বাদু মাওলানার জমি বাগানাে হলাে না শেষ পর্যন্ত ইসলামী টিভি চ্যানেলও ভেস্তে গেছে
বিশ্ববিদ্যালয় রিপাের্টার ॥ সেই রাজাকার বাঞ্ছ মাওলানা বাংলাদেশ মসজিদ কাউন্সিলের নামে পাঁচ কাঠা জমি বাগাতে চেয়েছিল কিন্তু জনকণ্ঠে প্রকাশিত রিপাের্টটি , শেষ পর্যন্ত তার পথের কাঁটা হলাে। চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে মেয়রের হস্তক্ষেপে বাতিল হয়ে গেল সেই লােভনীয় জমিটি। একই সঙ্গে ভেস্তে গেছে বাদু মাওলানার ইসলামী টিভি চ্যানেল খােলার পরিকল্পনা। নগর ভবন সূত্রে জানা গেছে, বাচ্চু মাওলানা এটিএন টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে নিজেকে বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হিসাবে পরিচিত করানাের পর শুরু করে আখের গােছানাের পালা। এক পর্যায়ে নিজেকে নতুনভাবে তুলে ধরে নগর ভবনের কতিপয় কর্মকর্তার। সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তােলে। এই সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত আরও শীর্ষ পর্যায়ে গড়িয়েছিল। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্কের সূত্র ধরে এই মাওলানা এগুতে থাকে নতুন কৌশল অবলম্বন করে। বাংলাদেশ মসজিদ মিশনকে জামায়াতের প্রতিষ্ঠান অভিহিত করে সে প্রগতিশীল চিন্তার পক্ষে বাংলাদেশ মসজিদ, কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব। দেয়। সাংগঠনিকভাবে গড়ে তােলে এই মসজিদ কাউন্সিল।
মসজিদ কাউন্সিলের নামে লালবাগ এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের পাঁচ কাঠা জায়গা লিজ নেয়ার জন্য ছ’মাস আগে আবেদন করে। তার আবেদনপত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের সুপারিশও রয়েছে। জায়গা চেয়ে আবেদন করা বাঞ্ছ মাওলানার এই ফাইলটি নগর ভবনের এস্টেট বিভাগসহ নিচের পর্যায়ে সকল অফিসের অনুমতি নিয়ে চূড়ান্ত অনুমােদনের জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার টেবিলে পৌছে দেয়া হয়। এরই মধ্যে জনকণ্ঠে প্রকাশিত সেই রাজাকার’ সিরিজ রিপাের্টে আবুল কালাম আজাদ নামধারী বা মাওলানার কুকীর্তির। রিপাের্ট ছাপা হয়। সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা এস্টেট বিভাগসহ নিম্নপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সুপারিশ দেখে অবাক হন। নির্বাহী কর্মকর্তা এবার ফাইলের সঙ্গে জনকণ্ঠে প্রকাশিত রিপাের্টের কাটিং দিয়ে সুপারিশ করার পরিবর্তে পত্রিকায় প্রকাশিত রিপাের্ট বিবেচনা করে মেয়রকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের অনুরােধ জানান। ফাইল মেয়র সেলে যাওয়ার পরই খবর হয়ে যায় পুরাে বিষয়টির।
মেয়র ফাইলে সই করেননি, তবে নাকচও করেননি। ফাইলটি আটকে রেখেছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মেয়র নিজেও ক্ষুব্ধ হয়েছেন তাকে এই মাওলানা যেভাবে ব্ল্যাকমেইল করেছে সে জন্য। দুয়েকদিনের মধ্যেই ফাইলটি নাকচ হয়ে ফিরতে পারে। সূত্র আরও জানিয়েছে, গত রমজানের প্রথম সপ্তাহে এই বাচ্চু মাওলানা নগর ভবনে এক ইফতার পার্টির আয়ােজন করে একটি ইসলামী টিভি চ্যানেল খােলার কথা জানিয়েছে। এই ইফতার পাটিতে আওয়ামী লীগের কয়েক নেতা উপস্থিত ছিলেন। বাচ্ছু মাওলানা প্রায় এক কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের বাজেট করেছিল এই আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছ থেকে নেতারা মাওলানার প্রত্যাশিত চাদা দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। এখন সবাই নিজেদের ইজ্জত বাঁচাতে এই মাওলানাকে ছেড়ে কেটে পড়েছেন। আর। মাওলানার ইসলামী টিভি চ্যানেল খােলার শখও ভেস্তে গেছে। নগর ভবনে এই ঘটনা। জানাজানির পর অনেকেই জনকণ্ঠকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
জনকণ্ঠ ॥ ০৯-০২-২০০১
সূত্র : সেই রাজাকার – জনকন্ঠে প্রকাশিত রিপোর্টের সংকলন