You dont have javascript enabled! Please enable it!

২২ নভেম্বর ১৯৭১ঃ সর্বাত্মক যুদ্ধের ২য় দিন

পাকিস্তান সরকার বলছে ভারত যুদ্ধ ঘোষণা ছাড়াই পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে। ভারতীয় বাহিনী কোন কোন এলাকায় সীমান্ত অতিক্রম করেছে। এতা কেউ ভাবতেই পারেনি যে ঘোষণা ছাড়া তারা পাকিস্তান আক্রমন করে বসবে। এটা আন্তজার্তিক রীতিনীতি পরিপন্থী। তারা সবচে বড় আক্রমন করে যশোরে সেখানে তারা ৫ ডিভিশন সৈন্য ও দুটি ট্যাঙ্ক রেজিমেন্ট নিয়ে সীমান্তে আক্রমন করছে। সেখানে যুদ্ধ এখন চলছে। অগ্রবর্তী অবস্থানে আছে তাদের দুটি ব্রিগেড ৪২ ও ৩৫০। তাদের সম্ভবত ১২৫ জন সৈন্য নিহত হয়েছে এবং ৫০০ আহত হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৭ জন নিহত হয়েছে ৫০ জন আহত হয়েছে। ভারতের ১৮ টি ট্যাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখানে ভারতীয় বিমান শক্তি ব্যাবহার করা হয়েছে। বিমান হামলায় ৭৯ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। এখানে একেবারে অগ্রবর্তী অবস্থানে আছে ১ আজাদ কাশ্মির এবং ৪ শিখ লাইট ইনফ্যান্ট্রি।
সিলেট আক্রমন
পাকিস্তান ভাষ্য
সিলেটে ৮ মাউন্তেইন ডিভিশন কিছু ট্যাঙ্ক নিয়ে সিলেটের উত্তর পূর্ব সীমান্তে হামলা করছে খুব কম সংখ্যক সৈন্য নিয়ে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের প্রতিরোধ করে যাচ্ছে। সেখানে ৫৮ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হয় পাক সেনাবাহিনীর ১১ জন নিহত হয়।
শেষ রাতে কামানের সাহায্য নিয়ে ৪/৫ গুর্খা আট গ্রাম দখল করতে সক্ষম হয়। এই সংঘর্ষে পাকিস্তান পক্ষের মেজর আলভী সহ ব্যাপক হতাহত হয়। ভারতীয় পক্ষে একজন ক্যাপ্টেন ও ১ জন লেফটেনেন্ট সহ ৬ জন নিহত হয়। হাবিলদার দিল বাহাদুর ছেত্রি একাই ছুরি/ খুক্রি দিয়ে ৬ জন পাক সৈন্য হত্যা করেন। তার বীরত্ব এর খবর শুনে মানেকশ তার সাথে পরে দেখা করেন। তাকে পরে মহাবীর চক্র( বীর উত্তম) উপাধি দেয়া হয়। মিত্র বাহিনী পরে সরকার বাজারের দিকে অগ্রসর হয়। সরকার বাজার ও চরখাই ৩১ পাঞ্জাব ব্যাটেলিয়ন সদর দফতর। চরখাই পতন হলে পরবর্তী খাদিম নগরে ৩১ পাঞ্জাবের এক খণ্ডিত কোম্পানির অবস্থান আছে তাকে সহজেই ধরাশায়ী সম্ভব।
বিলোনিয়া ফ্রন্ট
ভারতীয় ভাষ্য
এদিন ভারতীয় বাহিনীর কিলো ফোর্স,৩১ জাঠ, ৩২ মেহার, ৪ বেঙ্গল, ১০ বেঙ্গল সমন্বয়ে গঠিত মিত্র বাহিনী বন্দুয়া, দৌলতপুর, পাঠান নগর দিয়ে বিলোনিয়া বালজে প্রবেশ করে। পাকবাহিনী পশ্চাদপসরণ করে ফেনীতে একত্রিত হয়। মিত্র বাহিনী তাদের ফেলে যাওয়া প্রচুর অস্র আটক করে। ৪ বেঙ্গল এর যে কোম্পানি ( লেঃ হেলাল মোরশেদ) ধার করে আনা হয় তাদের কিলো ফোর্সের সাথে রাখা হয়। ১০ বেঙ্গলকে পাঠান নগরে রাখা হয়। দলটি এভাবে অবস্থান করা হয় সর্ব পশ্চিমে জাঠ তারপর ১০ ইবি তারপর ৩২ মাহার তার পূর্বে ৪ বেঙ্গল। এদিন আর পাক সৈন্য কোন প্রতিরোধে নামেনি কিন্তু মিত্রবাহিনী ছাগলনাইয়া সড়কে তাদের গাড়ী বহরে হামলা চালাতে থাকে।
হিলি ফ্রন্ট
পাকিস্তানী ভাষ্য
হিলিতে ভারতের ২০ ডিভিশন হামলা করে । হিলিতে তারা ৬ দিন আগে থেকেই হামলা করে আসছিল। আক্রমনে তারা সুবিধা করতে পারেনি। গতদিনে তারা সীমান্তের এপারে ঢুকে পরেছিল আজকে সারাদিনের যুদ্ধে তাদের ঠেলে দেয়া হয়েছে। তাদের সৈন্যদের লাশ তারা নিয়ে যেতে পারেনি।
পচাগর যুদ্ধ
ভারতীয় ভাষ্য
৭ মারাঠা ও বিএসএফ এর আর্টিলারি সহায়তা নিয়ে অমরখানা যুদ্ধে মুক্তিবাহিনী পুনরায় অমরখানা আক্রমন করে। শেলিং এ পাকবাহিনী ছত্রভঙ্গ হয়ে পিছনে সরে যায়। অমরখানা পতনের পর ১২ রাজপুত রাইফেলস মুক্তিবাহিনীর সাথে যোগ দেয়। ৭ মারাঠা রেজিমেন্ট আগাইয়া চুই নদীর পশ্চিম পারে অবস্থান নেয়।

 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!