You dont have javascript enabled! Please enable it!

৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ জাতিসংঘ

জাতিসংঘ কর্মচারীদের ঢাকা ত্যাগ ব্যার্থ
কানাডা সরকারের দেয়া একটি সি-১৩০ বিমানে জাতিসংঘ কর্মচারীদের ব্যাংকক নেয়ার প্রচেষ্টা ভারতীয় বিমান বাহিনীর গতকালের ঢাকা আক্রমনের কারনে বাতিল হয়ে গেছে। বিমানটি তেজগাও বিমান বন্দরে অবতরনে ব্যার্থ হয়। চট্টগ্রামের কাছে বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় নৌ বাহিনীর জেট বিমান বিমানটিকে ধাওয়া করে ভীতি সৃষ্টি করার পর বিমানটি পরে ব্যাংকক ফিরে যায়। এর আগে জাতিসংঘের তরফ হতে জাতিসংঘ কর্মচারীদের নিরাপদ অপসারণ এর স্বার্থে উভয় দেশকে সকাল সাড়ে দশটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত যুদ্ধ বিরতির আহবান জানিয়েছিল। পাকিস্তান এতে সাড়া দিলেও ভারত নীরব থাকে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে যাত্রীরা বিমানবন্দরে গিয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর ফিরে আসে। হোটেলে ফিরে তারা নোটিশ বোর্ডে তাদের কর্মসূচী বাতিলের কারন জানতে পারে। জাতিসংঘের স্টাফরা প্রায় সবাই united nation east Pakistan relief oparetion এর সাথে যুক্ত। এরা বর্তমানে সংখ্যায় ৪৬ জন আর কন্সুলার স্টাফ ও পরিবার সহ সংখ্যা ২৬০।
জাতিসংঘের ত্রান কর্মসূচী
জাতিসংঘ মহাসচিব সাধারন পরিষদে জানান পূর্ব পাকিস্তানে জাতিসংঘের ত্রান কর্মসূচী UNEPRO সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আণ্ডার সেক্রেটারি জেনারেল কন্সস্টাটিন স্তেভরোপলাস এর বিবৃতির উপর কথা বলতে গিয়ে বলেন পূর্ব পাকিস্তানে এখন পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ চলছে। তাই সেখানে তার কর্মীদের নিরাপত্তা নেই। এ পরিস্থিতিতে সাহায্য স্থানান্তরও অসম্ভব। যাহাদের জন্য সাহায্য তাদের কাছে ত্রান না পৌছলে ত্রান কর্মসূচী চালানোর অর্থ হয়না।
পাক ভারত সমস্যা জাতিসংঘের সাধারন পরিষদে স্থানান্তরিত
চীন ও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদে পাক ভারত সমস্যা সমাধানে ব্যার্থ হয়ে সাধারন পরিষদে বিষয়টি উত্থাপন করে। তবে তারা নিজে নয় সোমালিয়ার (প্রতিনিধি আব্দুল রহিম আব্বি ফারাহ) মাধ্যমে প্রস্তাব উত্থাপন করে। অবশ্য ভোটে ১১-০ প্রস্তাবটি সাধারন পরিষদে স্থানান্তর হয়। এধরনের ঘটনা এর আগে (কঙ্গো নিয়ে) ১৯৬০ সনের সেপ্টেম্বর মাসে হয়েছিল। জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি সমর সেন বলেছেন উপমহাদেশের সমস্যার মুল কারনের উল্লেখহীন প্রস্তাব সাধারন পরিষদে এলে তার দেশ মেনে নেবে না। রুশ ও ব্রিটিশ প্রতিনিধি বিষয়টি সাধারন পরিষদে নেয়ার বিরোধিতা করেছেন।
পরিষদে ১২ ঘণ্টা আলোচনা হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন সেখানে একটি বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল যা কণ্ঠ ভোটে বাতিল হয়ে যায়।
সাধারন পরিষদে পাকিস্তান প্রতিনিধি বলেন পাকিস্তান আকারে ভারতের চার ভাগের একভাগেরও কম। দেশের দুটি অংশ বিশাল ভারত দ্বারা পৃথক হয়ে আছে। পূর্ব পাকিস্তানে অনেক সমস্যা আছে আর সে সমস্যাকে কেন্দ্র করে বহিঃশক্তি অপ ব্যাবহার করছে।
পরে সভাপতি আদম মালিক ভোটে আহবান করেন। আফগানিস্তান ভোট দানে বিরত ছিল। ভোট শেষে প্রস্তাব ১০৪-১১ ভোটে পাশ হয়। ১০ টি দেশ ভোট দেয়নি।
নোটঃ পল মার্ক হেনরি ডিসেম্বরের ৫-৬ দিন (১২-১৮) দেশের হর্তাকর্তা ছিলেন।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!