You dont have javascript enabled! Please enable it!

নরসিংদী নরসিংদীর ঘাতক মতিউর সিকদার এখন ফুয়াদ আল খতিব হাসপাতালের প্রজেক্ট ম্যানেজার

মােস্তফা কামাল সরকার, নরসিংদী থেকে। একাত্তরে নরসিংদীর স্বাধীনতাকামী ও সংখ্যালঘুদের হত্যা, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযােগ ও পাকিস্তানী বর্বর বাহিনীর। সহায়তাকারী নরসিংদী সদর থানার ঘােড়াদিয়া গ্রামের সেকান্দর আলী সিকদারের পুত্র রাজাকার কমান্ডার মতিউর রহমান সিকদার এখন ঢাকার ফুয়াদ আল খতিব। হাসপাতালের প্রজেক্ট ম্যানেজার। তার নাম শুনলে সংখ্যালঘু মানুষ আজও আঁতকে ওঠে। এবং অনেকে তার অমানুষিক নির্যাতনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পাক সেনাদের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে এই রাজাকার কমান্ডার নারকীয় ধ্বংস, গণহত্যা, লুটপাটের মহােৎসব চালায়। তখনকার নরসিংদী থানাসহ বিভিন্ন থানাকে রক্তাক্ত জনপদে পরিণত করেছিল এই রাজাকার মতিউর রহমান মেম্বর ও তার সহকর্মী। রাজাকাররা। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মুক্তিযােদ্ধারা ঘৃণাভরে উচ্চারণ করেন রাজাকার কমান্ডার মতিউর রহমান সিকদারের নাম। প্রচলিত আছে পাকিস্তানী সেনাদের হাত থেকে কেউ রক্ষা পেলেও মতি সিকদারের হাত থেকে কেউ রক্ষা পায়নি। মুক্তিযােদ্ধা, দেশপ্রেমিক মানুষদের সন্ধানে একাত্তরের নয়টি মাস সে চষে বেড়িয়েছে নরসিংদীর সর্বত্র।

বিন্দুমাত্র সন্দেহ হলে ক্ষমা নেই, তুলে দিত পাকিস্তানী নরঘাতকদের হাতে। নিয়ে যেত টর্চারসেলে। হত্যা নির্যাতন আর লুটপাটের সঠিক কোন হিসাব না থাকলেও স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযােদ্ধা রঞ্জিত কুমার সাহা জানান, রাজাকার কমান্ডার মতি সিকদার। ও তার সহকর্মীরা ঘােড়াদিয়া গ্রামের হরেন্দ্র চন্দ্র সাহা, সুরেন্দ্র রায়, হরলাল সাহা, মুরারী মােহন সাহা, ঠাকুর দাস সাহা, মনমােহন সাহা, দেবেন্দ্র চন্দ্র সাহা, রাধাগােবিন্দ সাহা, ভােলাসহ অসংখ্য লােককে শালীধা ব্রিজ এবং নরসিংদী টেলিফোন এক্সচেঞ্জের পিছনের পুকুর পাড়ে গুলি করে হত্যা করেছে। শুধু তাই নয়, অনেক মা-বােনের ইজ্জত নষ্ট করেছে এবং লুটপাট অগ্নিংযােগ করেছে ঘােড়াদিয়ার মুরারী মােহন সাহার বাড়ি, হরেন্দ্র। সাহার বাড়ি, ঠাকুর দাস সাহার বাড়ি-বৌয়াকুড়ের ববদা কান্ত দাসের বাড়িসহ অনেকের। বাড়িঘর দোকানপাটে। রাজাকার কমান্ডার মতিউর রহমান সিকদার ‘৭১ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর পাকিস্তানে চলে যায়। গােলাম আযম পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার সময় তার সাথে মতিউর রহমান সিকদারও দেশে ফিরে আসে। মতিউর রহমান সিকদার দেশে ফিরে এসে জামায়াত কর্মীদের সংগঠিত করে জামায়াতে ইসলামী গঠনে সহায়তা করে। মতিউর রহমান সিকদারের বক্তব্য। মতিউর রহমান সিকদারের সাথে যােগাযােগ করে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বলে, যেভাবে জনকণ্ঠ লিখছে তাতে আমার মতামত প্রকাশ করার কোন ইচ্ছা নেই। যা খুশি তা-ই লিখে দিক।

জনকণ্ঠ ॥ ২৫-০৩-২০০১

সূত্র : সেই রাজাকার – জনকন্ঠে প্রকাশিত রিপোর্টের সংকলন

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!