১৯ নভেম্বর ১৯৭১ঃ জাতিসংঘে পূর্ব পাকিস্তান তৎপরতা
প্রিন্স সদরুদ্দিন আগা খান
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার প্রিন্স সদরুদ্দিন আগা খান স্বীকার করেছেন শরণার্থী প্রবাহ এখনও চলছে এবং অবস্থার ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার পাকিস্তান সরকারের ইতিপূর্বে গৃহীত পদক্ষেপ সমুহ কোন কাজে আসেনি। তিনি বলেন ভারতে অবস্থানরত শরণার্থীদের জন্য আরও সাহায্য প্রয়োজন। শরণার্থীদের স্বেচ্ছায় স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যেই এই জটিল সমস্যার সমাধান নিহিত। তিনি বলেন আন্তরিকতাহীন মুখের কথা এবং একটি স্থায়ী সমাধান ছাড়া আন্তরিকতা শরণার্থীদের আশা আকাঙ্খাকে কৌতুকে পরিনত করবে। তাদের এমন আশ্বাস দেয়া উচিত ছিল দেশে ফিরে তারা তাদের জমি জমা ফেরত পাবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা নেয়া হবে না।
জাতিসংঘের সামাজিক কমিটিতে চীনের কঠোর অবস্থান
জাতিসংঘের সামাজিক মানবিক ও সাংস্কৃতিক কমিটিতে পূর্ব পাকিস্তানের শরণার্থীদের উপর হল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের প্রস্তাবের উপর আলোচনা কালে চীন পাকিস্তানের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে ফলে প্রস্তাবটি এখন অনেকাংশেই দুর্বল হয়ে গেছে। পাশাপাশি চীনা প্রতিনিধি ফু হাওয়া ভারতের নাম উল্লেখ না করে ভারতের সমালোচনা করে বলেন দেশটি এখন পূর্ব পাকিস্তানে নির্লজ্জ হামলা করে যাচ্ছে। চীনের বক্তব্যকে নাইজেরিয়া সহ আরও একটি দেশ সমর্থন করে কিন্তু মালয়েশিয়া বাংলাদেশের সমস্যা রাজনৈতিক সমাধানের উপর জোর দেন। প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য হাউজের বাহিরে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান লবির দেশ গুলো।
পূর্ব পাকিস্তানীদের নুইসেন্স
জাতিসংঘের লিগ্যাল কমিটিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে প্রতিনিধিদলের জুনিয়র সদস্য জাহেদ সাইদ বলেন তারা পাকিস্তানী কূটনীতিকদের টেলিফোনে অশ্লীল গালিগালাজ, গালিগালাজ পূর্ণ পত্র প্রেরন, মৌখিক হুমকি, অফিসের সামনে বিক্ষোভ সহ অন্যান্য অপ্রীতিকর ঘটনার উল্লেখ করে বলেন তারা নিরাপত্তাহীন জীবন যাপন করছে। তিনি তাদের জীবনের নিরাপত্তার আবেদন জানান। এ বিষয়ে তাদের অতীতে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে।