You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.09 | "ভুট্টো একটা ভয়ঙ্কর বেজন্মা" - নিক্সন - সংগ্রামের নোটবুক
“ভুট্টো একটা ভয়ঙ্কর বেজন্মা” – নিক্সন
৯ ডিসেম্বর, ১৯৭১
স্থান ওয়াশিংটন, সন্ধ্যা ৫ টা ৫৭ থেকে ৬ টা ৩৪ মিনিট 
কিসিঞ্জার: মি. প্রেসিডেন্ট, এ বিষয়টা একটা রূপ (৫ সেকেন্ড ডিক্লাসিফাই করা হয়নি) পেতে চলেছে। ভুট্টো এখানে আসছেন, জাতিসংঘে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতও থাকবেন তার সঙ্গে।
নিক্সন: ভুট্টো?
কিসিঞ্জার: জি।
নিক্সন: সেই বেজম্মার বাচ্চাটা?
কিসিঞ্জার: জি। আমরা বুঝতে পারছি, তিনি যে নিষ্পত্তির ফর্মুলা দিয়েছেন তা আমরা যেভাবে চাইছি তার কাছাকাছি।…
নিক্সন: আমি জানি। ইয়াহিয়া সম্ভবত তাকে পাঠিয়েছেন (অস্পষ্ট)। সে একজন খারাপ মানুষ। ভুট্টো এক ভয়ঙ্কর বেজন্মা।
কিসিঞ্জার: কিন্তু কথা হলাে, আমরা যদি এই ফর্মুলায় ইয়াহিয়ার সমর্থন পাই, তাহলে বিষয়টি নিয়ে রাশানদের কাছে যেতে পারি এবং একটা সুরাহাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে আমরা চীনাদের সুনজরেও থাকব। কারণ, আমরা ইয়াহিয়ার সমর্থনেই শীর্ষ সম্মেলন করতে পেরেছি। এটা ঠিক যে, তারা পূর্ব পাকিস্তান হারাবে। এ নিয়ে আর কিছুই করার থাকবে না।
নিক্সন: আমরা সবাই তা জানি।
কিসিঞ্জার: কিন্তু প্রশ্ন হলাে তারা এটা কিভাবে হারাতে যাচ্ছে?
নিক্সন: এবং পশ্চিম পাকিস্তান, তারা মনে করছেন, যে কোনােভাবেই হােক তারা এটাও হারাতে বসেছে। আপনি কি তা মনে করেন না?
কিসিঞ্জার: ঠিকই বলেছেন, তাদের এখন যেমন মাথা খারাপের অবস্থা, তখন তারা অবশ্যই এমনটা ভাববেন।
নিক্সন: যিশুর দোহাই দিয়ে বলছি- এমনটা ঘটলে তখন কী হবে? তারা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে একটি রাজনৈতিক সমঝােতার প্রস্তাব দেবে? কিন্তু এটা এখন তাদের আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে। ভারতীয়রা এটা কখনােই মানবে না। এমনকি রাশানরাও নয়।
কিসিঞ্জার: না, সেটা কিন্তু নয়, রাশানরা কিন্তু মানবে। ব্রেজনেভের চিঠিতে সেই মজার কথাটাই কিন্তু লেখা হয়েছে। ব্রেজনেভ তার চিঠিতে লিখেছেন, “২৫ মার্চ, ১৯৭০ (১৯৭১?) যেখানে তাদের আলােচনা বিঘ্নিত হয়েছিল সেই পয়েন্ট থেকে সমঝােতার প্রক্রিয়া শুরু হওয়া উচিত। তাহলে তাে তখন পূর্ব পাকিস্তান ছিল। পাকিস্তানের অংশ এবং এখন যদি সােভিয়েতের নিস্পত্তির পরিকল্পনা হিসেবে আমরা। যদি এই ফর্মুলা পেয়ে যাই আর যদি আমরা বিকল্প বেছে নিই- অবশ্য তারা যদি ঘােষণা দেয়।
নিক্সন: তারা তাে দিয়েছে। তারা তাে সে কথাই বলেছে।
কিসিঞ্জার: না।
নিক্সন: কেন, চিঠিতে?
