৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ মুক্ত এলাকা
এদিন মুক্ত হয় যশোর, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফেনী, কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট। থানা লেভেলে আরও সীমান্তবর্তী এলাকা মুক্ত হয় এদিন। সিলেটের সকল সীমান্ত পতন হয় কয়েকদিন আগে। সর্বাত্মক হামলায় যৌথ বাহিনী সুনামগঞ্জ অন্তর্ভুক্ত না রাখায় ৪ তারিখ থেকে এখানে আর বড় হামলা হয়নি। সিলেতের তিন দিক থেকে পাক বাহিনী দ্রুত অগ্রসর হওয়ায় সিলেট রক্ষার জন্য সুনামগঞ্জের বাহিনী সিলেট অভিমুখে যাওয়ার সাথে সাথে সুনামগঞ্জ মুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে জেলায় প্রবেশ করতে শুরু করে।
৫ তারিখ রাত থেকে পাক বাহিনীর ইউনিট গুলো ৫৭ ব্রিগেডের সাথে চুয়াডাঙ্গায় যুক্ত হয়। ফলে মেহেরপুর মুক্ত হয়। হবিগঞ্জে জেলা শহরে পাকবাহিনীর বড় ক্যাম্প না থাকলেও একটি ব্যাটেলিয়ন এর কয়েক কোম্পানি বিভক্ত আকারে মাধবপুর চুনারুঘাট সীমান্ত প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত ছিল। ৩ নং সেক্টর মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় ৩১১ ব্রিগেডের হামলায় বিপর্যস্ত ক্যাম্প সমুহ সিলেট এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে সড়ে গেলে হবিগঞ্জ মুক্ত হয়। ভারতীয় ৯ম ব্রিগেড এবং ক্যাপ্টেন নওয়াজেশ এর মুক্তি বাহিনী কুড়িগ্রামের দিকে অগ্রসর হলে কুড়িগ্রামে অবস্থানরত পাকবাহিনী ট্রেনযোগে রংপুরের দিকে সরে যায়। মিত্র বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধারা মুক্ত কুড়িগ্রামে প্রবেশ করে। ৫ তারিখে পাক বাহিনী লালমনিরহাট ছেড়ে দিয়ে রংপুর সৈয়দপুর চলে যায়। ৬ তারিখ বিনা বাধায় মুক্তিযোদ্ধারা লালমণির হাঁট প্রবেশ করে। ফেনী মহকুমা যুদ্ধের মাধ্যমে মুক্ত হয়। ভারতীয় এবং মুক্তিবাহিনীর যৌথ ব্রিগেড কিলো ফোর্স ফেনীর ৩ দিক থেকে আক্রমন শুরুর পর ফেনীতে অবস্থানরত ৫৩ ব্রিগেড ৫ তারিখ থেকেই লাকসামে পশ্চাদপসরণ করে ফলে ফেনী এই দিনে মুক্ত হয়। ফেনী দখলের সাথে সাথেই পাকিস্তানের সকল ডিভিশনের সাথে তাদের ব্রিগেড সমুহের সংযোগ বিচ্ছিন্ন সম্ভব হয়।