You dont have javascript enabled! Please enable it!

প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ

স্টাফ রিপাের্টার ॥ গত বৃহস্পতিবার ‘সেই রাজাকার’ শিরােনামে ‘ময়মনসিংহের কুখ্যাত ঘাতক পরিবারের এক সদস্য টিএ্যান্ডটির চেয়ারম্যান ছিলেন’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ করেছেন টিএ্যান্ডটির সাবেক চেয়ারম্যান কেএ মতিন। শুক্রবার এক প্রতিবাদলিপিতে জনাব মতিন বলেছেন, তার পরিবার একটি শহীদ পরিবার এবং তার পরিবারের বিষয়ে যে তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তা অবিশ্বাস্য ও সম্পূর্ণ ভুল। তার বড় ভাই ও এক ভগ্নিপতিকে পাকি হানাদাররা প্রকাশ্য দিবালােকে হত্যা করে। তাঁর স্ত্রী। হামিদা মতিন ‘৭১ সালে সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতায় অবস্থান করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযােদ্ধা হিসাবে সংগ্রাম করেছেন। কোন স্বার্থান্বেষী মহল তাদের নিজস্ব উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এবং পারিবারিক ও চাকরিগত সফলতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে। উদ্দেশ্যপ্রণােদিতভাবে আমার পরিবারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা করেছে। জনাব মতিন জানান, ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল দুপুর একটায় পাকি হানাদারবাহিনী। চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে আবাসিক ভবন ‘শুকতারা’র গেটের সামনে তার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ড. খন্দকার আবদুল ওয়াদুদ ও ভগ্নিপতি মেজর ডা, আমিরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজনকে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে।

দু’দিন সেখানে লাশ পড়ে থাকার পর কিছু বিদেশী লােক স্থানীয়দের সহায়তায় ভবনের সামনে ড্রেন ও কালভার্টের পাশে মাটি খুঁড়ে ছয়-সাতটি লাশ দাফন করেন। ঐ সময় জনাব মতিন করাচীতে টিএ্যান্ডটিতে। বিভাগীয় প্রকৌশলী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি জানান, তাঁরা সাত ভাই ও চার বােন ছিলেন। তার পিতা ভেটেরিনারি সার্জন হিসাবে ১৯৫৪ সালে অবসর গ্রহণ করে ময়মনসিংহের গােলকিবাড়িতে স্ত্রী-পুত্রকন্যাদের নিয়ে বসবাস করতেন। তাদের শান্তিপ্রিয় ও অরাজনৈতিক পরিবারে কারও ঘাতক রাজাকার হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না এবং বর্তমানে তার ভাইবােন সবাই দেশে-বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত। শহীদ ডা, ইসলামের তিন মেয়েও ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশে ও বিদেশে রয়েছেন। উল্লেখ্য, স্থানীয় মুক্তিযােদ্ধাদের বরাত দিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আলবদরদের প্রধান সংগঠক ও ইসলামী ছাত্র সংস্থার নেতা আশরাফের সঙ্গে ছিল জনাব মতিনের পরিবারের ঘনিষ্ঠ যােগাযােগ। মতিনদের গােলকিবাড়ি রােডের বাড়িটি ছিল একটি মিনি ক্যান্টনমেন্ট। তার এক ভাই দিদার ছিল অস্ত্রধারী কুখ্যাত রাজাকার। রেজা, শান্তু, ফেদো ও বান্ধুও ছিল এ পরিবারের সদস্য। এই রাজাকার পরিবারটির প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ মদদে একাত্তরে বহু হত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযােগের ঘটনা ঘটেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেই রাজাকার পরিবারের গােলকিবাড়ি বসতভিটায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর, অগ্নিসংযােগ ও লুটতরাজ চালিয়েছিল। অবশ্য জনাব মতিন তার। প্রতিবাদলিপিতে স্বাধীনতার পর তাদের গােলকিবাড়ি রােডের বাড়িতে ক্রুদ্ধ জনসাধারণের হামলা সম্পর্কে কিছু বলেননি। জনকণ্ঠ ॥ ২৮-০৩-২০০১

সূত্র : সেই রাজাকার – জনকন্ঠে প্রকাশিত রিপোর্টের সংকলন

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!