You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.10 | কেন মুক্তিযুদ্ধে বাঙলাদেশের জয় অনিবার্য? | যুগান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

কেন মুক্তিযুদ্ধে বাঙলাদেশের জয় অনিবার্য?

গত কিছুকাল যাবৎ বাংলাদেশের রণক্ষেত্র থেকে তেমন কোন উত্তেজনাপ্রদ রােমাঞ্চকর খবর পাওয়া যাইতেছে না। ফলে জনসাধারণের একাংশ স্বাধীন বাঙলার সংগ্রাম সম্পর্কে সংশয় জাগা অস্বাভাবিক নয়। বিশেষতঃ ভারতবর্ষের প্রাক্তন প্রধান সেনাধ্যক্ষ খ্যাতনামা জেনারেল জে এন চৌধুরী পূর্ব বাঙলা জুড়িয়া। পাকিস্তানি মডার্ণ আর্মি কর্তৃক সুপরিকল্পিত সামরিক অভিযানের ফলাফল সম্পর্কে পত্রান্তরে যে প্রবন্ধ লিখিয়াছেন, তাতে বাহ্যতঃ উৎসাহ বােধ করিবার কারণ নাই তবু তিনি একথা লিখিত বাধ্য হইয়াছেন যে, এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হইবে। সামরিক বিষয়ে সুপন্ডিত আর একজন খ্যাতনামা পন্ডিত শ্ৰীনীরদ চৌধুরী জেনারেল চৌধুরীর চেয়েও হতাশার সুরে ত্রাসের চিত্র আঁকিয়েছেন এবং বর্বর নরঘাতক পর্ব এড়াইবার জন্য পাকিস্তানি আর্মিকে বৃথা বাধাদান থেকে বিরত থাকিবার জন্য উপদেশ দিয়াছেন। জেনারেল চৌধুরী ‘প্রােফেসন্যাল বা সামরিক বৃত্তিধারী সৈনিক। সুতরাং আধুনিকতম ভয়াবহ অন্ত্র এবং রণবিজ্ঞানের চিরায়ত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির দ্বারা তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণপর্বকে বিচার করিয়েছেন এবং একজন বৃত্তিধারী সৈনিক হিসাবে পূর্ববঙ্গে পাক সৈন্যের অভিযান সম্পর্কে সিদ্ধান্তে পৌঁছিয়েছেন। শ্রীনীরদ চৌধুরীও একজন রক্ষণশীল চিন্তাবিদ—পূর্ব বাঙলার পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনীর নৃশংস আক্রমণকে বিদ্যার দ্বারা বিচার করিয়েছেন। সুতরাং উভয় চৌধুরীর পান্ডিত্যেই জনগণের পক্ষে যে হতাশাব্যঞ্জক হইবে, তাতে কোন সন্দেহ নাই। কারণ, একথা গােপন করিয়া লাভ নাই যে, শেখ মুজিবর রহমান, আওয়ামী লীগ কিম্বা লীগের সমর্থক জনসাধারণ কেউ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর এমন বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ আক্রমণের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না এবং সামরিকভাবে প্রতিরােধ করিবার কোন রণনৈতিক পরিকল্পনা ছিল না। প্রকৃতপক্ষে তাদের হাতে সৈন্য, অস্ত্র এবং উপযুক্ত গােলাবারুদ ছিল না। সুতরাং এটা সাধারণ বৃদ্ধির কথা যে, এই অসম যুদ্ধের ফলাফল বিষম হইতে বাধ্য। প্রকৃতপক্ষে এটা কোন যুদ্ধ নয়। এটা ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্রধারী একটি আধুনিক সৈন্যবাহিনীর সর্বাত্মক আক্রমণ নিরস্ত্র জনগণেল বিরুদ্ধে। অতএব নিছক হত্যাকান্ড ও ব্যাপক ধ্বংসলীলা। ঘটিবেই। কিন্তু ইয়াহিয়া খানের ফ্যাসিস্ট বাহিনী কেবল হত্যাকান্ডের মধ্যেই তাদের নৃশংসতা সীমাবদ্ধ রাখে নাই। তারা টেরর বা ত্রাস সৃষ্টির দ্বারা সমগ্র জনসাধারণের মেরুদণ্ড ও নৈতিক বল ভঙ্গিয়া দিতে চাহিয়েছে। এই দিক দিয়া তারা যে নিতান্তই ব্যর্থ হইয়াছে, এমন কথাও আমরা বলি না এবং জেনারেল চৌধুরী বা শ্ৰীনীরদ চৌধুরীর