কিসিঞ্জার: চিঠিতে বটে। এখন আমরা যদি, মানে যদি আপনি এবং ব্রেজনেভ একটা যৌথ ঘােষণা দিতে পারেন। আমি যেভাবে ভাবি সেভাবে যদি বিষয়টি দাড়িয়ে যায়, আমরা যদি ইয়াহিয়াকে আগামীকাল সকালের মধ্যে এখানে পেয়ে যাই এবং সময়ের ফ্যাক্টর আমাদের জন্য কাজ করে নিক্সন ইয়াহ।
কিসিঞ্জার: এই তিনটি বাক্যে আপনার এবং ব্রেজনেভের একটা যৌথ আবেদন হতে পারে। ভারতীয়রা যদি তা প্রত্যাখ্যান করে তখন আমরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যেতে পারি। আর এই সময়ে নিরাপত্তা পরিষদে সােভিয়েতরা আমাদের সমর্থন দেবে। কারণ তখন যৌথ
নিক্সন: (অস্পষ্ট)।
কিসিঞ্জার: আর তখন আমরা ভারতীয়দের বেকায়দায় ফেলতে পারব। তখন আমরা ভারতীয়দের কাছ থেকে একটা মাত্রায় সােভিয়েতদের বিচ্ছিন্ন করতে সক্ষম হব।।
নিক্সন: উম, হুম।
কিসিঞ্জার: আর যদি ভারতীয়রা গ্রহণ করে নেয়, তখন কী ঘটবে? সর্বাগ্রে পশ্চিম পাকিস্তান রক্ষা পাবে।
নিক্সন: ইয়াহ।
কিসিঞ্জার: অবশ্য একটা সময় পর্যন্ত এবং ভারতীয়রা যদি (অস্পষ্ট)
নিক্সন: ভারতীয়রা থামবে এবং তখন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। কিন্তু ভারতীয়রা পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থান করবে। 
কিসিঞ্জার: তখন কী ঘটবে? পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দের মধ্যে একটা সমঝােতা হবে এবং তার পরে পরিস্থিতি সম্ভবত বাংলাদেশের স্বাধীনতার দিকেই গড়াবে। তখন অবশ্য আর আমাদের কাঁধে দায় চাপবে না। বিষয়টি ইয়াহিয়ার সম্মতিতেই পরিণতি লাভ করবে।
নিক্সন: ঠিক আছে, এখন
কিসিঞ্জার: আপনি জানেন এটা একটা বেদনাদায়ক ফলাফল। কিন্তু এখন আমরা বলছি মি. প্রেসিডেন্ট। 
নিক্সন: তবে কথা হলাে এটা ছিল অবশ্যম্ভাবী। আমার বিবেচনায় পূর্ব পাকিস্তানকে কখনােই রক্ষা করা যেত না এবং এখনাে আমি মনে করি পরিস্থিতি যেদিকে গড়িয়ে চলেছিল তাতে একে রক্ষা করা যেত না।
কিসিঞ্জার: আমি বলতে চাইছি, যখন এটা সব শেষ হয়েছে তখন।
নিক্সন: তারা আসলে বড় ঝামেলার, অভিশপ্ত পশ্চিম পাকিস্তানকে রক্ষা করা।
কিসিঞ্জার: আমরা যদি সেইভাবে বেরিয়ে আসতে পারি মি. প্রেসিডেন্ট
নিক্সন: আমরা যদি একটি শক্তিশালী পশ্চিম পাকিস্তানকে রক্ষা করতে পারি, তাহলে আমাদের অনেক কাজই করা হবে।
কিসিঞ্জার: আমরা ইতােমধ্যেই যথেষ্ট করেছি। যারা ভারত সম্পর্কে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে তারা আবারাে ভ্রান্ত প্রমাণিত হবে। কারণ তারপর যদি (অস্পষ্ট)
