সৈয়দপুরের সেই রাজাকার ইজহার আহমেদ কি আইএসআই এজেন্ট?
জনকণ্ঠ রিপাের্ট ॥ উত্তরের জেলা নীলফামারীর অবাঙালী অধ্যুষিত সৈয়দপুর শহরের একাত্তরের সেই রাজাকার ইজহার আহমেদকে পাকিস্তানী গুপ্তচরভিত্তিক সংস্থা। আইএসআই-এর একজন এজেন্ট বলে এখন সন্দেহ করা হচ্ছে। একাধিক সূত্রমতে আইএসআই-এর এজেন্ট হবার সুবাদে ইজহার সৈয়দপুর ও করাচী শহরে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করছে এবং উভয় দেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে। গত ২৯ মার্চ জনকণ্ঠের সেই রাজাকার কলামে ছিন্ন মস্তক নিয়ে উল্লাসকারী সৈয়দপুরের ইজহার আহমেদের ‘৭১-এর ভূমিকা ও কাহিনী প্রকাশ পেলে বর্তমানে তার অপরাপর গােপনীয় কর্মকাণ্ড বেরিয়ে আসছে। এ ছাড়া জনকণ্ঠের সেই রাজাকার ইজহারের কাহিনীর ফ্ল্যাশব্যাক হিসাবে সৈয়দপুরের স্বাধীনতা সপক্ষের ছাত্র-জনতা ইজহারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে মিছিল, সমাবেশ, কুশপুত্তলিকা দাহ, তাকে অবাঞ্ছিত ঘােষণা করা এবং মুক্তিযােদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের তাবানী বেভারেজের সৈয়দপুরের ইজহার এজেন্সিটি বাতিলের দাবি জানায়। অপরদিকে সৈয়দপুরে বসবাসকারী বিহারীদের কাছ থেকেও বিহারী ইজহার প্রত্যাখ্যাত হয়। এ ছাড়া আগামী ১২ এপ্রিল স্থানীয় সৈয়দপুর শহীদ দিবস উদ্যাপনের দিন আরও কিছু ঘটনা ঘটতে পারে এ আশঙ্কায় সেই রাজাকার ইজহার আত্মগােপন করেছে। সৈয়দপুরের অনেকে ধারণা করছে, আইএসআই নেটওয়ার্ক ইজহার আহমেদকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। এতে দেখা যায়, শুধুমাত্র সৈয়দপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি ছাড়া ইজহারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ রয়েছে। একাধিক সূত্রমতে, ইজহার আহমেদের সঙ্গে পাকিস্তানের বহুমাত্রিক যােগাযােগ রয়েছে।
এমনকি তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় গােপন তথ্য পাকিস্তানে পাচার করার অভিযােগও রয়েছে। সৈয়দপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ফ্যাক্স বসানাে হয়েছে ২৩৫২ নম্বর টেলিফোনের সংযােগে। পাকিস্তান থেকেই রিং করে বাংলাদেশের গােপন সংবাদ নেয়া হয়। এছাড়া এই বিদ্যালয় থেকে চালানাে হয় বাংলাদেশবিরােধী নানা প্রচারণা। এমনকি এখান থেকে একটি মৌলবাদী গােষ্ঠীকে দেয়া হয় নানা প্রশ্রয়-আশ্রয়। আর বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারাও হয়ে পড়েছে জিম্মি চাকরি খােয়ানাের ভয়ে। কারণ এই বিদ্যালয়ে একাধারে ৩০ বছর ধরে সভাপতির পদটি দখল করে আছে সেই রাজাকার ইজহার আহমেদ। অপরদিকে প্রধান শিক্ষিকার । পদটি রয়েছে ইজহারের স্ত্রী তওসিকা খাতুনের কাছে। অভিযােগ মতে, আইএসআইএর এজেন্টের সুবাদে ইজহার পাকিস্তানের করাচী শহরের আরঙ্গীতে ডেফডিল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে। সেই স্কুলটিও পরিচালনা করছে ইজহারের স্ত্রী ও সৈয়দপুরের পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তওসিকা খাতুন। কিভাবে এরা উভয় দেশের নাগরিকত্ব ভােগ করছে এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সূত্র জানায়, তওসিকা খাতুন পাকিস্তানের ঐ স্কুলটি দেখভালের জন্য বর্তমানে পাকিস্তানে রয়েছে। আর ইজহার আহমেদ তাে আত্মগােপন করেছে। এ ব্যাপারগুলাে দেশের গােয়েন্দা সংস্থা কর্তৃক খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে সৈয়দপুরের সচেতন মহল থেকে।
জনকণ্ঠ ০৬-০৪-২০০১
সূত্র : সেই রাজাকার – জনকন্ঠে প্রকাশিত রিপোর্টের সংকলন