন্ন ক্লান্ত পরিশ্রান্ত ভীত দুটি ব্যাটেলিয়ন অবস্থান করছিল। এখানে কর্নেল আফ্রিদি খণ্ডিত ব্যাটেলিয়ন সমৃদ্ধ টাস্ক ফোরসকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। এদের সাথে আছে একটি মর্টার ব্যাটারি এবং ১০৫ এমএম গান এর এক ব্যাটারি। কামারখালির ৪ কিমি উত্তর পূর্ব দিক থেকে ৬২ ব্রিগেডকে এবং দক্ষিন দিক থেকে ৭ ব্রিগেডকে নদী পার করা হল। নদী পার হওয়ার জন্য তারা জে ভাসমান ব্রিজ তৈরি করেছিল তা একটি বিশ্ব রেকর্ড ছিল। ৬২ ব্রিগেড নদী পার হয়ে রোড ব্লক পায় এবং নিকটেই পাক সৈন্য এর অবস্থান সনাক্ত করে।
ভারতীয় ব্রিগেড এদের দুভাগে বিভক্ত করে ফেলে এবং আক্রমন করে। পাক বাহিনীর ব্যাপক হতাহত হয়। রাত ১১ টার দিকে ৮৩ জনের লাশ গননা করা হয়। আত্মসমর্পণ করে ১৫ জন অফিসার ১০ জন জেসিও এবং ৩৩৪ জন জওয়ান। ভারতীয় পক্ষে নিহত হয় ১ জন জেসিও ৫ জন জওয়ান। আহত হয় ২ জন অফিসার ২২ জন জওয়ান। এই দুই ব্রিগেড ফরিদপুর রওয়ানা হওয়ার পর ১৬ ডিসেম্বর সকালে তাদের স্থির হতে বলা হয় এবং ঢাকায় পাক বাহিনীর সারেন্ডারের কথা জানানো হয়। ১৬ ডিসেম্বর ফরিদপুরের সকল পাক সৈন্য কামারখালিতে আত্মসমর্পণ করে। এখানে পাকিস্তানী ৯ ডিভিশনের জিওসি সহ ৩০০০ পাক সৈন্য ভারতীয় ৪ ডিভিশন জিওসি মেজর জেনারেল বারার এর কাছে আত্মসমর্পণ করে।