পর্যবেক্ষণ না গণহত্যা
ফরাসী কুটনীতিবিদ পল হেনরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশে ত্রাণ কার্য পরিচালন ও বিভিন্ন দেশের ত্রাণ সংস্থার সমন্বয় সাধন ও বণ্টন কল্পে একদল পর্যবেক্ষক প্রেরিত হয়েছে। পল হেনরী রাষ্ট্রপুঞ্জসহমহাসচিবের ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন কিন্তু তিনি কি ত্রাণ কার্য পরিচালনা করবেন? কাদের ভেতরে ত্রাণ সামগ্রী বণ্টন করবেন? সত্তর লাখ শরণার্থী যখন ভারতের ভূমিতে শত দুঃখ দুর্দশায় দিন যাপন করছেন তখন বাংলাদেশে পর্যবেক্ষক প্রেরণকে স্বভাবতঃই উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়। এটা সামরিক জান্তার সহায়ক কোন সামরিক সংগঠন” নয়তাে? এই মুখােস ধারী সংগঠনকে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তারা সমাধানের যে পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন তাতে মনে হয় গাছ কেটে গােড়ায় জল দিচ্ছেন। পূর্ব বাংলায় মার খাওয়া ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনীকে “ত্রাণ” করার উদ্দেশ্যেই যদি হেনরী মিশন আসেন তবে পূর্ব বাংলার জনগণই শুধু নয়-বিশ্বের জনগণও এটাকে বরদাস্ত করবে না। বাংলাদেশের মানুষ রক্তনদী সাঁতরে আজ এমন এক দ্বীপে পৌছেছে যেখান থেকে ফেরার কোন পথ নেই, তাকে অস্ত্র হাতে এগিয়ে যেতেই হবে। লড়াই করে আমাদের জিতে নিতে হবে “ন্যায়, শান্তি, মানবাধিকার।” রাষ্ট্রপুঞ্জের পানে চেয়ে থেকে নয়।
বাংলার কথা ॥ ১: ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