২৩ আশ্বিন ১৩৭৮ রবিবার ১০ অক্টোবর ১৯৭১
-যমুনা চরে মুক্তিবাহিনীর গোলাবর্ষণে পাকিস্তানের নৌবাহিনীর একটি গান বোর্ট যমুনা বক্ষে নিমজ্জিত হয়।
-গেরিলারা পাগলা রেলওয়ে ব্রিজ ধ্বংস করে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেল চলাচাল বন্ধ করে দেয়।
-ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরদার শরণসিং নয়াদিল্লীতে বলেন, বিশ্বজনমত বাংলাদেশের পক্ষে।
বাংলাদেশ শরণার্থীদের জন্য বিদেশী সাহায্য বাংলাদেশ সংকটের রাজনৈতিক সমাধান দেবে না। বাংলাদেশ সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের অর্থ হবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সমাধান।
-যশোর বেনাপোল এলাকায় মুক্তিবাহিনী পাক-বাহিনীর উপর সকাল ৬ টায় ২৫ রাউণ্ড গোলাদবর্ষণ করে।
-যশোরের মসলিয়া এলাকায় ৬ ইঞ্চি মর্টারের সাহার্যে মুক্তিবাহিনী ২১ রাউণ্ড গোলাবর্ষণ করে। হতাহত জানা যায় নি।
-ঢাকার ডেমরা এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ। বিভিন্ন স্থানে টহলদার পাকবাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা তীব্র করা হয়।
-The Mukti Bahini guerrillas derailed a train carrying Pakistani troops killing many soldiers. In a heavy lighting in Dacca-Comilla-Chittagong sector 9 soldiers were killed. Pravda indicts pindi for the events in East Bengal demands release of Sheikh Mujibur Rahoman. (সংবাদপত্র)
-স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান প্রচার সম্পর্কিত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিরক্ষণ ও তথ্য সচিব এম এ সামাদ সভাপতিত্ব করেন। সর্ব জনাব ডঃ বি হোসেন, আলমগীর কবির, শামসুল হুদা চৌধুরী, কামাল লোহানী, এ রহমান এবং বি মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বেতার প্রচার ও অনুষ্ঠান সংগঠন নিয়ে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। (৫ খঃ পৃঃ ৬৪৬)
-ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক পথে বাখুণ্ডিয়া ব্রীজ পাক-সেনাদের চলাচল বন্ধ করার জন্য নগরকান্দা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধারা উড়িয়ে দেয়। উল্লেখ্য এই ব্রীজের পাহাড়রত রাজাকারদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথমে সংঘর্ষ হয়। রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের ভয়ে ফরিদপুরে শহরেই আস্তানা নেয়। তিনবার ব্রীজ ধ্বংস করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এদিনে রাত ২-৩০ মিঃ ভুবন কাঁপানো আওয়াযে ব্রীজটি ভেঙ্গে পড়ে। ১৯০ পাউণ্ড বারুদ লাগে এটা উড়াতে। স্বাধীনতার পর এই দীর্ঘ ব্রীজটির ওপর বেলী ব্রীজ সংস্থাপন করা হয়। বেলী ব্রীজ স্থাপনে লেখকের সামান্য ভূমিকা ছিল।
-বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কথা শিল্পী সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ প্যারীতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। ১৯৬৬ সালে তিনি ইউনিস্কোর সাংঙ্কৃতিক দপ্তরে ডেপুটি ডাইরেক্টর পদে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে তিনি একজন উৎসাহী সমর্থক ছিলেন সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে তিনি লন্ডনে আসেন। বিল্পবী বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি বিচারপতি আবুসাঈদ চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন কিন্তু দেখা হয় নি। তাকে দিল্লীতে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল। উল্লেখ্য বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমতে গড়ে তোলার জন্য জয় প্রকাশ নারায়ণ ঐ সম্মেলনে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। (স্বাঃ সং প্র বাঃ পৃঃ ১১৭)
-“দি সানডে টাইমস” এ প্রকাশিত এক সংবাদ বিশ্লেষণে লন্ডনস্থ পাক হাইকমিশনের গোপন পত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ৩ আগষ্ট ‘দি টাইমস’ এ প্রকশিত বাংলাদেশ বিরোধী একটি বিজ্ঞাপনের ব্যয়ভার বহন করে। উল্লেখ্য পাকিস্তানপন্থী বাঙালীরা তথাকথিত পাকিস্তান সলিডারিটি ফ্রন্ট গঠন করে বাংলাদেশ সংগ্রামকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছিল।
Reference:
একাত্তরের দশ মাস – রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী