You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.03 | কামালপুর যুদ্ধ, লে. জেনারেল নিয়াজী ও দুই মন্ত্রীর ময়মনসিংহ সফর - সংগ্রামের নোটবুক

০৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ কামালপুর যুদ্ধ, লে. জেনারেল নিয়াজী ও দুই মন্ত্রীর ময়মনসিংহ সফর

রয়টার সাংবাদিক জুলিয়াস কের এ যুদ্ধ কভার করছেন তিনি বলেছেন কামাল পুরের ৫ মাইল দূরে কামানের গোলাবর্ষণ হচ্ছে। এখানে একটি বড় যুদ্ধ অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন আমি হেলিকপ্টার থেকে এ গোলাবর্ষণ দেখেছি। কামালপুরের অফিসারদের সাথে কথা বলে তিনি জেনেছেন টানা ৩ দিন ধরে ভারতীয় ১৩ ব্যাটেলিয়ন হোয়েইতজার এবং মর্টারের ৪০০০ গোলাবর্ষণ করেছে। ময়মন সিংহ কম্যান্ডার ব্রিগেডিয়ার কাদির তাকে বলেছেন গত শনিবার থেকে যুদ্ধে এখানে ১০০০ ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। এর আগে রোববার তারা সীমান্তের ৪ মাইল ভিতরে ঢুকেছিল তাদের মঙ্গলবার রাতেই বিতারন করা হয়েছে।
লে. জেনারেল নিয়াজী মময়নসিংহ জেলা শান্তিকমিটি আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত থেকে ভাষণ দেন। সভায় তিনি বলেন ভারত সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান ঘিরে ১০ ডিভিশন সৈন্য মোতায়েন করেছে। জনগনের দেশপ্রেম, আস্থা, মনোবল, আত্মদানের প্রস্তুতি শত্রুর সংখ্যা ও উপকরনের প্রাধান্যকে ধ্বংস করে দিবে। তিনি জনগনকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন ভারত তার অর্থনৈতিক চাহিদা পুরন এবং সম্প্রসারনবাদী চাহিদা চরিতার্থ করার উদ্দেশে এই প্রদেশকে গ্রাস করার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। নিয়াজির সফর উপলক্ষে সার্কিট হাউজে জাতীয় পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয় এবং ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্গ চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
জনসভা শেষে নিয়াজী প্রবল গোলাবর্ষণের মধ্যেই রয়টারের সাংবাদিক জুলিয়াস কের সহ কামালপুরে যান। সেখানে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ৬ বার ভারতীয় আক্রমন প্রতিহত করায় এবং সাফল্যে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
জনসভায় আরও ভাষণ দেন অর্থমন্ত্রী আবুল কাশেম এবং পূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন। পূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন আমি ময়মন সিংহের সন্তান এবং ময়মনসিংহবাসী সব সময় সেনাবাহিনীর পিছনে আছে এবং থাকবে। তিনি বলেন একজন ময়মন সিংহ বাসী জীবিত থাকতে ভারতীয় বাহিনী ময়মনসিংহের এক ইঞ্চি পবিত্র মাটি দখল করতে পারবে না। তিনি জনগণকে ভারতীয় আগ্রাসন মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার জন্য এবং রাজাকারে যোগদানের আহবান জানান।
নোটঃ পরদিন কামালপুরের পতন হয়।