You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.04 | হিলি বাদ রেখে ভারতীয় বাহিনীর আক্রমন - সংগ্রামের নোটবুক

৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ হিলি বাদ রেখে ভারতীয় বাহিনীর আক্রমন

হিলিতে ২৪ নভেম্বর আক্রমনে ভারতীয় ৮ গার্ডের ব্যাপক ক্ষতির পর ৩ তারিখ পর্যন্ত ভারতীয় বাহিনীর বড় আক্রমন স্থগিত ছিল। ৩-৪ তারিখ ভারতীয় বাহিনী তাদের পরিকল্পনা সংশোধন করে হিলিকে পাশ কাটিয়ে ১১ কিমি উত্তরে ৬৬ ব্রিগেড সম্পূর্ণ এবং ২০২ ব্রিগেডের আংশিক পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমন করে। এলাকাটি ছিল পাক ২৩ ব্রিগেড এবং ২০৫ ব্রিগেড সীমানা। সেখানে পাক বাহিনীর মাত্র এক কোম্পানি সৈন্য থাকায় তারা ১৩ মারাঠা লাইট সহজেই ফুলবাড়ি দখল করতে সক্ষম হয়। পাকিস্তানীরা ফুলবাড়ি ত্যাগ করার সময় জমুনা নদীর উপর ছোট ব্রিজটি ধ্বংস করে যায়। এর আগে এখানে আরও পাকিস্তানী সৈন্য ছিল তাদের পরে অন্যত্র মোতায়েন করা হয়েছিল। ফলে এ এলাকাটি ফাকা হয়ে যায়। পাকিস্তানীরা এ এলাকাটিকে দুর্বল করার কারন এলাকাটি ছিল বিল বা নিচু এলাকা এবং এ সময়েও অনেক স্থান জলামগ্ন থাকে। আক্রমনের শুরুতেই শেলিং এ পড়ে এক কোম্পানি কম্যান্ডার সহ অনেকে আহত হলে আক্রমন কিছুক্ষন স্থগিত ছিল। হিলিতে শুরু থেকেই ভারতীয় বাহিনী তিক্ত অভিজ্ঞতার স্বাদ গ্রহন করছিল। এখানে উল্লেক্ষ যে পূর্ব সেক্টরে পাকিস্তানের একমাত্র নিশান ই হায়দার জুটেছিল এখানেই।

লেঃ কঃ পইত্তার সিংহ এর ৬৯ আরমার্ড রেজিমেন্ট চারখাই এর দিকে মেঠো পথে অগ্রসর হয়। পাকিস্তানীরা তাদের অবস্থান পোক্ত করার জন্য যখন মাইন পোতার কাজ করছিল তখনি তাদের ট্যাঙ্ক থেকে তাদের উপর গোলাবর্ষণ শুরু হয়। এ সময় সৈন্যরা ভয়ে পলায়ন শুরু করে তারা তাদের ক্যাম্পে ব্রিগেড কমান্ডারের গাড়ী রেখে যায়। তারা যে পথে অগ্রসর হচ্ছিল সে পথে গাড়ী পরিবহন সম্ভব ছিল না কারন বর্ষা কালে এ রাস্তার অনেক স্থানেই ক্ষয়ে গিয়েছিল। ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটেলিয়ন রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করার পর তারা আবার অগ্রসর হয়। ভারতীয় বাহিনী দুই গ্রুপে দক্ষিন এবং পূর্বে অগ্রসর হলে দক্ষিনে ভাদুরিয়াতে পাক বাহিনীর ১৩ এফএফ(অং) এবং ৮ বালুচ(অং) এর প্রবল প্রতিরোধের মধ্যে স্থির হয়ে যায়। ব্রিগেড কমান্ডার তাজাম্মুল হিলি নিয়েই এত ব্যাস্ত ছিলেন ভারতীয় বাহিনী হিলি বাদ দিয়ে উত্তর দিয়ে ঢুকে পড়ে। তিনি তড়িৎ দুটি কোম্পানি ভাদুরিয়ায় পাঠিয়ে যুদ্ধ একদিন বিলম্বিত করাতে সক্ষম হন। পশ্চিম দিনাজপুর জেলা সদর বালুরঘাটে পাক গোলাবর্ষণে প্রচুর হতাহত হয়েছে। ভয়ে এলাকাবাসী শহর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় হাসপাতাল গুলোতে আহতদের চিকিৎসার বিঘ্ন ঘটছে।