পূর্ব পাকিস্তান রুখিয়া দাড়াও
১৯৬৪ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় ছাত্র সমাজে একটি স্লোগান খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠে। স্লোগানটি ছিল পূর্ব পাকিস্তান রুখিয়া দাড়াও। স্লোগানটি ছিল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকারীদের বিরুদ্ধে। ছাত্র সমাজ আরও ব্যাপক অর্থে স্লোগানটি গ্রহন করে। স্লোগানটির জনক ছিলেন সাংবাদিক আহমেদূর রহমান ভীমরুল। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের অধিবাসী ছিলেন। কাজ করতেন ইত্তেফাকে। ১৯৬৫ এর মে মাসে একটি কনফারেন্সে যোগ দিতে মিশর যাওয়ার সময় পিআইএ এর একটি বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ এ স্লোগান ভিত্তিক জাতীয়তাবাদ প্ররোচনামূলক লিফলেট তৈরি ও প্রচার করে। এ লিফলেট এর উপর শেখ মুজিবের উপর মামলাও হয়। মামলার বিবরনটা ছিল এ রকম শেখ মুজিব একটি জীপে করে সাভারের দিকে যাচ্ছিলেন আর সাভার থেকে গভর্নর মোনায়েম খান ফিরছিলেন। গাড়ী দুটি একত্র হওয়া মাত্র মুজিবের গাড়ী থেকে এ লিফলেটের বান্ডিল মোনায়েম খানের গাড়ীতে ছুড়ে মারা হয়।
এ শ্লোগান শেখ মুজিবের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। ৬৪ সালের জুলাইয়ে সে স্লোগানের রূপরেখায় জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন মুজিন। ৬৬ সালের এপ্রিলে পল্টন ময়দানে ৭ মার্চ এর আদলে একটি ভাষণ দিয়ে ফেলেন। ৭ মার্চ বলেছিলেন এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ৬৪ তে বলেছিলেন এবারের সংগ্রাম অধিকার আদায়ের সংগ্রাম। এখানে অধিকার বলতে অনেক কিছুই বুঝায়। এদিনের জনসভায় পাকিস্তান জিন্দাবাদের পরিবর্তে পূর্ব পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দেয়া হয়। ইত্তেফাক শুধু লিখেছিল জনতা জিন্দাবাদ ধ্বনিতে সভা প্রকম্পিত করে তুলেছিল। ৬ দফা আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন মুজিবকে আটকের প্রয়োজন দেখা দেয়। মামলার গ্রাউনড বিবেচনায় পল্টন ময়দানের ভাষণের ঘটনাকে বেছে নেয়া হয়। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার জোয়ারে রুখে দাড়াও রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও পল্টন ভাষণ রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলা কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে।