আমেরিকা চায় ঢাকা-দিল্লি তিক্ততা ইন্দিরা
সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সঙ্গে নিক্সন প্রশাসনের সম্পর্ক নিয়ে ভারতের মনে সন্দেহের একটা দোলাচল ছিলই। বিষয়টি সম্পর্কে ইঙ্গিত মেলে সাহায্য দেওয়া নিয়ে। বিজয়লগ্নেই তাই মার্কিন কর্মকর্তারা স্টেট ডিপার্টমেন্টকে এমন তথ্য দিয়েছিলেন যে, বাংলাদেশকে সাহায্য করার বিষয়টি ভারত তার সঙ্গে নতুন রাষ্ট্রের সম্পর্কে চিড় ধরানাের চেষ্টা হিসেবেই সন্দেহ করছে। কিন্তু এ ব্যাপারে ভারতের মনে যে সত্যই সন্দেহ ভর করেছিল তা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কঠোরতার সঙ্গে প্রকাশ করেছিলেন দিল্লিতে নিযুক্ত বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ কিটিংয়ের কাছে। ইন্দিরা যে ঐ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কতটা ক্ষুব্ধ ছিলেন তার প্রামাণ্য দলিল হচ্ছে কিটিংয়ের একটি টেলিগ্রাম।
২৪ জুলাই, ১৯৭২
আমি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পৌছার পর মুহূর্তেই দেখলাম, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ রায় বেরিয়ে এলেন। তার চোখে-মুখে বিষাদের ছাপ। কিন্তু আমাকে দেখেই স্মিত হাসলেন। বললেন, কত দিন আপনাকে দেখি না। এটি ছিল যেহেতু আমার বিদায়ী সাক্ষাৎকার, তাই নােট টুকে নিতে আমি কাউকে সঙ্গে নেইনি। কিন্তু তার (ইন্দিরা) তরফে এ কাজের জন্য ঠিকই একজন বসেছিলেন, যিনি অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে আমাদের পুরাে সাক্ষাৎকার টুকে রাখেন। গান্ধীকে আমি দেখলাম ক্লান্ত, অসুখী অথবা ব্যস্ততাজনিত কারণে চিন্তিত। তিনি অবশ্য আমাকে দেখে হাসলেন। প্রতিউত্তরে আমার মুখে বিস্মৃত হলাে হাসি (কিন্তু পুরাে সাক্ষাৎকারে উভয় তরফেই সেই ছিল শেষ হাসি)। তিনি আমাকে বললেন, আপনি প্রেসিডেন্টের জন্য নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে যাচ্ছেন না?
বললাম, হ্যা। আমি তাকে আমার প্রতি প্রদত্ত তার শুভেচ্ছা ও সৌজন্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানালাম। এ পর্যায়ে তিনি বললেন, যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে ভারত বিরােধিতায় লিপ্ত থাকছে তা ভুলে যাওয়া সত্যি কঠিন। আমি বললাম, আমি গভীরভাবে ব্যথিত। আমার প্রথম বছরটিতে এটি খুব খারাপ অবস্থায় ছিল। আমাদের মতপার্থক্য বিশেষ করে দক্ষিণ এশীয় সংকট সবারই জানা। উভয় পক্ষেই। দুর্ভাগ্যজনক মনস্তাত্ত্বিক বাধা রয়েছে, যা কাটিয়ে উঠতে আরাে সময় লাগবে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বললাম, যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের মধ্যে স্বার্থগত কোনাে সরাসরি সংঘাত নেই। ভূখণ্ডগত, বাণিজ্যিক, সামরিক কিংবা আদর্শগত প্রশ্নেও কোনাে স্বার্থের সংঘাত অনুপস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মনে করে, একটি প্রতিযােগিতামূলক মুক্তবাজার পদ্ধতি অর্থনৈতিকভাবে আমাদের জন্য শ্রেষ্ঠ। আর ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ মনে করেন, ভারতীয় ধাচের সমাজতন্ত্রই অনবদ্য। মিসেস গান্ধী আকস্মিকভাবে আমাকে ভীষণ চমকে দিয়ে বললেন, যুক্তরাষ্ট্র যা কিছুই করছে তা ভারতের বিরুদ্ধে। আমি তার মন্তব্যের ধাক্কা কাটিয়ে বললাম, তিনি। এইমাত্র যে সুইপিং কমেন্ট করলেন তা যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে প্রমাণ করতে পারেন তাহলে আমি তাকে স্বাগত জানাব। বললাম, আমরা বহু বছর ধরে ভারতকে ১০ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য দিয়ে আসছি, যার মধ্যে ২০ শতাংশ সরাসরি মঞ্জুরি; বাদবাকিটা ঋণ। কিন্তু তাও অত্যন্ত সহজ শর্তে। আপনিই বলুন, এসবই কি। ভারতবিরােধিতার নমুনা?
