You dont have javascript enabled! Please enable it!

সেই রাজাকার পিস কমিটির চেয়ারম্যান সাদ আহমদের অসত্য জবানবন্দী নিয়ে আদালতে তুমুল হট্টগােল

এমএ রকিব, কুষ্টিয়া থেকে দৈনিক জনকণ্ঠের বিরুদ্ধে মামলা করতে গিয়ে একাত্তরে বৃহত্তর কুষ্টিয়ার পিস কমিটির চেয়ারম্যান ও আলােচিত সেই রাজাকার এ্যাডভােকেট সাদ আহমদের দেয়া অসত্য জবানবন্দীকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়ার ২নং আমলী আদালতে স্বাধীনতার সপক্ষের ও বাদী পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তুমুল হট্টগােল হয়েছে। উত্তেজনাকর এ পরিস্থিতির কারণে মামলা হয়নি। জবানবন্দীর শুনানি আগামী রবিবার পর্যন্ত মুলতবি রাখা হয়েছে। এদিকে রাজাকার সাদ আহমদ নিজেকে স্বাধীনতাবিরােধী নয় বলে দাবি করে জনকণ্ঠের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের চেষ্টার প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কুষ্টিয়ার আইনজীবীরা রবিবার এক প্রতিবাদসভা ডেকেছেন। প্রসঙ্গত, একাত্তরের গণহত্যা ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপকর্মের কথা তুলে ধরে গত ৭ জানুয়ারি দৈনিক জনকণ্ঠের সেই রাজাকার’ কলামে পিস কমিটির কুখ্যাত ওই। চেয়ারম্যান ও রাজাকার সাদ আহমদ সম্পর্কে একটি রিপাের্ট প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষিতে সে আদালতে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০০/৫০১/৫০২ ধারায় দৈনিক জনকণ্ঠের বিরুদ্ধে একটি নালিশী দরখাস্ত দাখিল করে। এতে আসামী করা হয় জনকণ্ঠ . সম্পাদকসহ তিন জনকে। তারা হলেন সম্পাদক মােহাম্মদ আতিকউল্লাহ খান মাসুদ, উপদেষ্টা সম্পাদক তােয়াব খান ও নির্বাহী সম্পাদক বােরহান আহমেদ।

বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়ার ২নং আমলী আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট সুশান্ত কুমার কুণ্ডু বাদী সাদ আহমদকে তার জবানবন্দী প্রদানের নির্দেশ দেন। বাদী এ সময় কাঠগড়ায় দাড়িয়ে ২০০ ধারা মতে তার হলফী জবানবন্দী প্রদান শুরু করে। এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সাদ আহমদ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে আপত্তিকর ও অসত্য বক্তব্য দেয়া শুরু করলে উপস্থিত স্বাধীনতার সপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ সময় মুক্তিযােদ্ধা আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও মুক্তিযােদ্ধা সংহতি পরিষদের কেন্দ্রীয় আইন সচিব যুদ্ধাহত মুক্তিযােদ্ধা এ্যাডভােকেট শামসুল হুদা, এডভােকেট আব্দুল্লাহেল বাকী ও এ্যাডভােকেট মেসবাউল ইসলামের নেতৃত্বে প্রায় অর্ধশত আইনজীবী এর প্রতিবাদ জানান। সাদ আহমদের পক্ষের আইনজীবীরাও রুখে দাঁড়ান। তার পক্ষে এ্যাডভােকেট মাসুদুজ্জামান ছােটন ও এ্যাডভােকেট মকবুল হােসেন মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এ সময় উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা ও হট্টগােল বেঁধে যায়। এক পর্যায়ে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট শুনানি গ্রহণ আধঘণ্টার জন্য মুলতবি রেখে এজলাস ত্যাগ করেন। পরে প্রায় ৪ ঘণ্টা ওই আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট এ মামলার জবানবন্দীর। শুনানি আগামী রবিবার পর্যন্ত মুলতবি রাখার নির্দেশ দেন। এদিকে জনকণ্ঠের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের চেষ্টার প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কুষ্টিয়ার আইনজীবীরা। রবিবার এক প্রতিবাদসভার ডাক দিয়েছেন।

জনকণ্ঠ। ২৬-০১-২০০১

সূত্র : সেই রাজাকার – জনকন্ঠে প্রকাশিত রিপোর্টের সংকলন

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!