You dont have javascript enabled! Please enable it!

পাক সরকারের অভ্যর্থনা কেন্দ্রে একজন শরণার্থীও ফিরে যায়নি -ফ্রেলিং হুসেন

(কলকাতা প্রতিনিধি)। কলকাতা-মারকিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ সদস্য মি: পিটার বি, ফ্রেলিং হুসেন সম্প্রতি কলকাতায় বলেন, গত মার্চ মাসে বাংলাদেশে পাকিস্তানী আক্রমণের পর প্রাণভয়ে যারা ভারতে চলে গেছেন তাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য পাক কর্তৃপক্ষ কতকগুলাে কেন্দ্র স্থাপন করেছে। কিন্তু এসব কেন্দ্রে কোন শরণার্থী তার নজরে পড়েনি। মিঃ ফ্লেলিং হুসেন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক কমিটিরও সদস্য। শরণার্থী সমস্যা স্বচক্ষে দেখার জন্য তিনি ঢাকা গিয়েছিলেন। সেখানে দু’দিন থেকে মার্কিন বিমানবাহিনীর একখানা বিমানে করে দমদম বিমান বন্দরে নেমেই সাংবাদিকদেরকে তিনি উপরিউক্ত তথ্য জানান। মিঃ ফ্রেলিং হুসেন বলেন যে, ভারতে শরণার্থী সমস্যার ব্যাপারে অন্যান্য বিদেশী সংস্থা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর কি করতে পারে এ ব্যাপারে জানবার জনই তিনি এখানে এসেছেন। দেশে ফিরে গিয়ে তিনি কংগ্রেস ও পররাষ্ট্র সচিব মি: রজার্সের কাছে রিপাের্ট দাখিল করবেন। তিনি বলেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এখনও যুদ্ধের উত্তেজনা প্রবল ভাবেই রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব বাংলা সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে এই উত্তেজনা হ্রাসে ব্রতী হওয়া উচিত।

তিনি ঢাকা এবং সেখান থেকে বিমানে করে কুমিল্লা পরিদর্শন করেন। ঢাকা পরিদর্শন কালে সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ধ্বংসের চিহ্ন তার নজর এড়ায়নি। শেখ মুজিবকে মুক্তি না দিলে কোন রাজনৈতিক মীমাংসা হতে পারে না বলে বাংলাদেশ নেতৃবৃন্দ যে মন্তব্য করেছিলেন সে সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। পাকিস্তানে অবস্থানকালে তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানসহ বহু পাক অফিসারের সাথে শরণার্থী সমস্যা নিয়ে আলােচান করেন। তিনি আওয়ামী লীগের কোন নেতার সাথে দেখা সাক্ষাৎ করেন নি।  বিমান বন্দর থেকে তিনি সরাসরি লবণহূদ শরণার্থী শিবিরে চলে যান। সেখানে প্রতিটি শরণার্থী তাকে জানান, বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে তাঁরা কেউই দেশে ফিরে যাবেন না। শিবির পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, এত অল্প সময়ে শিবিরগুলি যে ভাবে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে তাতে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন।

সাপ্তাহিক বাংলা ॥ ১ : ৩ ॥ ১০ অক্টোবর ১৯৭১

সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!