এমন বিপুল পরিমাণ ঋণ আমরা আর কোনাে দেশকে এককভাবে দেইনি। অন্যদিকে দক্ষিণ এশীয় সংকটের সময় (বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ) ভারতে আশ্রয়। গ্রহণকারী উদ্বাস্তুদের আশ্রয়দানের বােঝা লাঘবে আমরা সহায়তা দিয়েছি। সর্বোপরি বাংলাদেশকে এখন আমরা যে সাহায্য দিচ্ছি তা দেশকে যাতে অর্থনৈতিকভাবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে শুধু সেই কারণেই। এবং আমরা ভেবেছি ভারতও বাংলাদেশকে এমন এক প্রতিবেশী হিসেবে দেখতে চায় যে কি না অর্থনৈতিকভাবে ভায়াবেল। আপনারা নিশ্চয় দেখতে চান ভারতবিরােধী কোনাে উগ্রপন্থি গােষ্ঠী বাংলাদেশে বিকশিত না হােক। আর এখানেই আমাদের অভিন্ন স্বার্থ। সুতরাং বাংলাদেশকে সাহায্যদানে ভারতবিরােধিতার কোনাে প্রশ্নই আসে না। আমি তাকে আশ্বস্ত করলাম। আমার সরকারের নীতি অবশ্যই ভারতবিরােধী নয়। আমি দুঃখ প্রকাশ করে বললাম, আপনি কী করে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে এমন ভ্রান্ত ধারণায় উপনীত হলেন? তাকে আরাে বললাম, যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তার রূঢ় অনুভূতি নিশ্চয়ই বিকৃত তথ্যের ভিত্তিতে হয়ে থাকবে। আর সেসব তথ্য তারাই তাকে জুগিয়েছে যারা আসলে ভারত যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের আরাে অবনতি দেখতে চায়; এবং নিশ্চয় তাদের একটি অশুভ পরিকল্পনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আমি আরাে বললাম, আমি একশ্রেণীর ভারতীয় প্রেসে কিছু ফ্যান্টাস্টিক স্টোরি’ দেখলাম। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের। ব্যাপক সাহায্যের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশকে দূরে সরিয়ে আনা। এবং সেই লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্টরা বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে।
তিনি বললেন, ‘এসব কিন্তু মােটেই ফ্যান্টাস্টিক স্টোরি নয়। এসবই সত্য। আর তার চেয়ে বড় সত্য কথাটা জেনে রাখুন, বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দও কিন্তু ঠিক একই কথা ভাবছেন। জবাবে আমি তাকে বললাম, ম্যাডাম প্রাইম মিনিস্টার, আপনি। আমাকে দারুণভাবে অবাক করলেন। এ ধরনের কোনাে অপারেশন পরিচালনায় যুক্তরাষ্ট্রের কী মতলব থাকতে পারে। বাংলাদেশে আমাদের কোনাে বাণিজ্যিক, সামরিক, ভূখণ্ডগত অথবা অন্য আর কোনাে লক্ষ্য নেই। একইভাবে ভারতেও নেই। স্থিতিশীলতার প্রতিষ্ঠা ছাড়া আমাদের অন্য কোনাে ফায়দা নেই। সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জন্যই আমাদের একই অভিপ্রায়। ভারত ও পাকিস্তানের স্থিতিশীলতা শুধু দক্ষিণ এশিয়ার জন্য নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ গােটা বিশ্বের জন্যই প্রত্যাশিত।