You dont have javascript enabled! Please enable it!

৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ যুদ্ধ আপডেট

পাকিস্তান দাবী করেছে তারা যশোরে একটি এসইউ বিমান গুলি করে ভুপাতিত করেছে এটি যশোর রেল স্টেশনের কাছে ভুপাতিত হয়।
এপি জানিয়েছে ভারতীয় বাহিনী দক্ষিন(দাউদকান্দি) পশ্চিম (কামারখালি) ও পূর্ব দিক(আশুগঞ্জ) থেকে ঢাকার ২৮ মাইলের কাছাকাছি চলে এসেছে। ইস্টার্ন মিলিটারি কম্যান্ড খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
ভারতীয় বাহিনী কুমিল্লায় পাকিস্তানী বাহিনীকে ৪ জায়গায় অবরুদ্ধ করে রেখেছে। বিদেশী সাংবাদিকরা জানিয়েছে যুদ্ধ ক্ষেত্রে কভার করার জন্য এখন তারা নিষিদ্ধ থাকায় খবরের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারছে না। এদিনের সবচে বড় যুদ্ধ চলছে কুমিল্লায়। ভারতীয় বাহিনী চাদপুর শহরে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে।
ভারতীয় নৌবাহিনী চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চালনায় বোমাবর্ষণ করেছে।
পাকিস্তানী বাহিনী ব্রাহ্মনবাড়িয়া থেকে পশ্চাৎপসরন করে আশুগঞ্জ চলে এসেছে।
আজকে পাকিস্তানী বাহিনীর নিহতের তালিকায় আছেন ৩ মেজর ৩ ক্যাপ্টেন এরা হলেন মেজর আজমত হায়াত ৫৫ ফিল্ড আর্টিলারি, মেজর মুহাম্মদ রিয়াজ ১৮ ফিল্ড আর্টিলারি মেজর কামাল মেহের, ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ইয়াসিন ৬ একে ক্যাপ্টেন আফতাব আহমেদ খান ১ আর্মি এভিয়েশন, ক্যাপ্টেন দরিয়াত খান ২১১ মর্টার ব্যাটারি, সেঃ লেঃ নাজির ১৮ বালুচ। ক্যাপ্টেন দরিয়াত খান ২১১ মর্টার ব্যাটারি কোথায় কিভাবে নিহত হয়েছেন তার তথ্য পাকিস্তানীরা পায়নি। ব্যাপক তদন্ত শেষে ৭৪ সালের ১ আগস্ট তাকে যুদ্ধে নিহত ঘোষণা করা হয়।
পাকিস্তান বিমান বাহিনী ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় পাকিস্তান তাদের কিছু বিমান বার্মার মাধ্যমে চীনে পাঁঠিয়ে দেয়। এ বহরে ১০ জন বৈমানিক ছিলেন।পরদিন পাঠানো হয় ৪ জনকে থেকে যায় আর্মি এভিয়েশনের হেলিকপ্টার পাইলট টেকনেশিয়ানরা।
ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান শাম মানেকশ পাকবাহিনীকে আত্মসমর্পন করার আহবান জানান এবং আশ্বাস দেন যে, আত্মসমার্পন করলে পাকবাহিনীর প্রতি জেনেভা কনভেনশনের রীতি অনুযায়ী সম্মানজনক ব্যবহার করা হবে। জেনারেল মানেকশ- এর এই আহ্বান আকাশবানী থেকে বিভিন্ন ভাষায় বারবার প্রচার করা হয়।
নেপালে সোভিয়েত রাষ্ট্রদূত লুজিনভ পাক ভারত যুদ্ধে তার দেশের অবস্থানের কথা সেখানকার চীনা সামরিক এটাশে জানিয়ে দেন। লুজিনভ চীনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে বলেন। তিনি বলেন চীনের এরূপ কাজের ফল হবে সোভিয়েতের চীন আক্রমন। সোভিয়েত ইউনিয়ন এর মধ্যে জিনজিয়াং প্রদেশের মুসলমান অধ্যুষিত উইঘুরের কাশঘরের পূর্বে লপনুরের লক্ষ্য করে সৈন্য মোতায়েন করে। চীন ও তাদের পাল্টা প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে রাখে।
ঢাকার কাওরান বাজারে রহমতে মিশন এতিম খানায় বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপে প্রচুর হতাহত হয়। আজ ঢাকায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর কোন হামলা কেউ প্রত্তেক্ষ করেনি। ভিজনিউজ ক্যামেরাম্যান তিনটি লাশ উদ্ধার দেখেছেন। পাকিস্তানী সংবাদ মাধ্যম ক্ষীণ কণ্ঠে ভারতীয় হামলার কথা বলে পত্রিকাগুলি এ হামলা কম গুরুত্তপূর্ণ হিসেবে প্রকাশ করে। ভোর রাতে এ হামলা চালানো হয় এবং নিক্ষিপ্ত ৪ টি বোমার দুটি বিস্ফোরিত হয়নি। অবিস্ফোরিত বোমা সাংবাদিকদের প্রদর্শন করা হয়নি।
এর আগে নাখালপাড়ায় এমপি হোস্টেল ও এয়ার ফোর্স মেস এ বিমান হামলায় ৩ জন নিহত হয়েছিল।
গভর্নর মালিক প্রথম কেবলের উত্তর না পেয়ে আজ আবার ইয়াহিয়ার কাছে কেবল পাঠান। এবারো উত্তর এলোন। উত্তর না পেয়ে নিয়াজি নিজেকে এ তিনদিন অনেকটাই আড়াল করে রাখেন এর ফলে বিদেশী সাংবাদিকদের মধ্যে কানা ঘুষা শুরু হয়।

 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!