নিক্সন: আসলে আমরা যদি বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যেতে সত্যি রাশানদের পাই তাহলে তা দুদেশের সম্পর্কের ওপর বিরাট ছায়া ফেলবে। সেই কারণেই আমি ডবরিনিনকে (সােভিয়েত রাষ্ট্রদূত) এখানে চাইছি, যাতে আপনি তার কথাটা যথাযথভাবে বলতে পারেন।
কিসিঞ্জার: আমি জানি। ডবরিনিন আপনার সঙ্গে যুক্তিতর্ক করবে এবং তারপর এগিয়ে যেতে চাইবে।
নিক্সন: আপনি কি লক্ষ্য করেছেন যে, আমরা তাকে থামিয়ে দিয়েছি? আমাদের যুক্তি ছিল না।
কিসিঞ্জার: জি। তবে আসলে আমাদের কোনাে সুযােগ নেই। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। কেন আপনি শীর্ষ সম্মেলনকে ব্যাহত করবেন? এবং আমি মনে করি। এসব যখন শেষ হয়ে যাবে তখন আপনি শীর্ষ সম্মেলনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারবেন।
নিক্সন: রাশানরা একটা বাস্তবসম্মত প্রস্তাব নিয়ে আসতে পারে।
কিসিঞ্জার: না।
নিক্সন: আমি তাে না দেওয়ার কারণ দেখি না।
কিসিঞ্জার: না।
নিক্সন: আপনিই ভালাে জানেন। এ ধরনের একটা সস্তা ছােট্ট খেলায় তারা কতদূর অগ্রসর হবে? আমি তাে মনে করি না যে, তারা আমাদের কথাটা ফেলতে পারবে।
কিসিঞ্জার : প্রতিটি অনুভূতি দিয়ে আমি নিজেকে বােঝানাের চেষ্টা করেছি, তারা এটা ছুড়ে ফেলে দেবে না। কারণ প্রকৃতপক্ষে এটা তাদের ফ্রেমওয়ার্ককেই কবুল করেছে। আমাদের তরফে আপনি যা বলছেন, তা জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি পত্র দেওয়া উচিত। এটা হবে তাদের চিঠির আনুষ্ঠানিক জবাব।
নিক্সন: আমিও তা-ই মনে করি, চিঠিটি অবিলম্বে ব্রেজনেভের কাছে হস্তান্তর করা উচিত।
কিসিঞ্জার: আগামীকাল সকালে। 
নিক্সন: আপনি জানেন এটা খুবই মজার বিষয় যে, কিভাবে এই লােকগুলাের সবাই সমান।
কিসিঞ্জার: এই বৈঠকে ব্রেজনেভের অনেক স্টেক রয়েছে মি. প্রেসিডেন্ট।
নিক্সন: তিনি এখানে সাফল্য পেতে চান, তাই তাে?
কিসিঞ্জার : ইয়াহ। এ দেশের বেজম্মার বাচ্চারা আপনার ওপর যত খুশি প্রস্রাব করতে উদগ্রীব।
নিক্সন: তারা কিন্তু বসে নেই ।
কিসিঞ্জার : কিন্তু এ দেশের বাইরে এই মুহূর্তে আপনিই বিশ্ব নেতা, আর ট্রুডাের। (সম্ভবত কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী) কথা ছাড়ুন। আপনার সব কিছুতেই তার অপছন্দ। কোনাে কিছুতেই আপনার সঙ্গে তার মেলে না।
নিক্সন: সেটা ঠিকই বলেছেন।
কিসিঞ্জার: বলুন তাে, কোন আক্কেলে তিনি বললেন, এটা একটা দারুণ বৈপ্লবিক মতবাদ। এর কারণ হলাে, তিনি নিজেকে অন্তত অ-কমিউনিস্ট বিশ্বের নেতা হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছেন।
নিক্সন: কোসিগিনের (সােভিয়েতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছেন। আবার আমেরিকান হিসেবেও চিত্রিত হতে চেয়েছেন।
