You dont have javascript enabled! Please enable it!

শরণার্থী ত্রাণ কাজে ত্রিপুরা সরকারের ভূমিকা

আগরতলা, ৪ জুন, ১৯৭১- ত্রিপুরা বিধানসভার ৪ (চার) জন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গত ৩১ মে লে, গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সর্বশ্রী যতীন্দ্র কুমার মজুমদার, ক্ষিতীশ দাস, রাধিকা রঞ্জন গুপ্ত কমলজিৎ সিং এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন।
এই সাক্ষাৎকারে যে বিবরণ কোনাে কোনাে পত্রিকায় প্রকাশিত হইয়াছে তাহা বিভ্রান্তিকর।
প্রতিনিধি দল লে. গভর্নরের নিকট কোননা স্মারকলিপিই দাখিল করেন নাই। বস্তুতপক্ষে লে. গভর্নরের সঙ্গে আলাপ-আলােচনার পর তাহারা উপলব্ধি করিয়াছেন যে, যদিও ত্রিপুরা রাজ্যের আয়তন অতি ক্ষুদ্র এবং ইহার সম্পদ সীমিত তথাপি অপ্রতাশিতভাবে বিরাট সংখ্যক উদ্বাস্তু আগমনের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতির মােকাবিলা করিবার জন্য ত্রিপুরার সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করিতেছেন। তবে সমস্যাটি এত বিরাট যে ত্রাণ কাজে কোনাে ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে সন্তোষজনক হইতে পারে না। লে. গভর্নর তাহাদিগকে বুঝাইয়া বলিয়াছেন যে, সকল শরণার্থী তাহাদের বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে আছেন তাহাদিগকে রেশন দানের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং কেন্দ্রীয় পুনর্বাসন মন্ত্রীর নিকট তুলিয়া ধরিয়াছেন। ভারত সরকারের সঙ্গে লে, গভর্নর নিজেও এ বিষয়ে পত্রালাপ করিতেছেন।
ভারত সরকারের অনুমতি ছাড়া ত্রিপুরা সরকার সাহায্য সম্প্রসারণ করিতে পারে না। অনুসন্ধানে জানা গিয়াছে যে, আসাম সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে বসবাসকারী শরণার্থীদের রেশন দিতেছেন না।
শরণার্থীদের কাপড়-চোপড় এবং বাসন-পত্র সরবরাহের সম্বন্ধেও ভারত সরকারের সঙ্গে পত্রালাপ চলিতেছে। বর্তমান নির্দেশ অনুযায়ী পুনর্বাসন বিভাগের বাজেট হইতে কাপড়-চোপড় ও বাসন-পত্র সরবরাহের জন্য ব্যয় নির্বাহ করা চলে না। স্বেচ্ছাসেবী অথবা দানশীল প্রতিষ্ঠানগুলােই এই সমস্ত জিনিস দিতে পারেন। ত্রিপুরা বাংলাদেশ নারী সমিতি শরণার্থী শিবিরে উদ্বাস্তুদের মধ্যে কাপড়-চোপড় বণ্টন করিতেছেন। এই সমস্ত কাপড় তাহারা বাড়ি বাড়ি ঘুরিয়া সংগ্রহ করিয়াছেন অথবা নিজেদের সংগৃহীত অর্থ ভাণ্ডার হইতে ক্রয় করিয়াছেন।
শরণার্থী শিবিরগুলােতে ড্রাই রেশন দেওয়ার ব্যাপারে প্রতিনিধি দলকে জানানাে হইয়াছে যে, ড্রাই রেশন বণ্টনের ব্যাপারে শিবিরে ড্রাই রেশন দেওয়া হইতেছে। ভারত সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ডােল হিসাবে নগদ অর্থ প্রদান করা চলে না।
ভারতীয় রেড ক্রস, রাষ্ট্রসঙ্গের আন্তর্জাতিক শিশু ত্রাণ ভাণ্ডার (ইউনিসেফ) পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সহায়ক সমিতির নিকট হইতে কিছু গুড়াদুধ এবং ওষুধ পাওয়া গিয়াছে। এগুলাে শরণার্থী শিবিরে ব্যবহৃত হইতেছে।

সূত্র: ত্রিপুরা
৯ জুন, ১৯৭১
২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৩৭৮

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!