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বললেন, যুক্তরাষ্ট্র খােদ ভারতের মাটিতেও আমাদের বিরুদ্ধে। তৎপরতা চালাচ্ছে। আমি তাকে বললাম। আমি খবরের কাগজে এমন রিপাের্ট পড়েছি। যে, আমরা সিপিএমকে সহায়তা দিচ্ছি, আপনি এবং আপনার দলকে খাটো করতে। আমি প্রশ্ন করলাম, আচ্ছা বলুন তাে বাম চরমপন্থিরা যে সিপিএম গঠন করেছে তার সঙ্গে আমাদের মিলটা কোথায়? মিসেস গান্ধী বলেন, এ ব্যাপারে কিন্তু আমাদের হাতে। প্রমাণ রয়েছে। বললাম, খুবই ভালাে কথা। তিনি যদি তার বক্তব্যের স্বপক্ষে কোনাে প্রমাণ হাজির করতে পারেন তাহলে আমি এবং আমার সরকার এ বিষয়টা অবিলম্বে খতিয়ে দেখব। এমন যদি কিছুর অস্তিত্ব থাকে তাহলে আমরা অবিলম্বে তা বন্ধ করে দেব, যদিও এমন কিছু আছে বলে আমি আদৌ বিশ্বাস করি না। এ পর্যায়ে তিনি সেক্রেটারি রজার্সের সঙ্গে ১৯৭০ সালের অক্টোবরে নিউইয়র্কে যে স্টাইলে কথা বলেছিলেন ঠিক তার পুনরাবৃত্তি ঘটান। বলেন, আমরা হয়তাে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে তা আদালতে প্রমাণ করতে পারব না। কিন্তু এসব যে কিছু ঘটে চলেছে তা জানার উপায় আমাদের রয়েছে। আমি বললাম, এটা একটা অসম্ভব ব্যাপার যে, এরকমের বিষয়। আদালতে নিয়ে গিয়ে প্রমাণ করা। প্রতিষ্ঠিত নিয়ম হলাে যখন কেউ কিছু সম্পর্কে অভিযােগ করবে, তখন প্রথমে সে অন্তত কিছু প্রমাণ হাজির করবে। শুধু সংশয় প্রকাশই যথেষ্ট নয়।
বললাম, সত্যি বলতে কী, এ বিষয়ে আপনার মনের দুয়ার বন্ধ হয়ে আছে। আমি খুবই দুঃখিত যে, আপনি এমনটা ভাবতে পারেন। আমাকে এটা বলতে দিন যে, আমি এবং আমার সরকার আপনাকে এবং আপনার দলকে ভারতের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে স্বীকার করে। ডানপন্থি শিবির থেকে আপনার বিরােধিতা কার্যত মুছে গেছে। আর আপনার বিরােধী যে বাম তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনাে কিছুতেই মিল নেই। আমি উদ্বিগ্ন এই ভেবে যে, আপনি দুষ্ট লােকের পাল্লায় পড়েছেন। তারা আপনাকে ক্রমাগত কুমন্ত্রণা দিচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য অসৎ হতে বাধ্য। আমি আপনাকে নিশ্চয়তা দিতে পারি, যেসব অভিযােগ তারা করেছে তা ভ্রান্ত। আমি বললাম, যুক্তরাষ্ট্রের বহু অধ্যাপক ও গবেষক ভারতের বন্ধু; কিন্তু এখন তাদের ভিসা স্থগিত রয়েছে। আমি জানতে চাইলাম, এটা সরকারের নীতি, আমলাতান্ত্রিক সতর্কতা অথবা নিরেট মার্কিনবিরােধী মনােভাবপ্রসূত কি না? তিনি। বললেন, এসব অধ্যাপকের অনেকেই ভারতে অপতৎপরতায় লিপ্ত, যা ভারতের স্বার্থের পরিপন্থি। আমি এক্ষেত্রেও তাকে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে বললাম। কিন্তু তিনি এ ক্ষেত্রেও এড়িয়ে গেলেন।
