You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.24 | তিনটি পূর্ব শর্ত পূরণ না হলে একটি শরণার্থীও দেশে যাবে না - সংগ্রামের নোটবুক

তিনটি পূর্ব শর্ত পূরণ না হলে একটি শরণার্থীও দেশে যাবে না

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সেক্রেটারী জেনারেলের রিপাের্ট। জাতিসংঘ, ১৯শে সেপ্টেম্বর সমঝােতা এবং মানসিকতার প্রতি শ্রদ্ধাবােধের ভিত্তিতে একটি রাজনৈতিক সমাধান অর্জিত হলেই কেবল বাংলাদেশের মূল সমস্যার সমাধান হতে পারে।’  জাতিসংঘের কার্যাবলী সম্পর্কে সেক্রেটারী জেনারেলের নােটের ভূমিকায় উ থান্ট আজ একথা বলেছেন। উ থান্ট তার রিপাের্টে বলেন : ‘একটি রাজনৈতিক সমঝােতার অভাবে উক্ত অঞ্চলের আইন শৃঙ্খলা ও প্রশাসন ব্যবস্থার উপর যে প্রতিক্রিয়া পড়েছে তাতে পূর্ব পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ও সরকারী সাহায্য প্রচেষ্টা ভারত হচ্ছে-এটাই সমস্যার মূল কথা।’ বর্তমানে বিশ্ব যে সব সমস্যার সম্মুখীন উ থান্ট পূর্ব বাংলার সমস্যাকে তার অন্যতম বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, শরণার্থীদের ফিরে যাওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যে আবেদন জানিয়েছিলেন শরণার্থীরা তাতে আদৌ সাড়া দেয়নি। তিনি বলেন, ‘অনুরূপ একটা বিরাট আকারের বিপর্যয়ে সংশ্লিষ্ট সরকার ও জাতিকে সর্বপ্রকারে সাহায্যের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক কমুনিটির একটা সুস্পষ্ট দায়িত্ব রয়েছে।

উথান্টের মতে পূর্ব বাংলায় তীব্র খাদ্য সঙ্কট এমনকি দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা রয়েছে। ইত্যবসরে বিরাট আকারের রিলিফ ব্যবস্থা চালুর মত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারলে জনগণের দুঃখ দুর্দশা অচিরেই গুরুতর রকমে বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি জানান। সেক্রেটারী জেনারেল বলেন : ‘সমঝােতা’ উন্নত রাজনৈতিক পরিবেশ এবং রিলিফ প্রচেষ্টার। সফলতা-এই তিনটি পূর্ব শর্ত পূরণ না হলে বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত একজন শরণার্থীও ফিরে যাবে উথান্ট তার রিপাের্টে আরাে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি বিশেষভাবে বিপজ্জনক। সীমান্ত সংঘর্ষ, চোরা গােপ্তা আক্রমণ এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। ব্যাপারটা আরাে বিপদজনক এই জন্য যে শরণার্থীদের ফেরৎ পাঠানাের উদ্যোগ বাস্তবরূপ পরিগ্রহ করলে তাদেরকে এই সীমান্ত অতিক্রম করেই যেতে হবে।’ উপসংহারে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘে আমরা যারা আছি তাদের কাউকে একথা ভুলে গেলে চলবে। যে উপমহাদেশের যে কোন সংঘর্ষ অতি সহজেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে পারে।’

জয়বাংলা (১) ॥ ১: ২০ ॥ ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