১২ ডিসেম্বর, ১৯৭১ঃ টাঙ্গাইল ছত্রীসেনা
https://www.youtube.com/watch?v=k283kEJKcQY
মিত্রবাহিনী এদিন ভোরে টাঙ্গাইল ও মির্জাপুরের মাঝে আরও ছত্রীসেনা নামিয়ে দেয়। তাঁদের সাথে মিলিত হয় কাদেরিয়া বাহিনীর ২য় প্রধান আনোয়ারুল আলম শহীদের কাদেরিয়া বাহিনীর একটি অংশ। রাতে টাঙ্গাইলের উপর আক্রমণ চালায় মিত্রবাহিনী। টাঙ্গাইলে অবতরন করা এই বাহিনী ২প্যারা ব্যাটেলিয়ন যার অধিনায়ক কুলওয়ান্ত সিংহ পান্নু। এই বাহিনী ময়মনসিংহ দিয়ে প্রবেশ করা ব্রিঃ সন্ত সিংহ বাবাজির এফ জে সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। এ অপারেশনের বিমান থেকে নিক্ষেপকৃত একটি জীপ নির্ধারিত এলাকার দু মাইল দূরে পরে। মর্টার বাহী প্যারাসুট অন্য যায়গায় পরে। এদিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অস্র গোলা বারুদ রসদ ইত্যাদি স্থানীয় জনসাধারনের সহযোগিতায় একত্র করা হয়। এর পর ময়মনসিংহ এর এফজে সেক্টরের ১মারাঠা রাইফেল টাঙ্গাইল পৌঁছে। এর পর পর এফজে এর বাকী এবং ৯৫ ব্রিগেড তাদের সাথে মিলিত হয়। ৯৫ ব্রিগেড টাংগাইল আসতে বেশ সমস্যায় পড়ে। তাদের যানবাহন সঙ্কট ছিল তা সত্ত্বেও এক দিনে তারা ৫৬ মাইল অতিক্রম করে। পশ্চাদপসরণ সত্ত্বেও পাক বাহিনীর একটি গ্রুপ ভোর সাড়ে ৫ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত মিত্র বাহিনীর উপর দুই দফা আক্রমন করে এদিন ফোরট উইলিয়ামে জেনারেল জেকব এক সাংবাদিক সম্মেলনে টাংগাইলে ছত্রী সেনা অবতরনের কথা স্বীকার করে বলেন কোথায় নেমেছে কত নেমেছে এমন প্রশ্ন করা যাবে না। তা সত্ত্বেও অনেকে প্রশ্ন করলে তিনি প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান। সেখান থেকেই জনসংযোগ বিভাগ ছত্রী সেনা নামানোর কিছু ফাইল ছবি সরবরাহ করে। পরদিন প্রায় সকল পত্রিকায় এই সংবাদ ছাপা হয়।
টাঙ্গাইলের প্যারা ড্রপে রাশিয়ান তৈরি এএন ১২, ডাকোটা এবং প্যাকেট বিমান ব্যাবহার করা হয়। উত্তর পূর্বের তিন ঘাটি থেকে বিমানগুলি দমদম এবং কালাই কুণ্ডা আনা হয়। সেখান থেকেই প্যারাদের নিয়ে আনা হয়। ১১ তারিখের ড্রপে ৪৮টি বিমান ব্যাবহার করা হয়। এএন ৬টি প্যাকেট ২০টি ডাকোটা ২২টি। মুল প্যারা অবতরনের আগে ১৬ কিমি দূরে ডামি প্যারা নামানো হয় এরা প্যাকেট বিমান ও কেরিবু বিমানে নামে। এরা ছিল মূলত পথ প্রদর্শক। ভারী রসদ নামানোর জন্য এ এন ১২ ব্যাবহার করা হয়। ড্রপের সময় ফাইটারর বিমান গুলো নিরাপত্তার বেবস্থা করে। প্রথম দিনে মোট ৭৫০ জন প্যারা নামতে সক্ষম হন। ২য় দিনে নামেন ৪০ জন। সবাই প্যারা জাম্প করে নামেননি। কেউ কেউ বিমানে টাঙ্গাইল বিমানবন্দরেও অবতরন করেছেন।