মালেক হত্যার নিন্দায় শেখ মুজিব
১৯৬৯ সালের ১২ আগস্ট ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে ডাকসু আয়োজিত শিক্ষানীতির উপর আলোচনা সভা কালে প্রথমে চেয়ার ছোড়াছুড়ি পরে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ১৬ ছাত্র আহত হয়। ৫ জনকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। আহতদের দুজনের অবস্থা আশঙ্কা জনক। সভায় সভাপতিত্ব করেন ভিপি তোফায়েল আহমেদ। ছাত্র ইউনিয়ন নেতা শামসুদ্দহা বক্তব্য দেয়ার সময় ইসলামপন্থী ছাত্ররা প্রথমে হৈচৈ শুরু করে। তারা ইসলামী শিক্ষা ব্যাবস্থার দাবীতে স্লোগান দিতে দিতে মঞ্চে চলে আসে। ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষা ব্যাবস্থার সমর্থকরা পরে তাদের ধাওয়া করে রেসকোর্স মাঠ পর্যন্ত নিয়ে যায়। এখানে ইসলামী শিক্ষা ব্যাবস্থার সমর্থকদের বেধড়ক পিটুনি দেয়া হয়। পরে ডীন এসে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করলে সভা আবার শুরু হয়। আহতদের মধ্যে প্রান রসায়নের ছাত্র আব্দুল মালেক মাথায় আঘাত পান তার অবস্থা আশঙ্কা জনক। ইকবাল হল ছাত্রলীগ নেতা নাসিরুল হক বাচ্চু চোখে আঘাত প্রাপ্ত হন। অপর গুরুতর আহতদের একজন প্রান রসায়নের ২য় বর্ষের ছাত্র এবং অপর দুইজন বহিরাগত মাদ্রাসা ছাত্র এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থী। এ ঘটনায় ঢাকা মেডিকেলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়।
মেডিকেল কলেজ পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জিলানি এ ব্যাপারে একটি নির্দেশনা পত্রিকায় প্রকাশ করেন। ইসলামী ছাত্র সংঘ নেতারা পরে বিবৃতিতে বলেন যে এক নেতা ইস্লামিয়াত বাধ্য তামুলক না করে ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব করলে তাদের সমর্থকরা বিরোধিতা করায় সমাজতন্ত্রী গুণ্ডারা তাদের উপর হামলা করে। আহত মালেক ১৫ আগস্ট মৃত্যু বরন করেন।তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন ন্যাপ (ভাসানী), এনএসএফ (উভয় গ্রুপ), পিডিপি, ছাত্রলীগ তোফায়েল গ্রুপের ফজলুল হক হলের ভিপি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু জিএস আব্দুল কুদ্দুস মাখন, আল মুজাহিদ গ্রুপ ছাত্রলীগ। ঘটনার সময় শেখ মুজিব পশ্চিম পাকিস্তান সফরে ছিলেন তিনি ফিরে এসে যখন মালেক হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করে পত্রিকায় বিবৃতি দিলেন তখনি সারা দেশ থেকে পত্রিকায় বিবৃতি দেয়ার হিড়িক পরে যায় কোন পত্রিকা সম্ভবত আজাদ এসকল বিবৃতি এক সপ্তাহ যাবত ছাপিয়েছিল। মালেক ছিল এসএসসি, এইচএসসি স্ট্যান্ড করা ছাত্র এবং অনার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হওয়া ছাত্র। ফলে জনমত সেদিকে ছিল। তার হত্যাকাণ্ডে ছাত্রলীগের তেমন কেউ জড়িত না থাকলেও পরবর্তীতে বাংলাদেশ আমলে তারা ছাত্রলীগকে দোষারোপ করে থাকে।