০১ ডিসেম্বর ১৯৭১ঃ সিলেটে নিয়াজী
লে. জেনারেল নিয়াজী এদিন সিলেট রণাঙ্গন সফর করেন। সেখানে পাকিস্তান সমর্থক দের একজনসভায় নিয়াজী ভাষণ দেন। নিয়াজী বলেন সিলেটের জনগন ৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার জন্য গণভোটে ভোট দিয়েছিল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য নহে। তাই তারা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে পাকিস্তান রক্ষা করবে। তিনি বলেন যে কোন মূল্য পাকিস্তান রক্ষায় যখন সেনাবাহিনী প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তখন কোন এলাকা থেকে পশ্চাদপসরণ প্রশ্নই উঠে না। সংখ্যাধিক্য দিয়ে আমাদের পরাজিত করা যাবে না আমরা সব সময় সংখ্যায় কম থেকেই জয়লাভ করেছি। সভায় নিয়াজী স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের ‘বিভ্রান্ত’ আখ্যা দিয়ে বলে যে, ‘এখনো ফিরে আসার সময় আছে, এরপর আর ক্ষমা করা হবে না, কঠোর হস্তে দমন করা হবে।’ নিয়াজী রাজাকারদের বলিষ্ঠ ভুমিকার জন্য তাদের প্রশংসা করেন। নিয়াজী অগ্রবর্তী এলাকা পরিদর্শন করেন সেখানে তিনি অফিসার জওয়ানদের সাথে কথা বলেন। তার সফরের সময় থেমে থেমে গোলাবর্ষণ হচ্ছিল। সভায় প্রাক্তন মন্ত্রী আজমল চৌধুরী সিলেটবাসীর পক্ষ থেকে ঘোষণা করে্ন, ‘আমরা সিলেটবাসীরা পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় হামলার বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাবো।’পাকিস্তানের সমস্যা আমরা নিজেরাই সমাধান করতে পারি। আমরা শান্তি চাই তবে আমাদের মর্যাদা সন্মান ও স্বাধীনতার বিনিময়ে নয়। তিনি সীমান্ত এলাকায় বিদ্রোহীদের অত্যাচারের তীব্র নিন্দা করেন। সভা শেষে পাকিস্তানের সংহতি, সার্বভৌমত্ব ও সেনাবাহিনীর কামিয়াবের জন্য মোনাজাত করা হয়।
নোটঃ মুক্তিযুদ্ধের এ পর্যায়ে অনেক রাজাকার দল ত্যাগ করেছিলেন। মাত্র ৬ দিন পরেই সাবেক মন্ত্রী আজমল চৌধুরী মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় নিহত হন। মুক্তিযুদ্ধে নিহত পাক দালালদের মধ্যে তিনি শীর্ষ নেতা।