কিসিঞ্জার : কিন্তু কোসিগিন সম্পর্কে তিনি কিন্তু এটা বলেননি এবং এটা বলতেও পারেন না। কারণ তার অভ্যন্তরীণ মতামত এতে সায় দেবে না।
নিক্সন: সেটা ঠিক।
কিসিঞ্জার: যদি তিনি বলতেন যে, কোসিগিন একটি বিপ্লবী প্রস্তাব।
নিক্সন: জাতিসংঘে সেই ভােট কিন্তু যথেষ্ট খারাপ ছিল না। এর প্রতি একটা প্রতিফলন ছিল।
কিসিঞ্জার: ঠিকই বলেছেন। আসলে আমাদের লিবারেল স্টাবলিশমেন্ট বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে এবং নৈতিকভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত ষােলআনাই । তারা আসলেই যা বলতে চাইছেন, তা হলাে যে দেশটির (পাকিস্তান) সঙ্গে কেনেডির একটি অঙ্গীকার রয়েছে তাকে ধর্ষণ করার অনুষ্ঠানে পৌরােহিত্য করতে। তবে এখন আপনি যেটা নিশ্চিতভাবেই অর্জন করতে যাচ্ছেন তা হলাে পশ্চিম পাকিস্তানকে। এটা একটা বিয়ােগান্তক অধ্যায়। কিন্তু
নিক্সন : এমনটা আগেও ঘটেছে। | কিসিঞ্জার কিন্তু তিনি যেভাবে চেয়েছেন সেভাবে আমরা কিন্তু তাকে পূর্ব পাকিস্তান ইস্যুতে জড়াতে বলিনি।
নিক্সন : আমি জানি।
একটা কথা আমি আপনাকে জানাতে চাই। কোনালি (সাবেক মার্কিন অর্থমন্ত্রী যিনি ঢাকা সফর করেছেন) যা উল্লেখ করেছেন, আমার এ কথাটা আদেশ হিসেবেই আপনাকে নিতে হবে। ভারতীয় অর্থ থেকে ২৫ মিলিয়ন ডলার তুলে নিন এবং সেটা। পৌছে দিন ইন্দোনেশিয়াকে। আমি ইন্দোনেশিয়ার মতাে একটি মুসলিম দেশকে জানাতে চাই আমরা তাদের বন্ধু । আমার মনে হয় বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে একটা। আলােড়ন সৃষ্টি করবে।
কিসিঞ্জার: জি।
নিক্সন : রাজি?
কিসিঞ্জার: বিলক্ষণ।
নিক্সন: ঠিক আছে। আপনি কি আদেশটি জারি করতে পারেন?
কিসিঞ্জার: মিনিটের মধ্যেই আমি এটা করতে পারি।
নিক্সন: এক্ষুণি করুন। আমি কি বােঝাতে চাইছি হেনরি? যদি দরকার পড়ে আমার নামেই এটা করুন।
কিসিঞ্জার: ওহ, না, না, না।
নিক্সন: বঙ্গোপসাগরে আমাদের নৌবহর পাঠানােই ঠিক হবে। হেনরি আপনি যদি সত্যিই কিছু করতে চান, তাহলে যিশুখ্রিস্টের দোহাই সেখানে নৌবহর পাঠান।
কিসিঞ্জার: সত্যি বলতে কী, যদি একটা সমঝােতাও হয়ে যায়, সেখানে। আমাদের এরকম শক্তি প্রদর্শন করতে হবে, যাতে তারা দেখতে পায় যে আমরা এটা করতে পারি এবং সরেও আসতে পারি।
নিক্সন: ঠিকই বলেছেন।
কিসিঞ্জার: তখন আমাদের কেউ দায়ী করতে পারবে না।