মত বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের মতামও আমরা উড়াইয়া দিতেছি না। কিন্তু তাঁদের অভিমত আমরা চূড়ান্ত বলিয়াও মানিয়া লইতে পারতেছি না। কারণ, এই সমস্ত সেকেলে রক্ষণশীল মত মানিয়া লইতে স্বীকার করিতে হইবে যে, পৃথিবীতে কোন নিরস্ত্র জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম করিয়া কোন লাভ নাই। তথাপি দেখা যাইতেছে যে, আমাদের চোখের সামনেই নিরস্ত্র ভারতবাদী স্বাধীনতা লাভ করিয়াছে। কেবল ভারতবর্ষ নয়, আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের প্রায় সমস্ত পরাধীন, দুর্বল ও নিরস্ত্র জাতিসমূহ বৃটিশ, ফরাসী, বেলজিয়াম, ওলন্দাজ প্রভৃতি ঔপনিবেশিক শক্তিগুলির প্রচণ্ড সামরিক বলকে অতিক্রম করিয়াই জাতীয় স্বাধীনতা অর্জন করিয়াছে। প্রত্যেকটি সাম্রাজ্যবাদী শক্তিই স্বাধীনতাকামী দেশগুলিতে টেরর বা ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা করিয়াছে। আমাদের ভারতবর্ষেও ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়লাবাগের নৃশংস হত্যাকান্ডের দ্বারা বৃটিশ সকার পাঞ্জাবে টেরর সৃষ্টি করিতে চাহিয়াছিল, কিন্তু কে না জানে সেই জালিয়ানওয়ালাবাগ থেকেই ভারতবর্ষে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের পতনের আরম্ভ। কারণ, সেই নৃশংসতা ও ত্রাস সৃষ্টির প্রতিক্রিয়ায় সারা ভারতের জনসাধারনের মধ্যে বৃটিশ প্রভুত্বের বিরুদ্ধে যে ঘৃণা জাগিয়েছিল এবং না প্রতিরােধ আন্দোলন (কংগ্রেস ও গান্ধীজীর নেতৃত্বে) দেখা দিয়েছিল, তার চরম পরিণতি ঘটিল নেতাজী সুভাষ চন্দ্রের। আজাদ হিন্দু ফৌজের সশস্ত্র আক্রমণে। বৃটিশ সামাজ্ববাদের ভিত্তি কাঁপিয়া গেল। পূর্ববঙ্গেও আজ পাকিস্তানি সামাজ্ববাদের ভিত্তি অনুরূপভাবেই কাপিয়া উঠেয়াছে। কারণ, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, শ্রীহট্ট, যশাের, রাজশাহী ইত্যাদি শহর অঞ্চলে শত শত জালিয়ানওয়ালাবাগের সৃষ্টি হইয়াছে এবং প্রচণ্ড টেরর বা ত্রাসের প্রতিক্রিয়ার ইতিমধ্যেও ১০ লক্ষ লােক পালাইয়া আসিতে বাধ্য হইয়াছে। কিন্তু মনে রাখা দরকার বাংলাদেশের জনসংখ্যা সাড়ে সাত কোটি এবং তাদের শতকরা অন্ততঃ ৯০ জন পাকিস্তানি ঘৃণ্য শাসন, শােষণ ও অত্যাচারের বিরােধী। সুতরাং মুজিবর এবং আওয়ামী লীগের সত্যাগ্রহ ও অসহযােগ আন্দোলনের পরবর্তী স্তরে যখন নেতাজী সুভাষচন্দ্রের আজাদ হিন্দু ফৌজের মত বাঙলাদেশের মুক্তিফৌজের সশস্ত্র পাল্টা আক্রমণ (প্রধানতঃ গেরিলা কায়দায়) অনুষ্ঠিত হইতাছে, তখন একদিন তার ফলাফল পাকিস্তানি দস্যুদের পক্ষে মারাত্মক হইতে বাধ্য। একথা স্মরণীয় যে, নেতাজী সুভাষচন্দ্রের যুদ্ধ সামরিক দিক থেকে কোন চূড়ান্ত ফল আনে নাই। কারণ, বৃটিশ-মার্কিন সামরিক শক্তির শেষ্ঠতায় তুলনায় আজাদ হিন্দু ফৌজের শক্তি আধুনিক যুদ্ধ জয়ের উপযােগী ছিল না। কিন্তু ভারব্রহ্ম সীমান্তে নেতাজী সুভাষের আক্রমণ বৃটিশ ভারতে চূড়ান্ত রাজনৈতিক ফল আনিয়াছিল। অর্থাৎ বৃটিশ সামাজবাদ তাবু গুটাতেই বাধ্য হইয়াছিল। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নৃশংস আক্রকণের বিরুদ্ধে বাঙলাদেশের মুক্তিফৌজের ও জনগণের এই যুদ্ধও একদিন পাকিস্তানি হানাদারি শক্তির এবং রাজনৈতিক প্রভুত্বের চূড়ান্ত পতন ঘটাইবে।
