১৪ নভেম্বর ১৯৭১ঃ পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ
লাহোরে দলীয় এক ইফতার পার্টিতে নুরুল আমীন
লাহোরে দলীয় এক ইফতার পার্টিতে পিডিপি সভাপতি নুরুল আমীন বলেন কিছু সংখ্যক হতাশ লোক ছাড়া সকল সকল পূর্ব পাকিস্তানী এক ও ঐক্যবদ্ধ থাকুক। তিনি বলেন ভারতীয় প্রচারনা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী আওয়ামী লীগের প্ররোচনায় কিছু সংখ্যক তরুন বিপথগামী হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানীরা সাহসিকতার সহিত দেশপ্রেম নিয়ে এদেশের পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। তিনি বলেন ঘন ঘন বোমা বিস্ফোরণ সত্ত্বেও সেখানে সব কিছুই স্বাভাবিক ভাবে চলছে। প্রদেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে রাজাকার আরও বৃদ্ধি এবং ব্যাপক হারে স্বেচ্ছাসেবীর সামরিক প্রশিক্ষন নেয়া প্রয়োজন। এ সকল স্বেচ্ছাসেবীরাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক আনতে পারে। লাহোরে আগামীকাল সম্মিলিত জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। জোটে না থাকিলেও জমিয়তের ২ জন সদস্য বৈঠকে পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
খাজা খয়ের উদ্দিন
পিডিপি প্রাদেশিক সভাপতি নুরুল আমিন এর প্রধানমন্ত্রীর পদ একজন পূর্ব পাকিস্তানীকে দেয়ার দাবীর প্রতি কাউন্সিল মুসলিম লীগের প্রাদেশিক সভাপতি খাজা খয়ের উদ্দিন সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি বলেন ক্ষমতায় জুলফিকার আলী ভুট্টো অধিষ্ঠিত করার দিন হবে পাকিস্তানের জন্য চরম অশুভের দিন। জুলফিকার আলী ভুট্টো বিগত ১০ বছর গনতন্ত্রের দুশমনের চূড়ামণি হিসাবে পূর্ব পাকিস্তানিদের হাতে ক্ষমতা না দেয়ার পিছনে ভুমিকা পালন করে গেছেন। জুলফিকার আলী ভুট্টো এর আগে জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধা সৃষ্টি করেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন জাতীয় পরিষদে কেউ যোগ দিলে জাতীয় পরিষদ কসাই খানা হবে। বর্তমানে জাতীয় পরিষদে জুলফিকার আলী ভুট্টোর এক তৃতীয়াংশও সংখ্যাগরিষ্ঠতা নাই। সংখ্যাগরিষ্ঠতা এখন পূর্ব পাকিস্তানিদের হাতে তাই এই দাবী ন্যায়সঙ্গত।
জামাতে ইসলামী ঢাকা শহর শাখা
জামাতে ইসলামীর এক প্রেস রিলিজে বলা হয় ঢাকায় কাওসার হাউজে ঢাকা শহর জামাতের আমীর অধ্যাপক গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্তে ঢাকা শহর জামাতের মজলিশে শুরার উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনে মজলিশে শুরার নবনির্বাচিত সদস্যগন শপথ গ্রহন করেন। বৈঠকের প্রস্তাবে বলা হয় প্রদেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে শহর মজলিশে শুরার সদস্যগন অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। সভায় প্রস্তাব করা হয় সশস্র দুষ্কৃতিকারীদের দুরভিসন্ধিকে কার্যকরী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কার্যকরী ব্যাবস্থা গ্রহন প্রয়োজন। সাম্রাজ্যবাদী ভারতের প্রতি কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারন করে ভারতকে জঘন্য, হীন ও নৃশংস ষড়যন্ত্র হতে বিরত থাকার জন্য বলা হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রদেশের বিভিন্ন অংশে গোলাবর্ষণের মাধ্যমে সাধারন মানুষ হত্যাকাণ্ড এবং সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করে যাচ্ছে তাই এজন্য জনগণকে ভারতের বিরুদ্ধে জেহাদের জন্য প্রস্তুত হওয়ার জন্য আহবান জানানো হয়।