কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাংসদ মােঃ তাজুল ইসলাম চৌধুরীর প্রতিবাদ
“বহু হত্যাকাণ্ডের হােত কুড়িগ্রামের ৫ রাজাকার আজ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি ॥ ঘুরে বেড়ায় সদর্পে” শিরােনামে একটি খবর গত ২৪ ডিসেম্বর, ২০০০ তারিখে দৈনিক জনকণ্ঠে’ প্রকাশ পেয়েছে। উক্ত সংবাদে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাকে জড়িয়ে একটি কাল্পনিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। আমার সামাজিক অবস্থান ও রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য একটি কুচক্রী মহলের ইশারায় প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলােতে আমি ব্যক্তিগতভাবে ও পারিবারিকভাবে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় সহযােগিতা করি। আমরা সাত ভাই। আমার ছােট ভাই কুড়িগ্রাম জেলায় প্রথম স্বাধীনতা পতাকা উত্তোলন করে। ক্যাপ্টেন নওয়াজেশ কুড়িগ্রামে অবস্থানকালে তার সঙ্গে যােগাযোেগ হলে তিনি স্বাধীনতার পক্ষে কুড়িগ্রাম হতে ভারতের সঙ্গে যােগাযােগ রাখার জন্য যানবাহন চান। কুড়িগ্রাম শহরে আমার একখানা জীপগাড়ি ছিল। আমি তার প্রস্তাবে গাড়ির চাবিটি হস্তান্তর করি।
এ সময় মুক্তিযােদ্ধা সংগঠক অধ্যাপক হায়দার আলী উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে আমার ছােট ভাই যােগ দিয়েছে এবং ভারতে অবস্থান করছে এ কথা জানতে পেরে হানাদার পাকবাহিনী আমাকে ও আমার অপর ছােট ভাইকে এবং স্থানীয় খ্রীস্টান। অনিলা নন্দীর পুত্র উজ্জ্বল নন্দীকে ধরে নিয়ে কুড়িগ্রাম সিএ্যান্ডবি ডাকবাংলাে মাঠে হাত। বেঁধে বসিয়ে রাখে। পরে সেখান থেকে লালমনিরহাট এ্যারােড্রামে পাকবাহিনী ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং রংপুর জেলা স্কুল নির্যাতন ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে তিন দিনের মধ্যে আমার সাত ভাইকে ক্যাম্পে হাজির করা হলে আমাদেরকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে জানায়। আমার এক ভাই শফিকুল ইসলাম চৌধুরী সে সময় ভারতে মুক্তিযুদ্ধে থাকায়। সাত ভাইকে হাজির করানাে সম্ভব না হওয়ায় আমাদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানাে হয়।
জনকণ্ঠ ॥ ০৫-০১-২০০১
সূত্র : সেই রাজাকার – জনকন্ঠে প্রকাশিত রিপোর্টের সংকলন