একথা সত্য যে, পাকিস্তানি সরকারি সামরিক বাহিনী নিখুঁত পরিকল্পনার দ্বারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অতর্কিত ও আকস্মিক আক্রমণ চালাইয়াছে। কিন্তু চারি সপ্তাহের নিরবিচ্ছিন্ন আক্রমণ ও নরঘাতকের পরেও পাক বাহিনী ও পাক গবর্ণমেন্ট অভীষ্ঠ সিদ্ধ করিতে পারে নাই। অর্থাৎ পূর্ববাঙলাকে বশ মানাইতে পারে নাই, সেখানে স্বাভাবিক শাসন ফিরিয়া আসে নাই এবং দুই পাকিস্তানের মধ্যে মনের জোড়া লাগে নাই।
একথা মনে রাখা দরকার যুদ্ধের জন্যই যুদ্ধ নয়—কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে ইয়াহিয়া খান সম্পূর্ণ ব্যর্থ হইয়াছেন। বরং এই প্রচণ্ড আঘাতের ফলে অজস্র মানুষের রক্তের ভিতর দিয়া নূতন স্বাধীন রাষ্ট্র ও নূতন লােকায়ত্ত সরকারের আবির্ভব হইয়াছে। জাতীয় সত্তা একটি জাতীয় গবর্ণমেন্টের মধ্যে রূপায়িত হইয়া উঠিতেছে। সােজা কথায় পাকিস্তান ভাঙ্গিয়া গিয়া দুই টুকরা হইয়াছে। পাকিস্তানি গবর্ণমেন্ট ও আর্মির নিদারুণ আক্রমণের জবাবেই এটা ঘটিয়াছে। সুতরাং রাওয়ালপিন্ডির এই অমানুষিক হত্যাকান্ডের যুদ্ধযাত্র কি রাজনৈতিক পরিণামের দিক থেকে ব্যর্থ নয়? এবং রাজনৈতিক ফলাফলের বিচার ছাড়া কোন সরকারি আক্রমণের যুদ্ধকে বিচার করা কঠিন।
“গ্রীষ্মকালীন যুদ্ধে” (যদি এই ধরনের কোন বর্ণনা গ্রহণযােগ্য হয়) পাকিস্তানি বাহিনী কোন চূড়ান্ত জয় লাভ করিতে পারে নাই। অবশ্য তারা প্রায় সবগুলি জেলা শহর ও মহকুমা জয় করিয়া লইয়াছে। কিন্তু তার দ্বারা যুদ্ধের কোন চূড়ান্ত জয় বুঝায় না। বিরাট বাঙলাদেশের কোটি কোটি মানুষ তাদের বিপক্ষে এবং সামনে চারমাসকাল নিদরূণ বর্ষা আসিতেছে। তখন সমগ্র পূর্ববাঙলা জলের উপর ভাসমান একটা স্বীপের আকার ধারণ করিবে। উত্তর, দক্ষিণ, পশ্চিম, মধ্য ও পূর্ব অংশের বিভিন্ন জেলার মধ্যে ছড়ানাে পাক সৈন্যের ছাউনীগুলি যােগাযােগ ও সরবরাহ ব্যবস্থায় অত্যন্ত অসুবিধার মধ্যে পড়িবে। নদীনালা, জলজঙ্গল, খালবিল একাকার হইয়া সমুদ্রের আকার ধারণ করিবে। গেরিলাদের পক্ষে ও জনগণের পক্ষে তখন পাল্টা আক্রমণের সুযােগ আসিবে। কিন্তু এই পাল্টা আক্রমণ চালাইবার জন্য যেমন একটি কেন্দ্রীয় শক্তিশালী সামরিক কমান্ড প্রতিষ্ঠার দরকার, তেমনি দরকার দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশে গেরিলা আক্রমণের সংগঠন! প্রধানতঃ শহর অঞ্চলের নিকটবর্তী গ্রামগুলির গুপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র অবলম্বন করিয়াই পার্টিশান ইউনিটগুলিকে সক্রিয় হইতে হইবে। গ্রামবাসীদের উচিত হইবে পার্টিশান বা গেরিলা যােদ্ধাদের সমস্ত প্রকার সাহায্য ও সহযােগিতা দেওয়া, আর শত্রুপক্ষের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসহযােগিতা করা এবং তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখা শত্রু শিবিরের বিরুদ্ধে নিয়মিত গুপ্তচরবৃত্তি ও সাবােটাজ চালাইয় যাইতে হইবে।
