You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.21 | সব শরণার্থীদের ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে: রাম - সংগ্রামের নোটবুক

সব শরণার্থীদের ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে: রাম

দৈনিক হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড, ২১ মে ১৯৭১

আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ শরণার্থী শিবিরগুলোতে সফর শেষে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, জনাব জগজীবন রাম, রোববার বিকেলে বনগাঁর কাছে পেট্রাপোল এ সাংবাদিকদের বলেন বিশ্ববাসীকে “নজিরবিহীনভাবে’’ বাংলাদেশ থেকে ভারতে শরনার্থি প্রবেশের ব্যাপারে কি ব্যাবস্থা নেয়া যায় সেটা বের করে এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।

 

তিনি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি পাকিস্তান সরকারের কাজকে “বর্বরোচিত” হিসাবে মন্তব্য করে বলেন এটি “সমগ্র মানব ইতিহাসে একটি বড় কলঙ্কজনক ঘটনা”।

 

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে পূর্ববাংলায় অমানবিক কর্মকান্ড থামানোর জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রতি অনুরোধ করার ব্যাপারে বিশ্ববাসীর শরণাপন্ন হয়েছি।

 

এরপরও তিনি আরো বলেন, যদি পাকিস্তান “তার বর্বর নীতি চালিয়ে যায় যার দরুন লক্ষ লক্ষ নারী, পুরুষ ও শিশুরা নিরাপত্তার জন্য ভারতের ঢুকতে থাকে তাহলে বিশ্ববাসীকে এই সমস্যার সমাধান করতে অন্যান্য পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

দিল্লি যাওয়ার আগে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দমদম বিমানবন্দরে বলেন সরকার শরনার্থিদের ঠেকানোর জন্য সকল ব্যাবস্থা নিয়েছে। তিনি একজন সাংবাদিকএর সাথে একমত প্রকাশ করে বলেন যে অনুপ্রবেশকারী দের জন্য এই দেশে একটি সামাজিক সমস্যা তৈরি হবে এবং একটি অর্থনৈতিক বোঝা সৃষ্টি হবে।

 

উদ্বাস্তু দের অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে, জনাব রাম বলেন, তিনি এর আগে কেন্দ্রীয় পুনর্বাসন মন্ত্রী, জনাব খাদিখার এবং মুখ্যমন্ত্রী জনাব অজয় মুখার্জির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু “খুব শীঘ্রই” ফলাফল নাও পাওয়া যেতে পারে।

 

হাজার হাজার শরনার্থিদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ভারত পাকিস্তানকে বার বার বলেছে সেখানে সহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য যাতে তাদের জনগণ ফেরত যেতে পারে।

 

জনাব রাম বলেন, “আমি আমার নিজের চোখ দিয়ে আপনাদের দুঃখজনক অবস্থা দেখতে এসেছি এবং এই কষ্ট প্রশমিত করার জন্য নতুন করে ভালো কিছু করা যায় কিনা দেখছি। ” প্রায় ৩ টার দিকে জনাব রাম হেলিকপ্টার করে দমদম বিমানবন্দর আসেন। তার ১৫ মিনিট পর একটি আই এ এফ থেকে দিল্লীর উদ্যেশ্যে রওনা করেন।

 

দুপুরে রাজভবন, কলকাতা, এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, বলেন বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ শরনার্থিদের প্রবেশ “আমাদের উপর একটি বড় বোঝা”। তিনি বলেন, তাদের সংখ্যা আমাদের আয়োজনের চেয়ে অনেক বেশী। অনেকে খোলা আকাশের নিচে বাস করছেন।

 

পাকিস্তানি সেনারা রোববার জনাব জগজিবন রাম, পেট্রাপোল এ আগমনের পূর্বে ভারতের ভিতরে শেলিং করে।

 

আজ সকালে একটি ৮১ মিঃ মিঃ মর্টার শেল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ঘাঁটির পাসে পরে। সেখানে কেউ হতাহত হয়নি। শেলটি যশোর রোডের ডান দিকে পরে। বিএসএফ সেখানে তাদের অবস্থান নেয়। কিন্তু গুলি করেনি।

 

বৃহস্পতিবার তিন জন বিএসএফ সদস্য পাকিস্তানি গোলাবর্ষণের কারণে আহত হয়। তারা হাসপাতালে রয়েছেন।

 

শনিবার রাতে পাকিস্তানি সেনারা সাদিপুর গ্রামে ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি আগুন ধরিয়ে দেয়। কিছু বাসিন্দা যারা সেখান থেকে ভারতে পালিয়ে যায়নি তাদের হত্যা করা হয়।