বিজয় বার্তা
জনাব মঞ্জুর এম. এন-এর মুক্তাঞ্চল পরিদর্শন খুলনা ৩০শে নভেম্বর। জনাব নুরুল ইসলাম মঞ্জুর খুলনা জেলার শ্যামনগর থানা, পারুলিয়া এবং মুন্সিগঞ্জ সফর করেন। তিনি এ সকল এলাকার কতিপয় জনসভায় ভাষণ দেন এবং জনসাধারণকে অবিলম্বে যার যার কাজে যােগদান করার নির্দেশ দেন। জনাব নুরুল ইসলাম মঞ্জুর মুক্তিফৌজের অগ্রবর্তী ঘাঁটি সমূহে গমন করে। মুক্তিযােদ্ধাদের উৎসাহিত করে তােলেন। মুক্তাঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক খুলনা ৩০শে নভেম্বর। বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি কর্ণেল ওসমানী গত ২৯শে নভেম্বর খুলনা জেলার কালিগঞ্জ থানা, হােটা থানা, নলতা এবং পারুলিয়া সফর করেন। তিনি উল্লিখিত স্থানগুলিতে কতিপয় জনসভায় ভাষণ দেন। কর্ণেল ওসমানী তার ভাষণে বলেন, যেসব জায়গায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানাে হয়েছে, সে সকল পতাকা রক্ষা করার দায়িত্ব জনসাধারণের। তিনি বলেন যে যাদের হাতে অস্ত্র নেই তারাও মুক্তিযােদ্ধা। বাংলাদেশের সকল মানুষই আজ মুক্তিযুদ্ধের অংশীদার। কর্ণেল ওসমানী ৯নং সেক্টরের কতিপয় ফ্রন্ট লাইন পরিদর্শন করেন, এবং এসময় তার সাথে ছিলেন ৯নং সেক্টরের কমান্ডার মেজর এম, এ,জলিল, ক্যাপ্টেন হুদা এবং শেখ মুজিবের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল।
মুক্তাঞ্চলে জনাব কামরুজ্জামানের ভাষণ দান খুলনা ১লা ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব কামরুজ্জামান গত ১লা ডিসেম্বর কালিগঞ্জ থানায় এক বিরাট জনসভায় ভাষণ দেন। তিনি তার ভাষণে বলেন যে, বাংলাদেশে হবে শােষণহীন সমাজ ব্যবস্থা, তিনি চোরাচালানী ও মুনাফাখখারদের হুঁশিয়ার করে বলেন যে তারা যদি এই পথ থেকে সরে না দাঁড়ায় তবে তার জন্য । উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে। জনাব কামরুজ্জামান ঘােষণা করেন যে, দেশের সকল চা বাগান সহ বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে জাতীয় করণ করা হবে এর ছােট ছােট শিল্প প্রতিষ্ঠান সমূহে শ্রমিকদের অংশীদার করার ব্যবস্থা থাকবে। তিনি বলেন যে, এখন হতেই সকল গ্রামে পঞ্চায়েত প্রথা প্রবর্তন করা হবে এবং এসকল পঞ্চায়েতের সদস্য হবেন যারা গ্রামের সৎ ব্যক্তি। যুবকদের নিয়ে গ্রামে গ্রামে গণবাহিনী গঠন করা হবে। তিনি মুক্তিযােদ্ধাদের প্রশংসা করে বলেন যে, তারা তাদের দায়িত্ব ও ত্যাগের যে পরিচয় দিয়েছেন তার জন্য নিরস্ত্র দেশবাসী তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ হয়ে থাকবে। জনাব কামরুজ্জামান মুক্তিবাহিনীর কতিপয় অগ্রবর্তী ঘাটি পরিদর্শন করেন।
বিপ্লবী বাংলাদেশ ॥ ১ : ১৬ ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭১
সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