রাজাকার হামিদ মওলানার খবরে কুড়িগ্রামে তােলপাড়
কুড়িগ্রাম, ৪ মার্চ, নিজস্ব সংবাদদাতা ॥ রবিবার সেই রাজাকার’ কলামে আব্দুল হামিদ মওলানার নির্যাতনের কথা মনে করে কুড়িগ্রামের মানুষ আজও শিউরে ওঠে’-প্রতিবেদনটি জনকণ্ঠে প্রকাশের পর সারা কুড়িগ্রামে আলােড়ন সৃষ্টি হয়। রাস্তার মােড়ে মােড়ে, বিভিন্ন চায়ের দোকানে, শহরের বড় বড় দোকান ও প্রতিষ্ঠানগুলােতে ‘টক অব দ্য টাউন’ ছিল ঘাতক রাজাকার আব্দুল হামিদাবিষয়ক ঐ রিপাের্ট। ঘাতক এই পাষণ্ড রাজাকারের হাতে নিহত এক ব্যক্তির পুত্র ও সেই সময়ে স্বজনহারা কয়েকজন মানুষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবার সঙ্গে সঙ্গে জনকণ্ঠের। প্রতিবেদকের কাছে এসে আবেগে কেঁদে ফেলেন। তাঁরা সবাই বলেন, দীর্ঘদিন পর হলেও ঐ নরপশুর কাহিনী জনকণ্ঠে প্রকাশিত হলাে। এই জন্য তাঁরা জনকণ্ঠকে ধন্যবাদ জানান। যুদ্ধাপরাধী এই রাজাকারের বিচার করার জন্য তারা সরকারের কাছে দাবি জানান। এদিকে সকাল সাড়ে আটটায় জনকণ্ঠ পত্রিকা শহরে আসার সঙ্গে সঙ্গে নিমেষেই শেষ হয়ে যায়।
সকাল ১১টার পর পত্রিকা স্টলগুলােতে আর কোন জনকণ্ঠ ছিল না। দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের পত্রিকা স্টলে অনেক পাঠককে জনকণ্ঠ পত্রিকা খুঁজতে দেখা যায়। হকার শাহাবুদ্দিন ও মানিক জানান, সেই রাজাকার কলাম চালু হবার পর থেকে। জনকণ্ঠের চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। কুড়িগ্রামের রাজাকার আব্দুল হামিদের খবর প্রকাশের পর তারা জনকণ্ঠের কপি ২০ থেকে ২৫ টাকা দামে বিক্রি করেছেন। বিকালে শহরের কলেজ মােড় এবং খলিলগঞ্জ এলাকায় অনেক মানুষকে এই প্রতিবেদনটি ফটোস্ট্যাট করে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। কয়েক হকার জানান, আজ যদি অতিরিক্ত ২শ’ কপি জনকণ্ঠ পত্রিকা আসত তাও শেষ হয়ে যেত। কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজের তরুণ প্রভাষক জানান, জনকণ্ঠ পত্রিকা যেভাবে সাহসী ভূমিকা রাখছে তা আমাদের আগামী প্রজন্মের সামনে মাইলফলক হয়ে থাকবে। প্রবীণ কয়েক ব্যবসায়ী টেলিফোনে ঘাতক রাজাকারের প্রতিবেদন ওঠায় অসংখ্য ধন্যবাদ জানান। আগামীতে তারা এ ধরনের আরও সাহসী প্রতিবেদন করার অনুরােধ করেন।
জনকণ্ঠ ॥ ০৫-০৩-২০০১
সূত্র : সেই রাজাকার – জনকন্ঠে প্রকাশিত রিপোর্টের সংকলন