You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.02 | ভারতের সাথে সীমান্ত সংঘর্ষে ১ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত  ৩০৫ জন বেসামরিক জনগন নিহত হয়েছে - সংগ্রামের নোটবুক

২ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ যুদ্ধ

পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র রাওয়ালপিন্ডিতে বলেন ভারতের সাথে সীমান্ত সংঘর্ষে ১ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত  ৩০৫ জন বেসামরিক জনগন নিহত হয়েছে।

আহত হয়েছেন ৫১৩ জন। ২১ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মারা গিয়েছে ৩১৪ জন।

কুড়িগ্রাম

পাক মুখপাত্র বলেন কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারিতে ভারতীয় বাহিনী পাক বাহিনীর উপর হামলা করেছে। ভুরুঙ্গামারির পতন হয় আর ৩ দিন আগে। ধরলা নদীর উত্তর পাড় পর্যন্ত মিত্র বাহিনীর দখল বজায় আছে।

দিনাজপুর ফ্রন্ট

দিনাজপুরের দক্ষিনে আত্রাই নদীর ২ পাড়ে ১ ব্যাটেলিয়ন করে অবস্থান করে ভারতীয় ১৬৫ ব্রিগেড আক্রমন শুরু করেছে। দু পাড়েই রয়েছে এক স্কোয়াড্রন করে ট্যাঙ্ক। সংঘর্ষ এখনও চলছে। পাকবাহিনী তাদের অগ্রাভিযান আটকে দিয়েছে।

সিলেট

গোয়াইন ঘাটে পাক অবস্থানের উপর ভারতীয় বাহিনী হামলা করে যাচ্ছে । এখানে ২ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। সিদ্দিক সালিক তার বইয়ে লিখেছেন এদিন সিলেট জেলার সকল সীমান্ত ভারতীয় দের দখলে চলে যায়।

শমশের নগর ফ্রন্ট

শমশের নগর দখলের জন্য যৌথ বাহিনীর পরিকল্পনায় একের পর এক হামলায় পাকিস্তানি সেনারা শমশেরনগর ছেড়ে মুন্সীবাজার হয়ে জেলা সদর (তৎকালীন মহকুমা) মৌলভীবাজারের দিকে সরে যেতে থাকে। রাধানগর ও মুন্সীবাজারের মাঝামাঝি স্থানে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর বড় ধরনের যুদ্ধ শেষে ২ ডিসেম্বর শমশেরনগর পাক হানাদার মুক্ত হয়। সেখানে একজন সেঃলেঃ সহ অনেক পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়েছে। পাক মুখপাত্র বলেছেন শমশের নগর যুদ্ধে ১২ ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে এরা ৪ কুমাউনের সৈন্য। মুখপাত্র শমশের নগর পতনের কথা স্বীকার না করলেও তার কথায় বুঝা যায় তার পতন হয়েছে তিনি বলেন বিমানবন্দরটি সীমান্তের মাত্র ২ মাইল ভিতরে তাই সেখানে অনবরত গোলাবর্ষণ হচ্ছে।

আখাউরা ফ্রন্টে যুদ্ধ

সিঙ্গারবিল রেলওয়ে স্টেশন মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এলেও পাকবাহিনী তাদের বিপর্যস্ত অবস্থা কাটিয়ে উঠে আর্টিলারির সাহায্য নিয়ে মুক্তিবাহিনীর ওপর পাল্টা আক্রমণ করে। এ আক্রমনে মুক্তি বাহিনীর ২ জন হাবিলদার ২ জন নায়েক ২ জন সিপাহী নিহত হয়। এই আক্রমণে মুক্তিবাহিনী পিছু সরে আসতে বাধ্য হয়। পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র জানান কাছাকাছি দক্ষিনে ভারতের ৩১১ ব্রিগেড তাদের আক্রমন জোরদার করে। ৬১ ব্রিগেডের ৭ রাজপুতানা ২ জাঠ ১২ কুমাউন সিঙ্গার বিল দিয়ে আক্রমন করে। এই আক্রমনে ৫ম সাঁজোয়া ডিভিশন পিটি -৭৬ ট্যাঙ্ক ব্যাবহার করে।

কুমিল্লা
কুমিল্লার উত্তরে এবং দক্ষিনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর তহল বৃদ্ধি পেয়েছে। এরূপ একটি টহল দলের সাথে পাক বাহিনীর সংঘর্ষে ৫ ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন। কয়েকদিন যাবত এখানে নতুন একটি ডিভিশন মোতায়েনের কাজ চলছে।

ময়মনসিংহ

ময়মন সিংহের হালুয়া ঘাটে ভারতীয় বাহিনীর সাথে পাক বাহিনীর সংঘর্ষে ৪ ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়েছে। গতকাল বিপুল সংখ্যক ভারতীয় সৈন্য নিহত হওয়ায় এ সেক্টরে ভারত আরও সৈন্য মোতায়েন করেছে এবং নতুন ফ্রন্টে যুদ্ধ শুরু করছে।

যশোর
যশোরের ৪টি স্থানে এক বা দুই কোম্পানি শক্তি নিয়ে ভারতীয় বাহিনী যশোরের দিকে অগ্রসরের চেষ্টা করে। এলাকা গুলি হল বেনাপোল, কাকডাঙ্গা, কাটাণ্ড্‌, অমলপুর।
উত্তরে জীবননগর দিয়েও ভারতীয় বাহিনী খলিশপুরে পাক অবস্থানে হামলা চালায়। সেখানে আরও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। নতুন বাহিনী দরশনার দিকে অগ্রশর হচ্ছে। পাকবাহিনী তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।