৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ পশ্চিম পাকিস্তান ঘটনাবলী
ইউসিপির সভা
পশ্চিম পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে সম্মিলিত কোয়ালিশন পার্টির ২ টি সভা অনুষ্ঠিত হয়। একটি সভা হয় নুরুল আমীনের সভাপতিত্তে পূর্ব পাকিস্তান ভবনে অপর সভাটি হয় নসরুল্লাহ খানের সভাপতিত্তে স্থানীয় এক হোটেলে। সভা শেষে নূরুল আমিন জানান, সভায় পূর্ব-পাকিস্তানে ভারতীয় হামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনা শেষে গৃহীত এক প্রস্তাবে সশস্র বাহিনী ও জনগনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। সভায় জনগনের এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য এর উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। সভা অবিলম্বে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন ডাকার পক্ষে মত প্রকাশ করে। প্রধানমন্ত্রীত্ব পদ গ্রহনের গুজব সম্পর্কে তিনি বলেন তিনি উহা জানেন না। পিপিপির কেন্দ্রীয় কমিটির গ্রিহিত প্রস্তাব সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন তা আমি দেখেছি তবে এখন অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের সময় নয় বলে জানান। পিডিপির বৈঠক হলেও বৈঠকে কাইউম মুসলিম লীগের খান আব্দুল কাইউম, কাউন্সিল মুসলিম লীগের মিয়া মমতাজ দওলতানা, কনভেনশন মুসলিম লীগের মালিক কাশিম, জমিয়তের মুফতি মাহমুদ, জামাতের মিয়া তফায়েল আহমেদ, মারকাজি জমিয়তের মওলানা শাহ আহমেদ নূরানি এবং জমিয়ত পশ্চিম পাকিস্তানের এহতেশামুল হক থানভি উপস্থিত ছিলেন।
জুলফিকার আলী ভুটটো
সংযুক্ত কোয়ালিশন পার্টির নুরুল আমীনকে প্রধানমন্ত্রীর পদে জুলফিকার আলী ভুটটো মেনে নিয়েছেন একই সাথে তিনি পররাষ্ট্র দপ্তর সহ উপ প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহনে রাজী হয়েছেন। রাওয়ালপিন্ডির লিয়াকত গার্ডেনে এক ভাষণে ভুটটো উক্ত তথ্য প্রকাশ করেন। তিনি বলেন তিনি আশা করেন আমরা উভয়ে স্বাধীন ক্ষমতা ভোগ করব। এ ব্যাপারে তিনি ইয়াহিয়াকে পত্র দিয়াছেন। তিনি জানান ইয়াহিয়ার কাছে এটা তার শেষ চিঠি। তিনি তা মানলে আগামীকাল সরকারে যোগ দিবেন। ভুটটো বলেছেন ইয়াহিয়ার কাছে এটি তার শেষ চিঠি।
জমিয়তে পিপিপি ঐক্য
জমিয়তে উলামা ইসলাম ইউসিপি বৈঠকে নিয়মিত থাকলেও ইউসিপিতে যোগ দেয়নি। এদিকে ভূট্টো জাতীয় সরকারের উপ প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন শুনে জমিয়ত নেতা ভূট্টো ও পিপিপির সাথে রাওয়ালপিন্ডিতে বৈঠকে মিলিত হয়ে পিপিপিকে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভূট্টোর সাথে বৈঠকের সময় দলের সভাপতি গোলাম গাউস হাজারভি, তথ্য সম্পাদক আব্দুল হাকিম, আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজি সলিম ও উপস্থিত ছিলেন।
এখন পর্যন্ত জাতীয় পরিষদের যে অবস্থা আছে তাতে পিপিপি সংখ্যাগরিষ্ঠ দল। কর্মসূচীর দিক থেকে জমিয়ত পিপিপি কাছাকাছি।
ভারতীয় আক্রমন
সকালে ভারতীয় জঙ্গি বিমান ইসলামাবাদ বিমান বন্দরে হামলা চালায়। সেখানে কয়েকজন বেসামরিক লোক হতাহত হয়েছে তবে রানওয়ের কোন ক্ষতি হয়নি।