You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.04.22 | বাংলার পাশে দাঁড়ান, ইয়াহিয়াকে ছাড়ুন তাজুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকের পর মাও’য়ের কাছে ভাসানির আর্জি | দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা - সংগ্রামের নোটবুক

বাংলার পাশে দাঁড়ান, ইয়াহিয়াকে ছাড়ুন তাজুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকের পর মাও’য়ের কাছে ভাসানির আর্জি

 রাজনৈতিক সংবাদদাতা

মাওলানা ভাসানি চীনের চেয়ারম্যান মাও সে-তুং এবং প্রধানমন্ত্রী চু এন-লাইকে দু’খানা ব্যক্তিগত চিঠি দিয়েছেন।  চীনের দুই প্রধান নেতার কাছে বাংলাদেশের প্রবীণ নেতার আবেদন : আপনারা পশ্চিম পাকিস্তানী অত্যাচারী ইয়াহিয়ার ফৌজ, তথা হিংস্র পশুদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থন করুন । আপনারা প্রকাশ্যে ইয়াহিয়া চক্রকে নিন্দা করুন এবং বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসুন। এদিকে, কলকাতায় এ খবরও পাওয়া গিয়েছে যে সম্প্রতি বাংলাদেশের কোথাও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজুদ্দিন আহমেদ ন্যাশনাল আওয়ামী লীগের নেতা মৌলানা ভাসানির সঙ্গে দেখা করেছিলেন।

দুই নেতার মধ্যে কী কী আলােচনা হল তা জানা যায়নি, তবে এটা শােনা গিয়েছে যে আওয়ামী লীগ এবং ন্যাশনাল আওয়ামী লীগ যৌথ নেতৃত্বে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম পরিচালিত করবেন বলে স্থির করেছেন। এ ব্যাপারে দুই নেতার আরও আলােচনা হবে। মৌলানা ভাসানি যখন চীনে গিয়েছিলেন তখন চীনা নেতাদের অনেকের সঙ্গেই তাঁর ব্যক্তিগত পরিচয় হয়। পূর্ববঙ্গে মহম্মদ তােহার নকশালপন্থী পারটি সক্রিয় হওয়ার পর থেকেই অবশ্য মৌলানা ভাসানি চীনা লাইন থেকে কিছুটা সরে যান। তােহা দাবি করেন যে, চীনের সমর্থন তারই পিছনে। মৌলানা ভাসানি সাম্প্রতিক লড়াই শুরু হওয়ার আগেও প্রকাশ্যে মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। তােহাগােষ্ঠী কখনও তা করেননি।

মাও সে তুং এবং চু এন লাইকে লেখা চিঠিতে মৌলানা ভাসানি পাকফৌজের অত্যাচারের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন বলে জানা গেল। তিনি বলেছেন ইয়াহিয়া খার নির্দেশে সুপরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র পাক ফৌজ বাংলাদেশের নিরস্ত্র জনতার উপর ঝাপিয়ে পড়েছে এবং নির্বিচারে শিশু ও মহিলা সহ হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছে। এই হত্যালীলা তারা এখনও চালিয়ে যাচ্ছে।

Reference:

২২ এপ্রিল ১৯৭১, দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা