৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ যুদ্ধ আপডেট – সিলেট ফ্রন্ট
মৌলভীবাজারের পাকিস্তানী ৩১৩ ব্রিগেড মৌলভীবাজার ছেড়ে একদিন শের পুর অবস্থান করে পরে শেরপুর নিরাপদ নয় ভেবে তারা সিলেট চলে যায়।এই ব্রিগেডে দুই ব্রিগেডিয়ার সাদুল্লা ও রানা। শেরপুর ত্যাগ করার সাথে সাথে মৌলভীবাজার মুক্ত হয়। দিন শেষে দক্ষিণ দিক থেকে আগত ৮ বেঙ্গল, ৩ পাঞ্জাব মৌলভিবাজার অবস্থান করে। জইন্তিয়াপুর থেকে আগত ১ বেঙ্গল, ৫/৫ গুর্খা সিলেটের দরবস্ত অবস্থান নেয়। পূর্ব দিক থেকে অগ্রসর মান ৪/৫ গুর্খার বেশিরভাগ হেলি লিফট এ সিলেট শহর প্রান্তে অবস্থান নিয়েছেন। সিলেটের ২০২ ব্রিগেডে সলিমুল্লাহ। মৌলভীবাজার থেকে আগত দুই ব্রিগেডিয়ার সহ তিন ব্রিগেডিয়ার সভা করে ৩০ এফএফ থেকে ৫০ জন ৩১ পাঞ্জাব থেকে ৪৫ জন ২২ বালুচের দুই কোম্পানি নিয়ে একটি খণ্ডিত মিশ্র ব্যাটেলিয়ন তৈরি করে তার সাথে ৪টি ফিল্ড গান দিয়ে ২২ বালুচ কম্যান্ডারকে নির্দেশ দিলেন ৪/৫ গুর্খার উপর হামলা চালাতে। ২২ বালুচ কম্যান্ডার তা প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে সিলেটের প্রতিরক্ষা দুর্বল হয়ে আসে। সিলেটের পাক বাহিনী ছিল খাদিম নগরে এক কোম্পানি মিশ্রিত ৩১ পাঞ্জাব, সালুটিকরে এক কোম্পানি মিশ্রিত ৩১ পাঞ্জাব, ব্রিগেড সদরে ছিল নিয়মিত প্যারা মিলিশিয়া মিশ্রিত বাহিনী। দিন শেষে ভারতের ৫৯ ব্রিগেড (৪/৫ গুর্খা, ৬ রাজপুত, ৯ গার্ড) ফেঞ্চুগঞ্জ অবস্থান করে।
৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার সিলেট সার্কিট হাউসসহ বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ করে। এই আক্রমণে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা হতাহত হয়। পাকিস্তানি মেজর সিদ্দিক সালিকের লেখা ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ বইয়ে। তিনি লিখেছেন: ‘সম্ভবত পর্যবেক্ষণের জন্য হেলিকপ্টার দুটি সার্কিট হাউস ও কিন সেতুর ওপর দিয়ে উড়ে যায়। হঠাৎ করেই একটি হেলিকপ্টার থেকে সার্কিট হাউস চত্বরে একটি বোমা নিক্ষেপ করা হয়। বোমাটি সার্কিট হাউসের আঙিনায় বিস্ফোরিত হলে চারজন আহত হয়। এদের মধ্যে একজন গোয়েন্দা বিভাগের কেরানি। অপর তিনজন পুলিশ। আমাদের সেনারা আহতদের সাহায্যে এগিয়ে আসামাত্র হেলিকপ্টার থেকে গুলিবৃষ্টি শুরু করা হয়। ফলে কয়েকজন সেনা হতাহত হয়।’