কেনেথ কিটিং তার টেলিগ্রামে আলােচনার বৃত্তান্ত শেষে উপসংহারে লিখেছেনইন্দিরা গান্ধী রাখঢাক না করেই বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতে সাহায্য প্রদান কিংবা কর্জ রেয়াতের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয় বা না নেয়, তাতে ভারতের কিছুই যায়-আসে না। ভারত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সাহায্য পাক আর না-ই পাক, ভারত অবশ্যই টিকে থাকবে এবং সে তার অগ্রগতিও নিশ্চিত করবে। পুরাে আলােচনাজুড়েই তার মনােভঙ্গিটি ছিল বেপরােয়া। যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নিকৃষ্টতর সবকিছুই ভাবতে তিনি ছিলেন প্রস্তুত। কোনাে ব্যাখ্যা শুনতে চাননি, শুধু আক্রমণেই ছিলেন উদগ্রীব। কথা বলার শুরু থেকেই তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করতে তার চশমা ঘন ঘন খুলছিলেন। অনবরত বেল টিপেছেন এবং ভৃত্যদের ডেকে সাদামাটা কথা বলেছেন। টেলিফোন কল করেছেন, কথা বলেছেন হিন্দিতে। আমি যতবারই কথা বলেছি, তিনি আমাকে থামিয়ে দিয়ে একটা না একটা কিছু কর্ম সম্পাদন করেছেন। আমি আসলে ওয়াকআউট করা থেকে বিরত এবং অতি কষ্টে আমার ভাবাবেগ অবদমিত করতে পেরেছি। অন্যদের সঙ্গে আলােচনাতেও কিন্তু তার কাছ থেকে আমি এমনটা দেখেছি। এটা হয়তাে তার দিক থেকে আলাপ-আলােচনার প্রতি তার অনাগ্রহের ইঙ্গিত অথবা তিনি দেখাতে চান, তিনি আসলে কত ব্যস্ত এবং কত অতিথিই-না তার পথপানে চেয়ে থাকে। পাশ্চাত্যের জগতে আমরা একে বলি রুডনেস’ বা রূঢ় আচরণ। প্রধানমন্ত্রী বললেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনার মঙ্গল কামনা করি এবং আবারও তিনি কিন্তু বড় স্পষ্ট করে ব্যক্তিগত’ শব্দটির ওপরই জোর দেন। আমরা করমর্দন করলাম এবং নিষ্ক্রান্ত হলাম।
এখানে উল্লেখ্য যে, ১৯৭১ সালের ১২ এপ্রিল সিআইএ’র একটি রিপাের্টে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা দেওয়া হয় এভাবে পূর্ব বাংলা খুব শিগগিরই অর্থনৈতিক বঞ্চনা ও রাজনৈতিক সংকটে পর্যদস্ত হবে। মডারেট মুজিব ক্ষমতায় এলেও এই প্রশ্ন থেকে যাবে যে, তিনি তার জনগণের ব্যাপক অংশের জীবনমানে কতটা পরিবর্তন আনতে পারবেন? যদি তিনি তা না পারেন, তবে স্বাধীনতার ভাবাবেগ তুলনামূলকভাবে খুব বেশি সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে ফিকে হয়ে যেতে পারে। আর তখন পশ্চিমবঙ্গের চরম ও উগ্রপন্থিদের মতবাদের দিকে বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান হারে ঝুঁকে পড়ার আগ্রহ দেখাবে। আর তখন বাংলাদেশের সরকার, যার কোনাে সুসংগঠিত নিরাপত্তা বাহিনী থাকবে না, তখন তার পক্ষে সেই সব চ্যালেঞ্জ মােকাবেলা করা কঠিন হতে পারে। আর সে কারণেই, বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে ভারত সরকারের উদ্বেগের কারণ হবে। পূর্ব বাংলা দুর্বল কিন্তু উল্লেখযােগ্যভাবে ভয়ঙ্কর। আর তাই ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী তাকে সবসময় কড়া নজরে রাখবে। আর তখন সম্ভবত জাতীয় নিরাপত্তার নামে দিল্লির তরফে বাংলাদেশ হবে ম্যানুপুলেশন এবং এমনকি প্রকাশ্য হস্তক্ষেপের লক্ষ্যবস্তু।
সূত্র: ১৯৭১ আমেরিকার গোপন দলিল – মিজানুর রহমান খান – সময় প্রকাশন