নিক্সন: সেটাই ভালাে। আমাদের উচিত হবে নৌবহর প্রেরণ করা। প্লেনও পাঠিয়ে দিন। আর ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এ খবর জানিয়ে দিন। আমি মনে করি, এই গ্রুপের কাছে বিষয়টি জানিয়ে রাখাই ভালাে, যেমনটা আমি রুশমন্ত্রীকে এইমাত্র জানিয়েছি এবং আপনি তাকে যেভাবেই হােক এখনই জানিয়ে দিন।
কিসিঞ্জার : না। এভাবে জানানােটা আমার পক্ষে ঠিক হবে না।
নিক্সন: উত্তম।
কিসিঞ্জার: এটাই বরং ভালাে। কিন্তু এভাবে নয়
নিক্সন: (অস্পষ্ট)। রাশানদের বলুন।
কিসিঞ্জার: এভাবে কিন্তু ঠিক হবে না।
নিক্সন: আমাদের সম্পর্ককে বিষময় না করে। অবশ্য আমি ভেবেছিলাম নিক্সন আমাদের সম্পর্ককে বিষময় না করে। অবশ্য আমি ভেবেছিলাম…
কিসিঞ্জার: আমার মতে আপনার বিবৃতিটি শক্তিশালী। হেগ বলেছেন, আপনার কাছ থেকে এ পর্যন্ত এ সংক্রান্ত যত বিবৃতি এসেছে তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী। সত্যিই খুব শক্ত। আপনি জানেন, এটা যদি কাজ হয় তাহলে এটা অনিবার্য বলেই প্রতীয়মান হবে।
নিক্সন: আমি বাজি ধরে বলতে পারি। যে বার্তা মস্কোতে গেছে তা ইতােমধ্যেই সেখানে গুঞ্জরন তুলেছে।
কিসিঞ্জার: আগামীকালের মধ্যে আমরা একটা জবাব পেতে পারি। শনিবারের সকালের মধ্যে তাে বটেই।
নিক্সন: দেখুন হেনরি, আমি কিন্তু আপােস চাই। আমি বলেছি, এ বিষয়ে ভারতীয়দের সংযত করতে। একটা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিতে যা রাজনৈতিক
পত্তির পথ সুগম করবে। সত্যি বলতে কী? এটা হলাে তারই ডিল, যা নিয়ে আমরা কথা বলছি।
কিসিঞ্জার: যাক, সেখানে কতগুলাে বদমায়েশ ছিল। আপনি না কি বলেছেন, ‘ক টু দ্য আওয়ামী লীগ।
নিক্সন: ইয়াহ।
কিসিঞ্জার: আর সে কথাটাকেই এখন তারা এমনভাবে বলছে যে ২৫ মার্চে যেখানে আলােচনা স্থগিত হয়েছিল, সেখান থেকে শুরু করতে। এ কথার প্রকৃত মানে হচ্ছে মুজিবের মুক্তি।
নিক্সন: ও তাই নাকি।
কিসিঞ্জার: অন্যদিকে কিন্তু নিক্সন সেটাও সুরাহার যােগ্য।
কিসিঞ্জার: কিন্তু আমি পরিসংখ্যান দিয়ে বলতে চাই, মি. প্রেসিডেন্ট প্রথম পর্যায়ে আমরা কতিপয় সাধারণ নীতির বৃত্তান্ত দিতে চাই। উল্লেখযােগ্য বিষয় হলাে এখন ভারতীয়দের ক্ষমতা খর্ব করা। পাকিস্তানিরা তাদের ৮০ ভাগ ‘পিওএল’ হারিয়েছে। তারা করাচিকে পুরােপুরি ধ্বংস করেছে। পাকিস্তানিরা আর দুই সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে পড়তে যাচ্ছে। আমরা যদি পশ্চিম পাকিস্তানকে বাঁচাতে পারি তাহলে তা হবে
নিক্সন: ৩০ শতাংশ?
কিসিঞ্জার: এটা হবে এক অসাধারণ সাফল্য অর্জন। পরিস্থিতি কিন্তু এর অনুকূলে মােটেই নয়।
নিক্সন: কারণ ভারতীয়রা এটা গিলে খাওয়ার জন্য প্রস্তুত। 

সূত্র:  ১৯৭১ আমেরিকার গোপন দলিল – মিজানুর রহমান খান – সময় প্রকাশন