You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.02 | আন্তর্জাতিক জাতিসমূহের প্রতি মুক্তাঞ্চলের অধিবাসীদের জন্য খাদ্য ও ঔষধ সাহায্য দিন - সংগ্রামের নোটবুক

আন্তর্জাতিক জাতিসমূহের প্রতি মুক্তাঞ্চলের অধিবাসীদের জন্য খাদ্য ও ঔষধ সাহায্য দিন

মতিয়ার রহমান সম্প্রতি উত্তর এলাকার মুক্তাঞ্চলে পক্ষকালবাপী সফরকালে উত্তর এলাকার প্রশাসনিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান জনাব মতিয়ার রহমান এম, এন, এ, প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া ও অন্যান্য ভারতীয় সাংবাদিক সাক্ষাতকারে বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চলের অধিবাসীদের ঔষধ ও খাদ্য সাহায্য দিয়ে জীবনরক্ষা করার জন্য আকুল আবেদন জানান। তিনি বলেন সাধারণত বাংলাদেশে আশ্বিন কার্তিক মাসে দুর্ভিক্ষ দেয়া দেয়। বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে যুদ্ধের দিকে বেশি নজর দিয়াছেন। তথাপি কিছু কিছু কম্বল, ঔষধ ও অন্যান্য জিনিস পত্র স্থানীয় জনসাধারণকে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরা কিছুই দিতে পারছি না। তিনি বলেন মুক্ত অঞ্চলে কলেরা দেখা দিয়াছিল কিন্তু তা প্রতিরােধ করা হয়েছে। এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন যুদ্ধকে আমরা দীর্ঘস্থায়ী করতে চাই না বরং এখন আমরা যে সমস্ত এলাকা মুক্ত করছি তা চিরস্থায়ী ভাবেই মুক্ত থাকবে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন এই এলাকায় এক হাজার বর্গমাইল এবং বাকী। ২০০ শত বর্গমাইল দিনাজপুরের অংশ বিশেষ এবং এই সমস্ত মুক্ত অঞ্চলে প্রশাসনিক কাজকর্মও চালু হয়েছে। এই সমস্ত প্রশাসনিক কাজগুলি হচ্ছে দেওয়ানী এবং ফৌজদারী আদালত, পোেষ্ট অফিস, টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন, জমি রেজিষ্ট্রীকরণ, পুলিশ, হাসপাতাল, প্রাইমারী স্কুল, শুল্ক বিভাগ, বিবাহ রেজিষ্ট্রীকরণ এবং হাট বাজার এবং সীমান্ত অঞ্চলে ভিসা প্রবর্তন অন্যতম।

আর এক প্রশ্নের উত্তরে জনাব মতিয়ার বলেন যে বর্তমানে এই অঞ্চলে প্রায় ১৫০০ হাজার সরকারী কর্মচারী কর্মে নিযুক্ত হয়েছেন এবং তাহাদের শুষ্কবিভাগ ও জমির আয় খাজনা হতে আদায়ের অর্থের দ্বারা বেতন দেওয়া হয়। তিনি বলেন কোর্টের বিচার কাৰ্য্য যার জোনাল এ্যাডমিনিষ্টার-এর দ্বারা পরিচালিত হয়। অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন মােট ১১টি অঞ্চলে এগুলি বিভক্ত হয়েছে। এবং এই উত্তর অঞ্চল সর্ববৃহৎ এলাকা এবং সবচেয়ে ছােট এলাকা হচ্ছে ত্রিপুরার নিকটে সাৰজরুনে এলাকা। তিনি বলেন যে উত্তর অঞ্চলে বেশি এলাকা মুক্ত রয়েছে। জনাব মতিয়ার রহমানকে ট্রেড এন্ড কমার্স এবং সভাপতি হিসাবে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে ভারতের সঙ্গে আমরা উচ্চ স্তরের বানিজ্যিক চুক্তি সম্পাদনের চেষ্টা করিতেছি। অন্যান্য অনেক দেশের পুরাতন ফার্মগুলিও আমাদেরকে মাল সরবরাহের জন্য অর্ডার দিয়াছে। আর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি। বলেন, এই মুহূর্তে আমরা প্রধানত: পাট, চামড়া প্রভৃতি কাঁচা মাল রপ্তানী করিতে পারি।

রণাঙ্গন (২) ২ ডিসেম্বর ১৯৭১

সূত্র : গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ – খন্ড – ০৪