You dont have javascript enabled! Please enable it!

৩রা ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ পিআইএ বিমান ছিনতাই প্রচেষ্টা

প্যারিসের অর্লি বিমানবন্দরে জাঁ ক্যুয়ে নামে এক আলজেরিয়ান বংশদ্ভুত ফরাসি যুবক পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের ৭১২ নং ফ্লাইটের ৭২০বি বোয়িংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেন। জাঁ ক্যুয়ে পেশায় একজন ইলেক্ট্রনিক্স মেকানিক্স। জাঁ ক্যুয়ের সাথে একটি পিস্তল ছিল এবং তা দিয়ে তিনি পুলিশের প্রতি এক রাউন্ড গুলিও করেছিলেন। তার সাথে থাকা ব্যাগে কিছু ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রাংশ ও তার ছিল যা দিয়ে সে বোমা বলে ভয় দেখাচ্ছিল। বিমানটি রানওয়ে গিয়ে উড়ার ৩০০ মিটার যাওয়ার পর থেমে যায়। এর পর সংবাদ রটে এক সশস্র বেক্তি বিমান ছিনতাই এর প্রচেষ্টায় আছেন। এর পরপর বিমানের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং আধাঘণ্টা বিমানটি নিষ্প্রদীপ থাকে। তখন বিমান বন্দর কতৃপক্ষ কাহাকেও বিমানের কাছে যেতে দেয়নি। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের সেই বিমানে ২৭ জন আরোহী ছিল। জাঁ ক্যুয়ের দাবী অবিলম্বে ২০ টন মেডিকেল সামগ্রী ও রিলিফ প্লেনটিতে তোলা না হলে বিমানটি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া হবে। আর ২০ টন মেডিকেল সামগ্রী ও রিলিফ এর গন্তব্য হবে পূর্ব পাকিস্তানের শরণার্থীদের জন্য।

ঘটনাটা ঘটেছে যখন পশ্চিম জার্মানির ভাইস চ্যান্সেলর উইলি ব্র্যান্ডট ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট পম্পেদ্যুর সঙ্গে বৈঠক করতে সফরে এসে পৌছেছেন মাত্র। ফরাসী সরকার ক্যুয়ের দাবী মেনে বিমানে রিলিফ সামগ্রী সরবরাহ করেন। ৪ পুলিশ রেডক্রস ও ২ পুলিশ বিমানবন্দর কর্মীদের ছদ্মবেশে বিমানে আরোহণ করে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার কালে তিনি মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হন। তার ৯ এম এম পিস্তলের গুলীতে এক পুলিশ হাতে আঘাত প্রাপ্ত হয়। দুটি গুলি অপর দুই পুলিশের জ্যাকেটে আঘাত হানে যাতে শরীরের কোন আঘাত হয়নি। শেষ হয় প্রায় পাঁচ ঘন্টার এই ছিনতাই নাটক অধ্যায়। ওষুধ এবং রিলিফ সামগ্রী অবশ্য ভিন্ন বিমানে পূর্ব পাকিস্তানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ফ্রান্স এবং সেটার দায়িত্ব দেওয়া হয় ফ্রান্স রেডক্রস ও মাল্টার এক এনজিও অদ্রে দা মাল্তে (Ordere de Malte) নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে। গ্রেফতারের পর জাঁ ক্যুয়ে জানান পূর্ব পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের শরণার্থীদের কাজে তিনি বিমানটি রিকুইজিশন করেছিলেন।

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!