You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.02.15 | ওয়ালি খানের শাহিবাগের বাসায় জুলফিকার আলী ভুট্টো | ১৫ ফেব্রুয়ারী ১৯৭১ - সংগ্রামের নোটবুক

১৫ ফেব্রুয়ারী ১৯৭১ (পশ্চিম)

ওয়ালি খানের শাহিবাগের বাসায় জুলফিকার আলী ভুট্টো ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির অল পাকিস্তান সভাপতি খান আব্দুল ওয়ালি খানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত । বৈঠকে শাসনতন্ত্র বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
• কাউন্সিল মুসলিম লীগের নির্বাচিত এমএনএ সরদার শওকত হায়াত খান বলেছেন আওয়ামী লীগের কাধে সমগ্র দেশের সমস্যা সমাধানের ভার অর্পিত। তিনি বলেন তার দল ৬ দফা সমর্থন করে।পাকিস্তানের গুজরাট থেকে কাউন্সিল মুসলিম লীগের নির্বাচিত অপর এমএনএ জহুর ইলাহি তার বক্তব্বের সমালচনা করে বলেন হায়াত কে দল থেকে ৬ দফার পক্ষে বলার কোন মেনডেট দেয় নাই।
• জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত আগা শাহী পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যে গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেদিকে দৃষ্টি দেয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ার ম্যানের প্রতি অনুরোধ করে পত্র প্রেরন করেছেন।

মুজিব, আওয়ামী লীগ ও একজন লুন্দখরের কথা
সুত্র-অসমাপ্ত আত্মজীবনীঃ শেখ মজিবুর রহমান পৃষ্ঠা (১৩৫-১৪২)
সীমান্ত প্রদেশের মারদান জেলার লুন্দখর এলাকায় জন্ম গোলাম মোহাম্মদ খানের। ১৮ বছর বয়সে কংগ্রেসে যোগদান করেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের জন্য ১৯৩০ ও ১৯৪২ সালে ব্রিটিশরা তার বাড়িঘর পোড়াইয়া দেয়। ১৯৪২ সালে লুন্দখর কংগ্রেস ত্যাগ করেন। ১৯৪৪ সালে কায়দে আযমের অনুরধে তিনি মুসলিম লীগে যোগদান করেন। দেশ ভাগের পর তাকে জেলে যেতে হয় এবং পরে সীমান্ত প্রদেশে নিষিদ্ধ করে তাকে মুক্তি দেয়া হয়। ১৯৪৯ সালের শেষ দিকে অল পাকিস্তান দল করার লক্ষে ভাসানি মুজিবকে লাহোর যেতে বলেন। সোহরাওয়ার্দী তখন লাহোরে নবাব মামদুতের বাসায় থাকতেন। মুজিবকে সেখানে থেকে মিয়া ইফতেখার ও পীর মানকি শরিফের (পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লিগ প্রতিষ্ঠার ৪ মাস আগেই পীর মানকি শরিফ এবং লুন্দখর একই নামে দল গড়েছিলেন) সাথে আলাপ করতে বলেন। অল পাকিস্তান দল কে নেতৃত্ব দিবেন সোহরাওয়ার্দী। মুজিব লাহোর গেলেন মামদতের বাসায় উঠলেন।

সেখানে একদিন মুজিব লুন্দখর কে দেখতে পান এবং তার সাথে পরিচিত হন। তাকে সীমান্ত প্রদেশ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে তাই তিনি এখন লাহোর থাকেন। তিনি প্রদেশ(দলটি প্রাদেশিক ছিল) আওয়ামী মুসলিম লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। ৩ দিন পর লুন্ধখর মুজিবকে কেম্বেল পুরে আওয়ামী মুসলিম লীগের সভায় নিয়ে যান। সেখানে পীর মানকি শরিফের সাথে পরিচয় হয়। দল গঠনের প্রস্তাব তখনি দেয়া হয়। পরে মামদতের আজাদ পাকিস্তান পার্টি, মানকি শরিফের আওয়ামী মুসলিম লীগ ও সোহরাওয়ার্দীর জিন্নাহ মুসলিম লীগ মিলে অল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ দীর্ঘ দিন পর জিন্নাহ আওয়ামী মুসলিম লীগের সহযোগী সংঘটন হয়। ৭০ সালে তিনি আবার খাটি মুসলিম লিগারে পরিনত হন এবং কাউন্সিল মুসলিম লীগে যোগ দেন। ১৯৭০ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভের পর তিনি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন। অন্যান্য সকল দলের আগে তিনি প্রথম নেতা যিনি ভাষা সমস্যার বিষয় তুলে সমগ্র পাকিস্তান ব্যাপী দাঙ্গা লাগানোর উপক্রম করেছিলেন যদিও তার ষড়যন্ত্র টিকে নাই।