You dont have javascript enabled! Please enable it!

তাজউদ্দীন আহমদ মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার পর জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত রিপাের্ট

দৈনিক বাংলা, ২৭ অক্টোবর ১৯৭৪

মন্ত্রিসভা থেকে অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীনের বিদায় ও অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন এবং তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। এনা, বাসস ও বিপিআই পরিবেশিত এই খবরে বলা হয়, শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। সরকারীভাবে একথা ঘােষণা করা হয়। রাষ্ট্রপতি জনাব মুহম্মদউল্লাহ জনাব তাজউদ্দীনের পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ করেছেন। এনার খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই জনাব তাজউদ্দীনকে পদত্যাগের অনুরােধ জানানাের সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করেন বলে জানা গেছে।

দৈনিক সংবাদ, ২৭ অক্টোবর ১৯৭৪

জাতির স্বার্থে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তাজউদ্দীনের পদত্যাগ ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ গতকাল (শনিবার) মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন। রাষ্ট্রপতি তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। সরকারী ঘােষণার বরাত দিয়ে বাসস এ খবর দিয়েছে। এনা পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে।

দৈনিক বাংলার বাণী, ২৭ অক্টোবর ১৯৭৪

মন্ত্রিসভা থেকে তাজউদ্দীন বিদায় ও স্টাফ রিপাের্টার

মন্ত্রিসভা থেকে তাজউদ্দীন বিদায়। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ গতকাল (শনিবার) দুপুরে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। রাষ্ট্রপতি জনাব মুহম্মদউল্লাহ তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্বার্থের খাতিরে অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠানাের আগে মন্ত্রিসভার কয়েকজন সিনিয়র সদস্যের সাথে মিলিত হন। জানা গেছে, জনাব তাজউদ্দীন পদত্যাগ করার পর সরাসরি তার হেয়ার রােডস্থ সরকারী বাসভবনে চলে যান। বিকেলে প্রাক্তন মন্ত্রী জনাব শামসুল হক ও মােল্লা জালালুদ্দিন আহমদসহ অনেকেই তার সাথে দেখা করেন। স্মরণযােগ্য যে, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানি বন্দি শিবির থেকে মুক্তি পেয়ে বাংলাদেশের মাটিতে ফিরে আসার পর দেশে সমুদয় গণতন্ত্র পত্তন এবং তার মন্ত্রিসভায় জনাব তাজউদ্দীন অর্থ ও পরিকল্পনা দফতরের দায়িত্ব লাভ করেন। কিন্তু পরে তাকে পরিকল্পনা দফতর থেকে ভারমুক্ত করা হয়। ১৯৭৩ সালের ১০ মার্চ গঠিত মন্ত্রিসভায় জনাব তাজউদ্দীনকে অর্থ ও পাট দফতরের দায়িত্ব দেয়া হয় কিন্তু ডিসেম্বরে পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তার কাছ  থেকে নিয়ে নেয়া হয়। চলতি বছরের জুলাই মাসে অর্থ ছাড়া তাকে মৎস্য ও পশুপালন দফতরের কর্তব্যভার দেয়া হয়।

দৈনিক ইত্তেফাক, ২৭ অক্টোবর ১৯৭৪

অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের পদত্যাগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান পদত্যাগ করিতে বলায় অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ গতকাল (শনিবার) মন্ত্রিসভা হইতে পদত্যাগ করিয়াছেন। অর্থমন্ত্রীর এই পদত্যাগের কথা গতকাল ঢাকায় সরকারীভাবে ঘােষণা করা হয়। বাসস, এনা, বিপিআই এই খবর দিয়া জানান যে, রাষ্ট্রপতি জনাব মুহম্মদউল্লাহ জনাব তাজউদ্দীন আহমদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করিয়াছেন। পদত্যাগের খবর প্রচারিত হওয়ার পর জনাব তাজউদ্দীন আহমদের সহিত তাঁহার বাসভবনে যােগাযােগ করা হইলে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশেই তিনি পদত্যাগ করিয়াছেন। জাতির বৃহত্তর স্বার্থের খাতিরে এ ব্যাপারে তিনি কোন বিতর্কের সৃষ্টি করিতে চাহেন না। তাজউদ্দীন আহমদ বেলা ১০টা ২২ মিনিটে পদত্যাগপত্র পেশ করেন। সকাল ১০টায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠক বাতিল করিয়া দেওয়া হয়। বেলা ১১টায় মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকের অব্যবহিত পর প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদকে পদত্যাগ করিতে নির্দেশ দিলে তিনি। পদত্যাগপত্র পেশ করেন।

জনাব তাজউদ্দীন আহমদ স্বাধীনতা সংগ্রামকালে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর পাকিস্তানি জিন্দানখানা হইতে মুক্তি লাভ ও স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পূর্ব পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করিলে জনাব তাজউদ্দীন আহমদকে অর্থ। ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর পদ দেওয়া হয়। পদত্যাগের পূর্ব পর্যন্ত তিনি অর্থ, বন, মৎস্য উন্নয়ন এবং পশুপালন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করিতেছিলেন। দৈনিক

পূর্বদেশঃ ২৭ অক্টোবর ১৯৭৪ রবিবার

তাজউদ্দীন আহমদের পদত্যাগ : স্টাফ রিপাের্টার : প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে অর্থ দফতরের মন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদ গতকাল শনিবার পদত্যাগ করেছেন। সরকারীভাবে এ কথা ঘােষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি জনাব মুহম্মদউল্লাহ গতকাল শনিবার জনাব আহমদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। দৈনিক ইত্তেফাক ঃ ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৮১ বাংলা। প্রেস গ্যালারি হইতে ৪ হাসান শাহরিয়ার ও শীত এখনও জাকিয়া বসে নাই বটে, কিন্তু জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশন ঠিকই বসিয়াছে। তবে এই অধিবেশন আপাতত স্বল্পকালীন। মেয়াদ বড়জোর ৪/৫ দিন। তারপর এই অধিবেশন মুলতবি হইয়া যাইবে। জানুয়ারি শীতের মাস। পৌষ এবং মাঘের গ্রন্থি জানুয়ারি। তখন আবার শীতকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হইবে। এই অধিবেশনের একটি নতুন ঘটনা হইল সাবেক অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দীন আহমদের পেছনের সারিতে আসন গ্রহণ। বাংলাদেশের সংসদের পূর্ববর্তী সবকয়টি অধিবেশনে জনাব তাজউদ্দীনের জন্য যে আসনটি সংরক্ষিত ছিল। তিনি সে আসনে বসেন নাই। তাজউদ্দীন সােজা আসিয়া দ্বিতীয় সারিতে মনােরঞ্জন ধরের আসনে উপবেশন করেন। জনাব সেরনিয়াবাত আসিয়া প্রথমে তাজউদ্দীন সাহেবের আসনে বসেন, পরে জনাব মনসুর আলি সংসদ কক্ষে প্রবেশ করিলে তিনি সেই আসনটি ছাড়িয়া দেন। জনাব মনসুর আলি তাজউদ্দীন সাহেবের আসনে বসেন। আর মি. মনােরঞ্জন ধর নতুন আসন গ্রহণ করেন।

সূত্র : আমার ছোটবেলা ১৯৭১ এবং বাবা তাজউদ্দীন আহমেদ – সিমিন হোসেন রিমি

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!