পূর্ব বাঙলার বর্ষাকালের সঙ্গে পাকিস্তানি সৈন্যরা অপরিচিতি ও অনভ্যস্ত, অতএব তাদের রণক্রিয়ায় প্রচণ্ড অসুবিধা হইবে। গতিশীল যুদ্ধ চলিবে না, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও বর্ষাপ্লাবিত দেশে বিমান আক্রমণ ব্যথ্য হইবে। কিন্তু এই সমস্ত সত্ত্বেও মনে রাখা দরকার আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত” যুদ্ধ প্রকৃতির কোন বাধাকেই মানিতে চায়। সুতরাং বৃষ্টিবাদলা ও বর্ষার উপর অতিরিক্ত গুরুত্ব আরােপ করা উচিত নয়। পাকিস্তানি সামরিক কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই প্ল্যানপূর্বক বর্ষার জন্য তৈয়ার হইতেছে। গ্রীষ্মের অভিযানের ব্যর্থতার পর তারা বর্ষাকালীন রণক্রিয়ার জন্য প্রস্তুত হইবে, এটাই স্বাভাবিক। এজন্য তারা শহরের ও বন্দরের ঘাঁটিগুলি দখল করিয়া লইয়াছে ও কিছুকাল আগে থেকেই বাঙলা ও ভারত সীমান্তের দিকেও নজর দিয়াছে। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরা কিম্বা বাঙলাদেশের চারদিকে ভারতবর্ষের সীমানার দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই হাজার মাইল। পাকিস্তানি ফ্যাসিষ্ট বাহিনী চেষ্টা করিতেছে এই সীমানায় গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলি বন্ধ করিয়া দেওয়ার জন্য যাতে বাইরের সঙ্গে বাঙলাদেশের মুক্তিফৌজের কিম্বা জনগণের কোন যােগাযােগ না ঘটিতে পারে। কিন্তু এই সুদীর্ঘ সীমানা সর্বত্র বন্ধ করিয়া দেওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং ভারত-বাঙলাদেশ সীমান্তের সুযােগ নিতে পারিবেন।
পৃথিবীর প্রায় সমস্ত পরাধীন ও ঔপনিবেশিক দেশগুলির ইতিহাস থেকেই বলা যায় যে, এই স্বাধীনতার যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী ও রক্তক্ষয়ী হইবে। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক অবস্থা অত্যন্ত জটিল ও ঘােরালাে হইবে। রাশিয়া, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি বৃহৎ শক্তিকে কোনও না কোন সিদ্ধান্ত নিতে হইবে। আর পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচ, সিন্ধী, পাখতুনি বা পাঠান, এমন কি পাঞ্জাবী জনগণের এবং গরীব সাধারণের মধ্যে গভীর প্রতিক্রিয়া ঘটিবার সম্ভাবনা। অর্থনৈতিক প্রশ্নে আধুনিক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ধাক্কায় পাকিস্তান গভীর সঙ্কটের মুখে পড়িবে এবং তার শক্তি ক্রমশঃ শূন্যের দিকে নামিতে থাকিবে। ১৯৫৪ সালে দিয়েন বিয়েন ফুর যুদ্ধে হাে চি মিনের সামান্য অস্ত্রসজ্জিত সেন্যদল অমিতবিক্রমশালী ফরাসী বাহিনীকে চূড়ান্ত পরাজয়ে পর্যুদস্ত করিয়াছিল ইতিহাসের এই শিক্ষা যেন আমরা ভুলিয়া না যাই। যদি বাঙলাদেশের গেরিলা যােদ্ধারা সারা দেশে সংগঠন গড়িয়া তুলিতে পারেন এবং জনসাধারণ যদি ঐক্যবদ্ধ ও সংহত থাকেন (যদি রাজনৈতিক ঝগড়ায় বিচ্ছিন্ন হইয়া না যান) এবং নৈতিক বল অটুট থাকে, তবে, স্বাধীন বাঙলাদেশের জয় অনিবার্য। একমাত্র ট্যাঙ্ক মর্টার বম্বার এবং প্রােফেসনাল জেনারেলরাই যুদ্ধের শেষ নিয়ামক নন। জনতার জেনারেলও শেষ পর্যন্ত অঘটন ঘটাইতে পারেন! কারণ এটা মুক্তিযুদ্ধ, ন্যায়যুদ্ধ এবং ধর্মযুদ্ধ।

সূত্র: দৈনিক যুগান্তর, ১০ মে ১৯৭১