জাতীয় ছাত্র ফেডারেশন (এনএসএফ)
এনএসএফ গঠন কালে এটি একটি বামপন্থী ছাত্র সংঘঠন ছিল এরা পূর্বে ভাসানি পশ্চিমে ভুট্টোকে সমর্থন করত। দলীয় লেজুর বৃত্তিকে নিয়েই দলটি ভাঙ্গনের শিকার হয়। খেলাফতে রাব্বানি নামক দলের ছাত্র সংঘঠন ছাত্র শক্তির একাংশ নিয়ে এনএসএফ এর একটি অংশ আইয়ুব অনুগত দলে পরিনত হয়। ছাত্র শক্তির নেতা ছিলেন মিজানুর রহমান শেলি এবং মউদুদ আহমেদ। আইয়ুব অনুগত নতুন এনএসএফ এর নেতা ছিলেন জমির আলী। বামপন্থী এনএসএফ মুল সংঘটন বাদ দিয়ে রাজনীতি করা শুরু করে। মাহবুবুল হক দোলন এই গ্রুপের সভাপতি ছিলেন ।এই গ্রুপ ডাকসুতে ৬৯ সালে সাধারন সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছিল ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের ছাত্র চিত্র নায়ক ওয়াসিম। কলেজের ছাত্রাবস্থায় তিনি বডি বিল্ডার হিসেবে নাম করেছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি বডি বিল্ডিং এর জন্য ইস্ট পাকিস্তান খেতাব অর্জন করেছিলেন। এই বডি বিল্ডার এনএসএফ এর মাস্তান ছিলেন তবে বি ক্যাটেগরির। পেশী শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমেই তিনি মাস্তানি করতেন। ৬৯ এর গন আন্দোলনে ছাত্রলীগের আধিপত্য চলে আসলে তিনি আস্তে আস্তে নিজেকে গুটাইয়া নেন।
সা’দত হুসাইন সাবেক সচিবের (জিএস এসএম হল ও ছাত্র ইউনিয়ন (মেনন)নেতা ৬৪-৬৭) বয়ানে ৬৯ এর ছাত্র রাজনীতি
সাপ্তাহিক : আপনি বলছিলেন, ছাত্রলীগকে তেমন পাত্তা দিতেন না। কিন্তু ’৬৯-এর দিকে তো ছাত্রলীগের হাতেই আন্দোলন চলে যায়। এটি কীভাবে হলো?
সা’দত হুসাইন : হ্যাঁ, ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে আন্দোলনের গতি বদলে গেল। তখন ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলন সম্পূর্ণভাবে ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে চলে গেল। স্লোগান পরিবর্তন হয়ে মিছিল থেকে শোনা যেতে লাগল ‘জেলের তালা ভাঙব, শেখ মুজিবকে আনব’। কীভাবে কী হয়ে গেল তা অনেকেই বুঝতে পারলাম না। আমি তখন আর সরাসরি পার্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রইলাম না। সিএসপি পরীক্ষা দেয়ার কারণেই এই দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। অবশ্য মিছিল মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নিতাম।
তখন ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিতেন মাহাবুবউল্লাহ, জামাল হায়দার প্রমুখ। মতিয়া গ্রুপ থেকে ছিল সাইফুদ্দিন মানিকরা। এদের সমন্বয়েই ১১ জন নেতা সম্মিলিতভাবে ’৬৯-এর আন্দোলনে নেতৃত্ব দিত। এর মধ্যে ছাত্রলীগ ছিল ৪ থেকে ৫ জন। এনএসএফ-এর কেউ কেউ এসে যোগ দিল। এনএসএফ-এর সদস্যদের একাংশ ভুট্টোপন্থি হয়ে আন্দোলনে শরিক হলো। ঢাকা তখন উত্তাল। আমরা এ আন্দোলনে যোগ দিতাম, কারণ সিএসপি পরীক্ষা শেষে তখন আর বিশেষ কোনো কাজ ছিল না। আমরা সেইবার ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করলাম বিপ্লবী অনুপ্রেরণা নিয়ে। এরই মধ্যে সার্জেন্ট জহুরুল হক মারা যায়। পুরো ঢাকার চিত্র যেন পাল্টে গেল। শুধু মিছিল আর মিছিল।