৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ যশোর আক্রমন
সকাল থেকে ১০৭ ব্রিগেড সড়ে খুলনার দিকে চলে যায়। আফ্রা থেকে ভারতীয় বাহিনী যশোর আক্রমন করতে থাকে দুইবার ব্যার্থ হওয়ার পর ৩য় বার তারা যশোর প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। প্রবেশকালে তারা পাকবাহিনীর ৬ পাঞ্জাবের এক প্লাটুন ছারখার করে দিয়ে শহরে প্রবেশ করে। এই প্লাটুন বেশ কয়েক ঘণ্টা এক ক্যাপ্টেনের নেতৃত্ব এ ভারতের ব্যাটেলিয়ন শক্তির মোকাবেলা করে। অতিরিক্ত বাহিনী না থাকায় পাক বাহিনী এ গ্যাপ আর পূরণ করতে পারেনি। এ ছোট ফাটল দিয়েই ভারতীয় বাহিনী যশোর দখলে নিল। ৮ পাঞ্জাবের মেজর ইয়াহিয়া বিষয়টি ব্রিগেড হেড কোয়ার্টারে জানান। ভারতীয় বাহিনী ততক্ষনে যশোর ঝিনাইদহ রোডের উপর ট্যাঙ্ক নিয়ে অবস্থান নিয়েছে। হায়াত খবর পেয়েই তার সাথে থাকা বেনাপোলের ২২ এফএফকে সরে এসে নোয়াপারায় অবস্থান নিতে বলেন। শহরের তিন রাস্তার মোড়ে এক কোম্পানি ২২ এফএফ পাহারা বসান যাতে যশোরের পাক বাহিনী নিরাপদে খুলনার দিকে সরে যেতে পারে। ব্রিগেডিয়ার হায়াত সব ব্যাটেলিয়ন কমান্ডারকে সরে আসতে বলেন। দিনের মধ্যেই হায়াতের ব্রিগেড খুলনার উদ্দেশে নোয়াপাড়ার দিকে সরে যায়।
ব্রিগেডিয়ার হায়াত ছিলেন পরহেজগার ধরনের। বেশীরভাগ সময় কাটাতেন নামাজের পাটিতে। তিনিই প্রথম উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যিনি ব্রিগেড লেভেলে পচাদপসরন করলেন এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলার দখল বিনা যুদ্ধে ছেড়ে দিলেন। ভারতীয় বাহিনী বড় পরিসরে ৭ ডিসেম্বর যশোর প্রবেশ করে। হায়াত ডিভিশনাল সদর মাগুরায় না যেয়ে খুলনায় গমন করেন উদ্দেশ্য সেখানে পলায়নের জন্য কয়েকটি নৌযান প্রস্তুত ছিল।
যশোরে এদিন মজার ঘটনা ঘটে পাকিস্তান বাহিনীর অনেকেই খুলনায় যাওয়ার পথ চিনত না। খুলনার পথে তাদের সরে যাওয়ার সময় এক এম্বুলেন্স ভুলে উত্তর দিকে চৌগাছার রাস্তায় চলতে থাকে পথে এক এমপি এম্বুলেন্স থামিয়ে এম্বুলেন্স চালককে বলে খুলনা কোথায় তুমি জাননা। খুলনা দক্ষিনে।